MOnirul Islam

Go to Blogger edit html and find these sentences.Now replace these sentences with your own descriptions.

This is default featured slide 2 title

Go to Blogger edit html and find these sentences.Now replace these sentences with your own descriptions.

This is default featured slide 3 title

Go to Blogger edit html and find these sentences.Now replace these sentences with your own descriptions.

This is default featured slide 4 title

Go to Blogger edit html and find these sentences.Now replace these sentences with your own descriptions.

This is default featured slide 5 title

Go to Blogger edit html and find these sentences.Now replace these sentences with your own descriptions.

Monday 11 May 2015

নাইটে যোগ দিচ্ছেন শাকিব

কলকাতা: দেশের মাটিতে পাকিস্তানের বিপক্ষে গুরুত্বপূর্ণ সিরিজ ছিল। ফলে মুম্বই ইন্ডিয়ান্স এবং রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর বিপক্ষে ৮ ও ১১ এপ্রিল ম্যাচ দুটি খেলেই তাই ঢাকায় ফিরে এসেছিলেন শাকিব-আল হাসান। পাকিস্তান সিরিজ শেষে শাকিব রবিবার ফের কলকাতা নাইট রাইডার্সের হয়ে যোগ দিতে কলকাতায় আসেন৷
গতবারের আইপিএল চ্যাম্পিয়ন কলকাতা নাইট রাইডার্স। শাকিবের আশা, শিরোপা ধরে রাখা যাবে এবারও। ভারতে পা রাখার আগে তিনি বলেন, ‘আমরা গত তিনবারের মধ্যে দু’বার চ্যাম্পিয়ন হয়েছি। আশা করি, এবারও সেরকম কিছুই হবে।’
১২ ম্যাচে ১৫ পয়েন্ট নিয়ে বর্তমানে ভাল জায়গায় রয়েছে শাহরুখ খানের দল। ১৪ ও ১৬ মে মুম্বই ইন্ডিয়ান্স এবং রাজস্থান রয়্যালসের বিপক্ষে খেলবে কলকাতা। শাকিবের বিশ্বাস, ইডেন গার্ডেন্সে ২৪ মে ফাইনাল খেলেই দেশে ফিরবেন তিনি৷
আইপিএলের সব খেলায় হচ্ছে রাতে৷ অন্যান্যবারে মতো এবারও চিয়ারলিডরারাও রয়েছে মাঠ খেলোয়ারদের উৎসাহ দিতে৷ ক্রিকেট খেলার দেশগুলির মধ্যে বাংলাদেশের শাকিব ভাল পারফর্ম করছে৷ তাই, কেকেআরের চিয়ার লিডাররা মনে করছে, শাকিব অাইপিএলেও ভালো খেলবে৷ আর আইপিএলের সব খেলা যেহেতু রাতের, ফলে শাকিব দলে আসার পর খেলার রাতগুলো আরও উত্তেজনা বাড়বে৷ কারণ, রান এবং আউটের পর চিয়ারলিডারদের কোমর দুলিয়ে নাচতে হয়৷ ফলে, শাকিবের আগমনে চিয়ারলিডারদেরও ব্যস্ততা বাড়বে৷

Thursday 7 May 2015

জেনে নিন, লক্ষ্য অর্জনে সফলতার ৩টি সাধারণ উপায়!


দ্য ফোর-আওয়ার ওয়ার্কউইক’ বইয়ের লেখক টিম ফেরিস। মানুষের যাবতীয় অভ্যাস আর নানা বৈশিষ্ট্য নিয়ে গবেষণা করেন তিনি। নিজেকে ‘হিউম্যান গিনিপিগ’ বলে থাকেন। কারণ নানা পরীক্ষা নিজের ওপরই চালান। অনেকে বড় বড় কাজে সফলতা লাভের জন্যে বিশাল প্রস্তুতি নিয়ে রাখেন। সবকিছু ঠিকঠাক থাকা সত্ত্বেও শেষ পর্যন্ত দেখা যায়, কিছুই হয়নি। এমন অভিজ্ঞতা যাদের জীবনে আসে তারা স্বাভাবিকভাবেই হতাশ হয়ে পড়েন। এখানে টিম ফেরিস দিয়েছেন ৩টি সাধারণ পথের দিশা। তার মতে, এই তিনটি উপায়ে যেকোনো লক্ষ্য অর্জন সম্ভব।
১. ‘দ্য ফাইভ মিনিট জার্নাল’ পড়ুন টিম ফেরিসের। এতে আপনি প্রতিদিনের কিছু তথ্য লিখতে পারবেন। একটি অংশে লিখবেন আজকের কোন তিনটি জিনিস দিনটিকে মনের মতো করে দিয়েছে। আবার আজকের দিনে কোন তিনটি দারুণ ঘটনা ঘটেছে তা লিখে ফেলুন। ফেরিসের মতে, এর মাধ্যমে প্রতিদিনের সফলতা এবং লক্ষ্য পরিষ্কার হয়ে যাবে।
২. জীবনের আকাঙ্ক্ষাগুলো অপূর্ণ থেকে যায় তা অর্জনে এগিয়ে না যেতে পারলে। মনের নানা ভয় মানুষকে থামিয়ে রাখে। এই ভয় দূর করতে ফেরিস বিশেষ পদ্ধতি আবিষ্কার করেছেন। একটি কাগজে তিনটি কলামে নিচের জিনিসগুলো লিখে ফেলুন।
প্রথম কলামে লেখুন সেই সব সম্ভাবনার কথা যা আপনাকে কোনো কাজে ব্যর্থ করে দিতে পারে।
দ্বিতীয় কলামে লিখুন ব্যর্থ করে দেওয়ার সেই সব কারণগুলোকে কিভাবে আটকানো যায়।
তৃতীয় কলামে লিখতে হবে, এ ধরনের পরিস্থিতি থেকে কিভাবে বেরিয়ে আসতে হবে।
এবার এগুলো নিয়ে পর্যালোচনা করলেই যাবতীয় পথ খুঁজে পাবেন।
৩. একে গুরুত্বহীন মনে করবেন না। দিনের শেষে বা শুরুতে ব্যায়াম করুন। এতে দেহ-মন সুস্থ থাকবে। আপনি ভালো না থাকলে কিছুই ভালোমতো চলবে না। লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য পূরণে ব্যর্থতা অনিবার্য।
আর ওপরের বিষয়গুলোর সমন্বয় করতে পারলে আপনি নিঃসন্দেহে যেকোন বাধা টপকে যেতে পারবেন।

ভারতের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি যার দৈনিক আয় ১১ কোটি রুপি !


বিশ্বজুড়ে বিস্তৃত রিলায়েন্স গ্রুপের মালিক মুকেশ আম্বানি হচ্ছেন শুধু ভারত নয়, বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ সম্পদশালী মানুষদের একজন। তার সমুদয় সম্পত্তির আনুমানিক মূল্য হচ্ছে ২১.২ বিলিয়ন ডলার যা ভারতীয় রুপিতে যার মূল্যমান ১.২৯ লাখ কোটি! এই পেজটিতে মুকেশ আম্বানির বিভিন্ন তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।
জন্ম ও পরিবার
ভারতীয় নাগরিক হলেও মুকেশ আম্বানি ১৯৫৭ সালের ১৯ এপ্রিল ইয়েমেনে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম ধিরুভাই আম্বানি এবং মায়ের নাম কোকিলাবেন আম্বানি। তিনি তার বাবা-মায়ের প্রথম সন্তান। অনিল আম্বানি নামে মুকেশ আম্বানির আরও এক ভাই ও দুই বোন রয়েছে।
পড়াশোনা
আম্বানি মুম্বাই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন এবং পরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের স্টানফোর্ড থেকে এমবিএ করেন। ১৯৮০ সালে তিনি স্টানফোর্ড থেকে পড়াশোনা শেষ করেন।
বসবাস
মুকেশ এবং তার পরিবার প্রথমে মুম্বাইয়ের ভুলেশ্বর এলাকায় দুই বেডরুমের আপার্টমেন্টে থাকতেন। তাদের এ বাসাকে আমেরিকানদের ভাষায় টেনামানট বলা হয়। যখন ১৯৬০-এর দশকের শেষ দিকে রিলায়েন্স কোম্পানি বড় হয়ে উঠতে লাগল তখন আম্বানির পরিবার মুম্বাইয়ের অভিজাত এলাকায় উঠে আসে।
মুকেশ আম্বানির বাবা ধিরুভাই আম্বানি ও রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজ গড়ে ওঠার গল্প
আজ আমরা ভারতের শীর্ষ ধনী মুকেশ আম্বানি কিংবা রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজ এর কথা জানি তার মূলে রয়েছেন মুকেশ আম্বানির বাবা ধিরুভাই আম্বানি। ভারতীয় শিল্প ইতিহাসে যে কজন নায়ক রয়েছেন তাদের মধ্যে অন্যতম হলেন এই ধিরুভাই আম্বানি। ধিরুভাই আম্বানি ১৯৩২ সালের ২৮ ডিসেম্বর ভারতের গুজরাটের জুনাগড় জেলার এক প্রত্যন্ত গ্রামে হীরাচাঁদ আম্বানি ও জামনার সংসারে জন্মগ্রহন করেন। পুরো নাম ধীরাজলাল হীরাচাঁদ আম্বানি। ‘ধীরুভাই’ নামেই যিনি ভারতখ্যাত। বাবা ছিলেন স্কুল শিক্ষক। মায়ের কোল ছেড়ে নামার পর যখন সবকিছু বুঝতে শেখেন তখন থেকেই টাকা কামানোর বুদ্ধিতেই দিন কাটত তার। মহাশিবরাত্রি মেলায় ধীরুভাই বন্ধুদের সঙ্গে মিলে ঐতিহ্যবাহী গানথিয়া মিষ্টি বিক্রি করত।’ শৈশব থেকেই ধীরুভাই ছিলেন গ্রামের পরিচিত মুখ। সাইকেলে চষে বেড়াতেন এক গ্রাম থেকে আরেক গ্রাম। স্কুল শিক্ষক বাবার বেতন বলার মতো ছিল না। ফলে সন্তানদের পারেননি উচ্চশিক্ষিত করতে। পরিবারের আর্থিক সংকট অনুধাবন করেই কিনা ম্যাট্রিক পাস দিয়ে বই-খাতার ধারে কাছে আর গেলেন না। নেমে পড়লেন কর্ম সন্ধানে। তখন তার বড় ভাই রামনিকলাল আম্বানি কাজ করতেন ইয়েমেনের বন্দর নগরী এডেনে (ব্রিটিশ উপনিবেশ ছিল তখন)। বড় ভাই জানালেন, কাজের অভাব নেই এখানে। আম্বানি কালবিলম্ব না করে চলে গেলেন এডেনে, যোগ দিলেন ভাইয়ের সঙ্গে। ধিরুভাই আম্বানি যখন ইয়েমেনে পাড়ি জমান তখন তার বয়স ছিল ১৭ বছর এবং সময়টা ছিল ১৯৫৩ সাল। ইয়েমেনে গিয়ে শেলের রিফাইনারিতে যোগ দেয়ার পর প্রথম মাসিক বেতন পেয়েছিলেন ৩০০ রুপি। এ কোম্পানিতে চাকরি করে তেলের ব্যবসা ভালোভাবে বুঝে গিয়েছিলেন। কর্মক্ষেত্র ছিল একটি পেট্রোল স্টেশন, কাজ ছিল গ্যাস ভরা ও অর্থ আদায় করা। একপর্যায়ে বিক্রয় ব্যবস্থাপকে উন্নীত হন। পরে যোগ দেন মার্চেন্ডাইজিং ফার্ম এ বিজ অ্যান্ড কোম্পানিতে (বার্মা শেলের অধিভুক্ত)। সেখানে কাজ করেন পাঁচ বছর। এর মধ্যে আরবি ভাষাটাও রপ্ত করে নেন ভালোভাবেই। বেতন বেড়ে দাঁড়ায় ১ হাজার ১০০ রুপিতে। হঠাৎই মাথায় ভাবনা আসে – ভিন দেশে আর কত! এমন ভাবনায়ই ৮ বছর পর এডেন ছেড়ে ফিরে আসেন নিজভূম ভারতে।
কারখানা গড়তে টাকার জন্য যখন হন্যে হয়ে ছোটার সময় ব্যাংকগুলো ফিরিয়ে দিয়েছিল তাকে। এ অবস্থায় তার সামনে খোলা পথ ছিল একটিই, সাধারণ বিনিয়োগকারী। তখনকার চর্চা ছিল, টাকার দরকার হলে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের দ্বারস্থ হওয়া। ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে তহবিল সংগ্রহের বিষয়টা ছিল চিন্তা থেকে দূরে, বেশ দূরে। আম্বানি উপলব্ধি করেছিলেন, তার ব্যবসায়িক উদ্যোগে মানুষকে বিনিয়োগে আগ্রহী করে তুলতে এমন কিছুর প্রস্তাব করতে হবে, যাতে তারা অভ্যস্ত নয়। যখন তিনি দৃশ্যপটে আসেন, তখন কোম্পানি ব্যবস্থাপকরা তাদের কোম্পানির শেয়ারের দর নিয়ে মোটেই চিন্তা করতেন না। তাদের ধ্যান-জ্ঞান ছিল লাভ করা আর লভ্যাংশ ঘোষণা দিয়ে বসা। কিন্তু আম্বানি এ দৃষ্টিভঙ্গি থেকে সরে এসে বিনিয়োগকারীর স্বার্থকে অগ্রাধিকার দেয়ার উদ্যোগ নেন। কোম্পানির দায়িত্বেরই এক অংশ হিসেবে সারা জীবন এ মনোভঙ্গি পোষণ করে গেছেন।
মুকেশ আম্বানির বাবা ধিরুভাই আম্বানির প্রতিষ্ঠিত রিলায়েন্স গ্রুপ প্রথম দিকে ইয়েমেন থেকে মসলা আমদানি করতো। পরবর্তীতে তারা সুতার ব্যবসা শুরু করে। ১৯৮০ সালে মুকেশ আম্বানি যখন স্ট্যানফোর্ড থেকে পড়াশোনা শেষ করে বের তখন পলেস্টার, আঁশ এবং সুতার ব্যবসা যাকে সংক্ষেপে পিএফআই ব্যবসা বলে, ব্যক্তিমালিকানাধীন খাতের জন্য উন্মুক্ত হয়। মুকেশ আম্বানির বাবা এ ব্যবসার জন্য আবেদন করেন এবং সরকারের কাছ থেকে পিএফআই ব্যবসার লাইসেন্স পান।
ধিরুভাই আম্বানি তখন মুকেশ আম্বানিকে দেশে ফিরতে বলেন এবং তাকে একটি পলেস্টার কারখানার দায়িত্ব দেন। ১৯৮০-এর দশকের মাঝামাঝি মুকেশ তার বাবার কোম্পানিতে সুতা উৎপাদনের ব্যবসায় ব্যুৎপত্তি লাভ এবং ভারতের প্রত্যন্ত গ্রাম পর্যন্ত এ ব্যবসাকে সম্প্রসারণ করেন। তার নেতৃত্বগুণে কোম্পানির ব্যবসা উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পায়। পরবর্তী বছরগুলোতে রিলায়েন্স পেট্রোকেমিক্যাল, পেট্রোলিয়াম পরিশুদ্ধকরণ, টেলিকমিউনিকেশন, বিনোদন, সম্পত্তি ব্যবস্থাপনা এবং তেল ও গ্যাস অনুসন্ধান ইত্যাদি ব্যবসায় নিজেদের সম্প্রসারিত করে।
বাবার মৃত্যুর পর
আম্বানির বাবা যখন ২০০২ সালে মারা যান তখন দুই ভাই মুকেশ ও অনিলের মধ্যে রীতিমতো যুদ্ধ শুরু হয়ে যায়। এ যুদ্ধ কোম্পানির মালিকানাকে কেন্দ্র করে। রিলায়েন্সকে কেন্দ্র করে এ যুদ্ধ শেষ হয় তাদের মায়ের হস্তক্ষেপে এবং একটি মধ্যস্থতা হয়। মধ্যস্থতার মাধ্যমে অনিল রিলায়েন্সের টেলিকমিউনিকেশন, সম্পদ ব্যবস্থাপনা এবং বিনোদনের মালিকানা পান। মুকেশ পান কোম্পানির তেল, টেক্সটাইল এবং সব শোধনাগারের ব্যবসা।
রিলায়েন্সের বর্তমান অবস্থা ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা
বর্তমানে মুকেশের দেশ ভারত গোবর পুড়িয়ে যে জ্বালানি উৎপাদন করে তাতেও তার অবদান রয়েছে। রিলায়েন্স এখন পৃথিবীর বৃহত্তম তেল শোধনাগার নির্মাণ করেছে। ২০১৩ সালে ভারত পৃথিবীর তেল উৎপাদক দেশগুলোর মধ্যে ২৩তম অবস্থান অর্জন করেছে। আম্বানির নেতৃত্বে তেল এবং জ্বালানি বিশ্বে রিলায়েন্স একটি সমৃদ্ধশালী নামে পরিণত হয়েছে। কোম্পানি ভারতবাসীর খাবারের জন্য ৭০০টি দোকান খুলেছে। আম্বানির প্রতিশ্রুতি যে এসব দোকানের মাধ্যমে ভারতের জমকালো নগরী থেকে প্রান্তিক এলাকায় অর্থ পৌঁছে যাবে। আগামী পাঁচ বছরে আম্বানির লক্ষ্য, রিলায়েন্স প্রতি বছর ৪০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার রাজস্ব আয় করবে এবং ১৫ থেকে ৩০ মিলিয়ন ভারতীয়ের চাকরির ব্যবস্থা করবে। এমনকি নতুন আঙ্গিকে রিলায়েন্সের ক্ষমতা গ্রহণের পর আম্বানি পেট্রোকেমিক্যাল, তেল, গ্যাস এবং টেক্সটাইলের ব্যবসায় আধিপত্য ধরে রাখতে চান। ভারতের কিছু নির্দিষ্ট এলাকায় রিলায়েন্সের মুদির দোকানগুলো কৃষকদের আরো উৎপাদনশীল করে তুলেছে।
গত ২০১৩-১৪ অর্থবছরের হিসাব অনুযায়ী তার কোম্পানি রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের (আরআইএল) সম্পদের পরিমাণ ৪,০১,৩০২ কোটি রুপি। এর আগের অর্থবছরে ছিল ৩,৭১,১১৯ কোটি রুপি। আম্বানির কোম্পানি গত দুই বছরে সবচেয়ে বেশি মুনাফা অর্জন করে। গত বছরে এই সময়ে তার কোম্পানির আয় ছিল ৫ হাজার ৫৮৯ কোটি টাকা। এ বছরের জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত আরআইএল মুনাফা করেছে ৫ হাজার ৬৩১ কোটি টাকা। গত অর্থবছরে ভারতের মধ্যে সবচেয়ে বেশি মুনাফা অর্জন করেছে এই প্রতিষ্ঠানটি। ২১ হাজার ৯৮৪ কোটি টাকা লাভ হয়েছে ২০১৩-১৪ অর্থবছরে, যা ২০১২-১৩ অর্থবছরের তুলনায় ৪.৭ শতাংশ বেশি। ২০১২-১৩ অর্থবছরে আরআইএল ২১,০০৩ কোটি রুপি লাভ করেছে।
একাধারে টানা ৬ বছর ভারতের শীর্ষ ধনী
২০১৩ সালে ভারতের শীর্ষ ১০০ ধনীর মধ্যে প্রথম অবস্থানে রয়েছেন রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজের মুকেশ আম্বানি। ফোর্বসের জরিপে দেখা যায়, ২১ বিলিয়ন ডলারের সম্পত্তির মালিক আম্বানি টানা ছয় বছর এ অবস্থান ধরে রেখেছেন। অপরদিকে চিনা সংস্থা হুরুনের ‘২০১৪ গ্লোবাল রিচ লিস্ট’-এর তালিকা অনুযায়ী, ভারতে ৭০ জন আছেন যাঁদের সম্পত্তি ১০০ কোটির বেশি। সেই তালিকার শীর্ষে রয়েছেন মুকেশ আম্বানি। তাঁর সম্পত্তির পরিমাণ প্রায় ১.১ লক্ষ কোটি টাকা।
এশিয়ার শীর্ষ ধনী:
মুকেশ আম্বানি শুধুমাত্র ভারতেরই শীর্ষ ধনী নন। এশিয়ার শীর্ষ ধনীদের তালিকায়ও তিনি রয়েছেন সবার শীর্ষে। তাঁর মালিকানাধীন ‘রিলায়েন্স’ নামক প্রতিষ্ঠানটি ভারতের একটি গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক কোম্পানি। ভারতের জামনগরে অবস্থিত পৃথিবীর তৃণমূল পর্যায়ে থাকা সর্ববৃহৎ পেট্রোলিয়াম পরিশোধনাগারটির পরিচালনার দায়িত্বে আছেন মুকেশ আম্বানি।
বিশ্বে ৪১ তম ধনী
ভারত ও এশিয়ার সেরা ধনী মুকেশ আম্বানি বিশ্বের সেরা ধনীদের তালিকায় ৪১ তম স্থানে অবস্থান করছেন। ২০১৪ সালে চীনাভিত্তক গবেষণা প্রতিষ্ঠান হুরুন এর এক প্রতিবেদনে এই তথ্য প্রকাশ করা হয়।
ফোর্বস কি বলছে?
বিশ্বের সেরা ধনীদের যে তালিকা ফোর্বস প্রকাশ করেছে তাতে দেখা যাচ্ছে বিশ্বের শীর্ষ ১৬৪৫ জন ধনী ব্যক্তির তালিকায় মুকেশ আম্বানি রয়েছেন ৪০ তম স্থানে। তার সম্পদের পরিমাণ ১৮৬০ কোটি মার্কিন ডলার।
মুকেশ আম্বানির দৈনিক আয়
ভারতের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি মুকেশ আম্বানির দৈনিক আয় ১১ কোটি রুপি। গত ২০১৩-২০১৪ অর্থ বছরের হিসাবে তার কোম্পানি রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের (আরআইএল) সম্পদের পরিমাণ ৪,০১,৩০২ কোটি রুপি। এর আগের অর্থ বছরে ছিল ৩,৭১,১১৯ কোটি রুপি।
মুকেশ আম্বানির বার্ষিক বেতন
মুকেশ আম্বানি রিলায়েন্স গ্রুপের কর্ণধার। এছাড়া তার এই ব্যবসার আরও অংশীদার রয়েছে। ব্যবসা পরিচালনার জন্য প্রতিষ্ঠান থেকে তিনি যে বার্ষিক বেতন পান তার পরিমাণ ২৪ কোটি টাকা। মাসের হিসেবে দাঁড়ায় ২ কোটি টাকা। এছাড়া বিভিন্ন ধরনের যে ভাতা পান তার পরিমাণ ৬০ লক্ষ টাকা।
বিশ্বের সবচেয়ে বিলাসবহুল বাড়ির মালিকানা
বিশ্বের সেরা ধনীর খেতাব অর্জন করতে না পারলেও বিশ্বের সবচেয়ে বিলাসবহুল বাড়ির মালিকানার খেতাব মুকেশ আম্বানির দখলে। আম্বানির পরিবারের সদস্য সংখ্যা ছয়। এই ছয়জন সদস্যের জন্য বাড়ি বানানো হয়েছে ৪ লাখ বর্গফুটের। বাড়িটির নাম রাখা হয়েছে ‘এন্টিলিয়া’, যার ফ্লোর সংখ্যা ২৭। ২০০২ সালে মুকেশ আম্বানি মুম্বাই নগরীতে ৪৯ হাজার বর্গফুট জায়গা কিনে নেন। সাত বছরের নির্মাণ কাজে ব্যয় করা হয়েছে ১শ’ কোটি ডলার। বাড়িটির উচ্চতা ১৭৩.১২ মিটার, যা একটি সাধারন ৬০ তলা দালানের উচ্চতার সমান। প্রথম ৬ তলা নির্ধারন করা হয়েছে কার পার্কিং স্পেস হিসেবে। আমদানী করা ১৬৮টি লাক্সারী গাড়ি ব্যবহার হয় শুধুমাত্র পরিবারের প্রয়োজনে। সপ্তম তলা রাখা হয়েছে গাড়ির সার্বিক রক্ষনাবেক্ষনের জন্য ওয়ার্কশপ হিসেবে। অষ্টম তলায় রয়েছে একটি বিশাল বিনোদন কেন্দ্র, এখানে নির্মান করা হয়েছে ৫০ জনের আসনক্ষমতা নিয়ে একটি মিনি থিয়েটার। নবম তলা রিফিউজ ফ্লোর, জরুরী প্রয়োজনে উদ্ধার কাজের জন্য এটি ব্যবহার হবে। তার উপরের দুটি ফ্লোর স্বাস্থ্য কেন্দ্র। একটিতে রয়েছে সুইমিংপুল সহ খেলাধুলার সব সরঞ্জাম। অপরটিতে নির্মান করা হয়েছে আধুনিক সব উপকরন নিয়ে তৈরি সুবিশাল হেলথ জিম। তিনটি ফ্লোর জুড়ে রয়েছে নয়নাভিরাম ঝুলন্ত বাগান। নানা জাতের গাছ ও ফুলে শোভিত হয়েছে এই সুবিশাল বাগান। দুটি ফ্লোর রাখা হয়েছে আম্বানী পরিবারের আত্মীয়-স্বজন তথা অতিথিশালা হিসেবে। বাড়ির উপরের দিকে চারটি ফ্লোর, যেখান থেকে আরব সাগর ও আকাশের মিলনরেখার অবারিত সৌন্দর্য উপভোগ করা যায়, নির্ধারিত হয়েছে মুকেশ, তার স্ত্রী নিতা, তিন সন্তান এবং মুকেশের মা কোকিয়াবেন এর জন্য। বাড়ির শীর্ষে দুটি ফ্লোরের মধ্যে একটি পরিবারের সার্বিক রক্ষনাবেক্ষনের জন্য এবং তার পরেরটি হ্যালিপেড এর নিয়ন্ত্রন কক্ষ হিসেবে ব্যবহার হবে। বাড়ির শীর্ষে নির্মান করা হয়েছে তিনটি হ্যালিপেড।
অবিশ্বাস্য শোনালেও সত্য, শুধু অভিশাপ কুড়ানোর ভয়েই বিশ্বের সবচেয়ে দামি বাড়িটিতে থাকতে রাজি হচ্ছেন না ভারতীয় ধনকুবের মুকেশ আম্বানি। অভিযোগ উঠেছে, ভবনটি নির্মাণের ক্ষেত্রে হিন্দু পুরাণের স্থাপত্যকলা বিষয়ক পরম গ্রন্থ ‘বাস্তুশাস্ত্র’-এর নির্দেশিত বিধান যথাযথ অনুসরণ করা হয়নি। ফলে কেউ সেখানে থাকতে চাইলে প্রাচীন ঋষিবর্গের অভিশাপ নেমে আসতে পারে তার ওপর। হিন্দু পুরাণের বাস্তুশাস্ত্র অনুসারে বাসভবনের সদর মুখ থাকতে হবে সূর্যের দিকে। কিন্তু অ্যান্টিলিয়ার পূর্বাংশে সূর্যের আলো প্রবেশের জন্য নেই পর্যাপ্ত জানালা। তবে সর্বশেষ ২০১০ সালের ২৮ অক্টোবর আনুষ্ঠানিকভাবে ‘গৃহপ্রবেশ’ অনুষ্ঠান এর মাধ্যমে বাড়িটিতে বসবাস করা শুরু করেছে মুকেশ আম্বানি পরিবার। এই বাড়ি ও বাড়ির মানুষজনের দেখাশোনার জন্য রয়েছে ৬০০ জন কর্মী, যা একটি বাড়ি ও বাড়ির মানুষজন দেখাশোনার জন্য নিয়োজিত কর্মীর হিসেবেও একটি রেকর্ড।
স্ত্রীকে জন্মদিনের উপহার দিলেন বিমান
একটি বিমানের দাম কেমন হতে পারে তা আমাদের সবারই কমবেশি জানা আছে। মুকেশ আম্বানি ২০০৭ সালে তার স্ত্রী নীতা আম্বানির ৪৪ তম জন্মদিনে একটি বিমান উপহার দেন। নীতা আম্বানিকে যেই বিমানটি উপহার দেওয়া হয় তাতে রয়েছে একটি অফিস, গেম কনসোল, মিউজিক সিস্টেম, স্যাটেলাইট টেলিভিশন এবং ওয়্যারলেস কমুনিকেশন সিস্টেমসহ বিনোদন কেবিন৷ এছাড়া আছে একটি মাস্টার বেডরুম, অত্যাধুনিক শাওয়ারসহ বাথরুম এবং মুড লাইটিং সমৃদ্ধ এন্টারটেইনমেন্ট বার৷ মুকেশ আম্বানি ১৯৮৪ সালে বিয়ে করেন নীতা আম্বানিকে।

Thursday 5 March 2015

নারীরা রাতে আর পুরুষরা সকালে যৌন উত্তেজনা বোধ করেন, কেন?


বিশেষজ্ঞরা বলেন, নারীরা রাতের সময়টিতে যৌন উত্তেজনা বোধ করেন। তবে পুরুষরা করেন সকালের দিকে। রাতের সময়টি যৌনতার জন্যে আদর্শ সময় মনে করা হলেও পুরুষদের কেন এমন হয়? এর উত্তর জানাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা। একদিনের বিভিন্ন সময়ে নারী-পুরুষের দেহে যৌন অনুভূতি সৃষ্টিকারী হরমোন ক্ষরণের মাত্রা নিয়েও জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা।
১. ভোর ৫টা : এ সময় পুরুষরা ঘুম থেকে না উঠলেও সেক্স হরমোন টেস্টোসটেরনের ক্ষরণ অন্যান্য সময়ের তুলনায় ২৫-৫০ শতাংশ বেড়ে যায়। এই হরমোনের ক্ষরণ ঘটে রাত থেকে এবং তা সকাল পর্যন্ত চলে।
২. ভোট ৬টা : গভীর একটা ঘুমের পর যৌন উত্তেজনা দারুণভাবে অনুভূত হয়। জার্নাল অব আমেরিকান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন জানায়, রাতে টানা ৫ ঘণ্টা ঘুমের কারণে সেক্স হরমোনের ক্ষরণ ১৫ শতাংশ বেড়ে যায়।
৩. সকাল ৭টা : এ সময়ে প্রায় সবাই ঘুম থেকে উঠে যান। পুরুষদের ঘুম থেকে ওঠার পর সেক্স হরমোন সবচেয়ে বেশি থাকে। আবার এ সময়টিতে মেয়েদের থাকে সবচেয়ে কম। তবে রাত যত আসতে থাকে নারীদের হরমোন ক্ষরণের মাত্রাও তত বাড়তে থাকে বলে জানান ওয়েস্ট বার্মিংহাম হসপিটালের গাইনকোলজিস্ট গ্যাব্রিয়েলে ডাউনি।
৪. সকাল ৮টা : পুরোপুরি সজাগ হওয়ার পর স্ট্রেস হরমোন কর্টিসলের ক্ষণ বাড়তে থাকে এবং সেক্স হরমোনের প্রভাব করতে থাকে।
৫. দুপুর ১২টা : এ সময় সুন্দরী রমনী দেখলে মস্তিষ্কে ভালো বোধ হয়। তবে তখন এন্ডোফিনস হরমোনের নির্গত হয়। তবে এ সময় সেক্স হরমোনের মাত্রা বৃদ্ধিতে বেশ সময় ব্যয় হয়।
৬. দুপুর ১টা : এ সময় নারীরা কোনো সুদর্শন কলিগের সঙ্গে লাঞ্চে বসলেও তাদের উত্তজেনা খুব বেশি একটা থাকে না। আবার পুরুষের সঙ্গিনী সুন্দরী হলেও উত্তেজনা নিয়ন্ত্রণে থাকে। তবে নারীরা তার প্রেমিক বা সঙ্গীর সঙ্গ পেলেই সবচেয়ে বেশি উত্তেজিত হয়ে ওঠেন।
৭. সন্ধ্যা ৬টা : এ সময় পুরুষদের যৌন অনুভূতি কমতে থাকে। তবে নারীদের কিছুটা বাড়তে শুরু করে। তবে ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়ার এক গবেষণায় বলা হয়, দৈহিক পরিশ্রমের পর নারী-পুরুষ উভয়ের যৌন অনুভূতি বাড়তে পারে।
৮. সন্ধ্যা ৭টা : দিনের কাজ শেষে বিশ্রামের সময়। জাপানের এক গবেষণায় বলা হয়, এ সময় হালকা মিষ্টি সঙ্গীতও যৌন উত্তেজনা বাড়িয়ে দিতে পারে।
৯. রাত ৮টা : ধরুন, প্রিয় দলের খেলা হয়েছে। এ বিষয়টিও সেক্স হরমোনে প্রভাব ফেলে। ইউতাহ বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষণায় বলা হয়, প্রিয় দল জিতে গেলে পুরুষদের যৌন হরমোন ক্ষরণের মাত্রা ২০ শতাংশ বেড়ে যেতে পারে।
১০. রাত ১০টা : এখন পুরুষের টেস্টোসটেরন হরমোনের মাত্রা সবচেয়ে কম। কিন্তু তারপরও বিকালে নারীদের চেয়ে বেশি মাত্রা দেখা যায় পুরুষদের মধ্যে। তবে এখন নারীদের দেহে হরমোনের মাত্রা বাড়তে শুরু করেছে। কাজেই ভালোবাসাপূর্ণ সময় কাটাতে প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে তাদের দেহ। সূত্র : ইন্ডিয়া টাইমস 

Sunday 1 March 2015

নারীরা হস্তমৈথুন কীভাবে করে? (ভিডিওসহ


নারীরা হস্তমৈথুন কীভাবে করে? (ভিডিওসহ)বাংলাদেশ প্রেস || হস্তমৈথুন এমন একটা জিনিস যা সৃষ্টির আদি থেকে মানব সমাজে আছে। বলাই বাহুল্য যে নারী ও পুরুষ উভয়েই এই বিষয়টির সাহায্য নিয়ে থাকেন নিজের যৌনাকাঙ্ক্ষাকে তৃপ্ত করতে। যে কারণে পুরুষ হস্তমৈথুন করে থাকেন, একই কারণে করেন নারীরাও। উদ্দেশ্য হচ্ছে চরম তৃপ্তি লাভ।

তবে হ্যাঁ, আমাদের দেশের নারীদের মাঝে হস্তমৈথুনের ব্যাপারটা পশ্চিমা দেশের তুলনায় অনেক কম। আমাদের দেশের নারীরা স্বভাবতই লজ্জাশীল বিধায় এবং ধর্ম ভিরুতার কারণে এই ধরণের কাজ করেন না। তবে পশ্চিমা দেশে এটি খুবই সাধারণ একটি বিষয়।

নারীদের হস্তমৈথুন করার ব্যাপারটি বেশ বৈচিত্র্যময়। এর আছে নানান রকম পদ্ধতি। নারীর যৌন তৃপ্তি তখন আসবে যখন তার যোনিতে পুরুষাঙ্গ প্রবেশ করে। ক্লাইটরিসের সাথে পুরুষাঙ্গের নিয়মিত ঘর্ষণের এক পর্যায়ে নারীর অরগাজম আসে। তাই হস্তমৈথুনেও নারীদের যোনিতে পুরুষাঙ্গের অনুরুপ কিছু প্রবেশের প্রয়োজন পরে। প্রথমত নারীরা নিজের আঙুল ব্যবহার করেন এবং নিজেকে যৌন সুখ দিয়ে থাকেন।

এগুলো ছাড়াও নানান রকমের সেক্স টয় কিনতে পাওয়া যায় যেগুলো পুরুষাঙ্গের অনুরূপ। ভ্রাইবেটর নামক একটি যন্ত্রও পাওয়া যায়, যা ছোট থেকে বড় নানান আকৃতির হয়ে থাকে। এটাও নারীদের হস্তমৈথুনে বিশ্বজুড়ে বহুল ব্যবহৃত।

কুমারী নারী যদি হস্তমৈথুন করেন তবে তার হাইমেনের ক্ষতি হতে পারে। পুরুষাঙ্গের ন্যায় সেক্স টয় ব্যবহার করলে হাইমেন ছিঁড়ে যাওয়াটা খুবই স্বাভাবিক। তাই এই কাজ হতে বিরত থাকাই উত্তম। নারীদের হস্তমৈথুনে এটা ছাড়া তেমন কোন ক্ষতির সম্ভাবনা নেই। তবে আজেবাজে সেক্স টয় ব্যবহার করলে যোনিতে প্রদাহ সহ নানান রকমের ইনফেকশন হতে পারে।

আমি ৩ হাজার পুরুষের সাথে শুয়েছি


আমি ৩ হাজার পুরুষের সাথে শুয়েছি
| যুক্তরাজ্যের ম্যারি কালভার্ট নামের ৬৩ বছরের এক নারী তার যৌন জীবন সম্পর্কে অভিজ্ঞাতার কথা বর্ণনা দিয়েছেন দ্য গার্ডিয়ানের কাছে। সেখানে ৩,০০০ পূরুষের সাথে ঘুমানোর অভিজ্ঞতা বলেছেন। তার এই অভিজ্ঞতা জীবন সম্পর্কে মানুষের প্রথাগত ধারনাকে পাল্টে দিতে পারে। গার্ডিয়ানে প্রকাশিত তার অভিজ্ঞতার কিছুটা তুলে ধরা হলো।

একরাতে আমি ১৪ জন পুরুষের সাথে শুয়েছিলাম এবং চেষ্টা করছিলাম এটা খুঁজে বের করতে যে, সারা জীবনে আসলে আমি কত জন পুরুষের সাথে শুয়েছি। সত্যিটা হচ্ছে সঠিক সংখ্যাটি আমার জানা নেই। আমি গড়ে প্রতি বছর প্রায় ১০০ পুরুষের সাথে যৌন মিলন করেছি এবং এটা গত তিন দশক ধরে। আমার বয়স ৬৩ বছর এবং আমি বেঁচে থাকার তাগিদে যৌন মিলন করি না বরং এর প্রতি রয়েছে আমার গভীর আকর্ষণ। উপভোগ, সন্তুষ্টি এবং আনন্দের মধ্যে সময় কাটানোর জন্য একটি অসাধারণ উপায় হচ্ছে যৌনতার মধ্যে থাকা। অনেক নারীই ইয়োগা করতে পছন্দ করেন, অনেকে আবার ব্যাডমিন্টন খেলতে, কিন্তু আমি পছন্দ করি ভিন্ন ভিন্ন পুরুষের সাথে যৌন মিলন করতে।
আমি বিবাহিত। আমার বয়স যখন ১৫ বছর তখন থেকে আমি এবং আমার স্বামী ব্যারি এক সাথে রয়েছি। আমার ১৯ বছর বয়সের সময় আমরা বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হই। আমাদের দুই নাতি রয়েছে এবং আমার স্বামীই আমার পৃথিবী। তবে যৌন মিলনকে আমরা কখনোই এরকমটি মনে করিনি যে, সেটা আমাদের দুজনের মধ্যেই আবদ্ধ রাখতে হবে। ৬০ বছর যাবত দু'জন দু'জনের সাথে যৌন মিলন করে যাব সেটাকে আমরা কখনোই প্রাকৃতিক বলে মনে করিনি। জীবন উপভোগের এবং নতুন কিছুর সাথে পরিচিত হওয়ার। আমার স্বামী অন্য নারীদের সাথে যৌন মিলন করে এবং এটাকে কখনোই আমি খারাপভাবে নেইনি, কারণ আমি মনে করি সে আমাকে খুবই ভালবাসে।
২৮ বছর পর্যন্ত আমাদের একটি রুটিন মাফিক জীবন ছিল এবং আমরা নিজেদের মধ্যেই যৌন মিলন করতাম। কিন্তু আমার স্বামী একদিন হঠাৎ তার এক সহকর্মীর কাছ থেকে একটি বহুগামীতার ম্যাগাজিন নিয়ে আসে এবং মজা করে বলে, আমাদের এটা পরীক্ষা করা উচিত। তখন আমি তাকে বোকার মতো কথা বলতে নিষেধ করি এবং সে কোনোদিনই এরকম কথা উচ্চারণ করেনি।
কিন্তু আমি ম্যাগাজিনটি দেখতে থাকি এবং ভাবি যে, এটা কতটাই মজার বিষয় হতো। অবশেষে আমি আমার ভাবনার বিষয়টি জানাই এবং আমরা ম্যাগাজিনে বহুগামী যুগলদের তালিকা থেকে এক যুগলের সাথে দেখা করি। ওই যুগলের বয়স ছিল প্রায় ৪০ বছর এবং তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ছিল। এক শুক্রবার আমরা তাদের সাথে মিলিত হই। আমরা তখন খুব ঘাবড়ে গিয়েছিলাম তবে খুব উত্তেজিত ছিলাম। আমি বলেছিলাম, আমাদের একবার পরীক্ষা করে দেখা উচিত বিষয়টি কেমন কাটে এবং তা খুব ভালোই কেটেছিল। আমি তখন জনের সাথে মিলন করেছিলাম এবং ব্যারি করেছিল জনের স্ত্রীর সাথে।
এরপর থেকেই প্রতি সপ্তাহের ছুটিতেই আমরা কোনো এক যুগলের সাথে যৌন মিলনে লিপ্ত হতাম।
১৯৯৭ সালে আমরা একটি ক্লাব খোলার উদ্যোগ নেই এবং সফলভাবে ক্লাবটি চালাতে সক্ষম হই।
আমি এখনো আগের মতোই যৌন মিলন করে যাচ্ছি। যদিও এখন আমার বয়স হয়ে গেছে এবং পুরুষকে আকর্ষণ করার মতো পোশাক আমাকে মানায় না। এরপরও যদি কোনো পুরুষ আমার প্রতি আকর্ষণ অনুভব করে তাহলে এখনো কেন নয়?

নিষিদ্ধ হল পরীমনির ছবি; কারণ অশ্লীলতা

নিষিদ্ধ হল পরীমনির ছবি; কারণ অশ্লীলতা
একটিমাত্র ছবি মুক্তি পেলেও একের পর এক ছবি করে যাচ্ছেন পরীমনি। নায়িকা হিসেবে বারবার আলোচনায় এসেছেন এই উঠতি নায়িকা। কারণ তার শ্যুটিং চলতি ছবির সংখ্যা ত্রিশটির মতো। পারিশ্রমিকের টাকায় সম্প্রতি গাড়িও কিনেছেন তিনি।

তবে তাজা খবর হল অশ্লীলতার দায়ে সেন্সরবোর্ড আটকে দিয়েছে পরীমনি অভিনীত চলচ্চিত্র ‘নগর মাস্তান’। রাকিবুল ইসলাম রাকিব পরিচালিত এ ছবির বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে অশ্লীল দৃশ্য এবং সংলাপের জন্য।

তবে সেন্সরবোর্ড থেকে জানানো, ছবিটি আপিল করার সুযোগ পাবে। অশ্লীল দৃশ্য ও অসংলগ্ন সংলাপ ফেলে দিয়ে আপিল করলে ছবিটি আলোর মুখ দেখতে পারে।

চলচ্চিত্রটিতে অশ্লীলতা প্রসঙ্গে পরীমনি বলেন, আমি কোন অশালীন দৃশ্যে অভিনয় করিনি। জানিনা ছবিটির কোন অংশে অশ্লীলতা রয়েছে। নিশ্চয়ই আমি এমন কোন দৃশ্যে কখনোই অভিনয় করবো না যা আমি পরিবার পরিজন নিয়ে কখনো দেখতে পারবো না।

নগর মাস্তান ছবিটিতে অভিনয় করেছেন শাহরিয়াজ, জায়েদ খান, সাগর, পরী মনি, নবাগতা টিটান চৌধুরী ও মিজু আহমেদ। ছবিটি প্রযোজনা করেছেন শফিকুল ইসলাম।

এর আগে ‘ভালোবাসা সীমাহীন’ ছবি দিয়ে পর্দায় অভিষেক হয়েছে এই অভিনেত্রীর। শুক্রবার প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেয়েছে ভালোবাসা সীমাহীন ছবিটি।

পরীমনির হিসাবে এরই মধ্যে ২৫টির বেশি ছবিতে চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন তিনি। তবে ছবির বাণিজ্যিক দিক বলে দেবে পরীমনির ভবিষ্যৎ।

নারীদের কনডম ব্যবহারে যে ধরনের সুবিধা পাওয়া যায় (কনডম ব্যবহারের ভিডিওসহ)

নারীদের কনডম ব্যবহারে যে ধরনের সুবিধা পাওয়া যায় (কনডম ব্যবহারের ভিডিওসহ)
বাংলাদেশপ্রেস ডেস্ক || মহিলাদের কনডম প্রধানত যৌনসঙ্গমকালে নারীসংগী দ্বারা ব্যবহৃত এক প্রকার জন্মনিরোধক বস্তু। এটি মূলত গর্ভাধারন ও গনোরিয়া, সিফিলিজ ও এইচআইভি-এর মতো যৌনরোগের প্রতিরোধক হিসেবে ব্যবহৃত হয়। ল্যাস্সি হেসেল এটি আবিস্কার করেন। যৌনসঙ্গমকালে এটি নারীসংগীর যৌনাংগে পরিধান করা হয় এবং এসময় এটি পুরুষের বীর্যকে স্ত্রীযোনিতে প্রবেশে বাধা দেয় ফলে পুরুষের বীর্যের শুক্রাণুসমূহ নারীর ডিম্বাণুকে নিষিক্ত করতে পারে না। এছাড়া এটি পায়ুসঙ্গমকালে গ্রাহক সংগী দ্বারা পরিধান হতে পারে। মহিলাদের এই কনডম পাতলা, ঢিলা, নমনীয় আবরন এবং এর দুই প্রান্তে দুটি রিং বিদ্যমান।

সূবিধাসমূহ

মহিলাদের কনডম ব্যবহারের মাধ্যমে নারীরা তাদের যৌনসাস্থ্যকে নিজ নিজ পছন্দের ও ইচ্ছানুযায়ি নিয়ন্ত্রনে রাখতে পারেন।এই কনডম ব্যবহারের মাধ্যমে নারী সংগীটি নিজেকে গর্ভধারন থেকে রক্ষা করতে পারে, যখন পুরুষ সংগীটি পুরুষের কনডম ব্যবহারে অনিচ্ছুক থাকে। এছাড়া অনেক ক্ষেত্রে নারী সংগীর এই ধরনের কনডমের ব্যবহার পুরুষ সংগীকে সাধারন কনডমের তুলনায় অধিক পুলকিত করতে সক্ষম হয়। এটি আলার্জি নিরোধী এবং যাদের রাবার ল্যাটেক্স ব্যবহারে সংক্রমনের সম্ভাবনা রয়েছে তাদের জন্য উপযোগী। এই কনডম সংগমের বহু সময় পূর্বেই পরিধান করা যায়। পুরুষদের কনডমের ন্যায় এটি পুরুষাংগের উত্থানের জন্য অপেক্ষা করতে হয় না বা বীর্যস্থলনের সাথে সাথে বের করে নেয়ার প্রয়োজন পড়ে না।এটি আঁটসাঁট নয় এবং শরীরের তাপমাত্রার সাথে সাথে এর উপাদানের তাপমাত্রা পরিবর্তিত হয়। এছাড়া এটি সংস্পর্শের মাধ্যমে ছড়ায় এমন যৌনরোগ থেকে সুরক্ষা দেয় বলে অনেক গবেষনায় দেখা গেছে।

বিশ্বব্যাপী ব্যবহার

উন্নত দেশসমূহে এই কনডমের বিক্রি আশানুরুপ না হলেও উন্নয়্নশীল দেশসমূহে জন্মনিয়ন্ত্রন প্রকল্প এবং এইডস প্রতিরোধ প্রকল্পের আওতায় এটির ব্যবহার ক্রমবর্ধমান। এই কনডম পরিধানের ক্ষেথে বিশেষ দক্ষতার প্রয়োজন হয় এবং পুরুষের কনডমের তুলনায় এর ২-৩ গুণ বেশি মূল্যকে এর বিক্রি হ্রাসের কারন হিসেবে মনে করা হয়।অনেক ব্যবহারকারী উল্লেখ করেছেন যে এই কনডম পরে সংগমকালে বাজে শব্দের সৃষ্টি হয় এবং এসময় কনডমের একটি রিং যোনীর বাইরে বের হওয়া অবস্থায় থাকে। এসব পরিস্থিতির কারনে অনেকে এই কনডম ব্যবহার ত্যাগ করেছেন বলে অনেক ব্যবহারকারী অভিযোগ করেন।

নারীদের কনডম ব্যবহারের নিয়মাবলী

Friday 27 February 2015

জেনে নিন, বিয়ের প্রথম রাতে প্রত্যেক পুরুষই ৭টি আশা !

বিয়ের প্রথম রাত, অর্থাৎ ফুলশয্যার রাত হচ্ছে যে কোন দম্পতির জীবনের সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ রাত। বলাই বাহুল্য যে এই রাত নিয়ে উভয়েরই অনেক স্বপ্ন, অনেক চাওয়া-পাওয়া থাকে। নারী না হয় একবুক আশা নিয়ে শ্বশুর বাড়িতে গেলেন স্বামীর জীবনে, কিন্তু স্বামী কী আশা করেন? চলুন, জেনে নিন এমন ৭টি বিষয় যা ফুলশয্যার রাতে প্রত্যেক পুরুষই আশাকরেন নিজের স্ত্রী তরফ থেকে!
১) স্ত্রীকে দেখা যাবে অপ্সরার মতন  জীবনে খুব বেশি মানুষ বারবার বিয়ে করেন না, বিশেষ রাতটি বারবার ফিরে আসে না জীবনে। এবং প্রত্যেক পুরুষই স্ত্রীকে সেদিন নিজের স্বপ্ন কন্যা রূপে দেখতে চান। আশা করে থাকেন যে স্ত্রীকে দেখাবে পৃথিবীর সবচাইতে সুন্দর রমনীর মত।
২) স্ত্রীর জীবনে তিনিই প্রথম পুরুষ অধিকাংশ পুরুষ আজও আশা করেন যে স্ত্রী ভার্জিন হবে। অর্থাৎ তিনিই হবেন প্রথম পুরুষ যার সাথে স্ত্রী প্রথম শারীরিক সম্পর্ক করেছে।
৩) একটু লজ্জা, একটু ছলকলা লজ্জা নারীর ভূষণ, এই কথাটি ফুলশয্যার রাতেই যেন সবচাইতে বড় সত্য। বিয়ে প্রেমের হোক বা পারিবারিক, প্রত্যেক পুরুষই এই বিশেষ রাতে আশা করে থাকেন যে স্ত্রী একটু লজ্জা পাবেন। একটু প্রেমের ছলকলা খেলবেন, আর তবেই ধরা দেবেন প্রেমের বন্ধনে।
৪) সমৃদ্ধ জীবনের আশ্বাস দুজনে একত্রে নতুন জীবন শুরু করতে চলেছেন, বিয়ের এই প্রথম রাতটি তাই ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ। পরস্পরকে আশ্বাস ও প্রতিজ্ঞা করার জন্য আদর্শ সময়। স্বামীও আশা করেন যে স্ত্রী তাঁকে একটু সুখের সংসারের আশ্বাস দেবেন।

৫) নিজের প্রশংসা নিজের প্রশংসা শুনতে কে না ভালোবাসে? আর পুরুষেরা তো স্ত্রীর মুখে নিজের প্রশংসা শুনতে সবচাইতে বেশি পছন্দ করেন। বিয়ের প্রথম রাতেই এই প্রত্যাশা থাকে সবচাইতে বেশি।
৬) শ্বশুর বাড়ির প্রাপ্তি নিয়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ
বিয়েতে কী হলো, কী হলো না, কী পেলেন, কী পেলেন না ইত্যাদি নিয়ে হতাশা বা ক্ষোভ ব্যক্ত না করে যা পেয়েছেন সেটা নিয়েই সন্তুষ্টি প্রকাশ করুন। দেখবেন স্বামীর চোখে আপনার সম্মান হয়ে উঠেছে আকাশচুম্বী।
৭) নিজের ভার স্বামীর হাতে ছেড়ে দেয়া
এটা সেই বিশেষ রাত, যে রাতে স্ত্রী নিজেকে অর্পণ করেন স্বামীর জীবনে। নিজের দায়িত্ব ছেড়ে দেন স্বামীর হাতে। আর আপনি যতই স্বাধীনচেতা নারী হয়ে থাকুন না কেন, আপনার স্বামী কিন্তু সারা জীবনই চাইবেন যে আপনি তাঁকে বিশ্বাস ও ভরসা করুন। আর এই কাজটি বিয়ের রাতে করলে খুশি হয়ে ওঠেন সকল পুরুষই


জেনে নিন , প্রেমিক বা প্রেমিকার ব্রেকআপ হওয়ার কারণ !

একজন সঠিক মানুষের সাথে সম্পর্ক হলে জীবনে সুখ ধরে রাখা যায়। হয়তো মানুষটি পারফেক্ট নন, কিন্তু তার কিছু জিনিসে পারফেক্ট না হওয়াটাই আপনার জন্য তাকে একবারে সঠিক মানুষ বানিয়ে দেয়। এমন মানুষের সাথে হাসিখুশি ভাবে থেকে পুরো জীবন কাটিয়ে দেয়া সম্ভব হয়। কিন্তু যখন একজন ভুল মানুষের সাথে সম্পর্ক হয় তখন সেই সম্পর্কটি কষ্ট করে টেনে চলার চাইতে সম্পর্ক থেকেই দূরে সরে যাওয়া দুজনের জন্যই ভালো। কিন্তু কীভাবে বুঝবেন সঙ্গীর সাথে আপনার সম্পর্কটির ভবিষ্যৎ একেবারেই সুখকর নয়। চলুন তবে দেখে নেয়া যাক কোন সম্পর্ক থেকে সরে আসাই ভালো হবে আপনার জন্য।
১) আপনাদের মধ্যে বয়সের পার্থক্য অনেক বেশি

অনেকের মতে সম্পর্কের ক্ষেত্রে নারী পুরুষের বয়সের পার্থক্য হওয়া ভালো। কিন্তু যখনই এই বয়সের পার্থক্য একটু বেশি হয়ে যায় তখন জেনারেশন গ্যাপের বিষয়টি চলে আসে। কথায় বা তর্কে হুট করে বলে ফেলেন, ‘আমার বয়স বেশি, আমি জীবন তোমার থেকে বেশি দেখেছি, আমি বেশি জানি, আমি যা বলবো তাই মেনে নিতে হবে’ ইত্যাদি ধরণের কথা। যা সম্পর্কের জন্য একেবারেই ভালো নয়। তাই সম্পর্কের ক্ষেত্রে বয়সের পার্থক্য বেশি হওয়া সম্পর্কের জন্য ভালো নয় একেবারেই। এই বিষয়টির প্রতি নজর দেয়া উচিত। যদি অতিরিক্ত সমস্যা মনে হয় তাহলে এই সম্পর্কে না এগুনোই ভালো।
২) আপনি অথবা সে সম্পর্কে ধোঁকা দিচ্ছেন
সম্পর্কে যেই ধোঁকা দিয়ে থাকুন না কেন সেই সম্পর্কটি সুস্থ ও স্বাভাবিক নয়। যদি মনে করে থাকেন সময়ের সাথে সাথে এই ব্যাপারটির সমাধান করতে পারবেন তাহলে ভুল করছেন। যদি আপনি ধোঁকা দিয়ে থাকেন বা তিনি ধোঁকা দেন তাহলে সম্পর্ক থেকে সরে আসাই শ্রেয়।
৩) আপনি নিজেকে হারিয়ে ফেলছেন
প্রথম প্রথম সম্পর্কে একে অপরের সাথে অনেকটা সময় ব্যয় করা হয় বিষয়টি সত্যি। কিন্তু সম্পর্ক শুরুর পর থেকে নিজের বন্ধুবান্ধব থেকে দূরে সরে আসা, কিংবা অনেক কিছু বাদ দিয়ে একসাথে সময় কাটানোর বিষয়টি পরবর্তীতে মেনে নেয়া কষ্টকর। এখানে আপনার জীবনের কিছু অংশ হারিয়ে আপনার সম্পর্ক এগিয়ে নিতে যেতে হচ্ছে। সুতরাং এই ধরণের সম্পর্ক দুজনের জন্যই ক্ষতিকর। যদি বিষয়গুলো কথা বলে ঠিক করে নিতে পারেন তাহলে দ্বিতীয়বার চেষ্টা করতে পারেন নতুবা নয়।
৪) কিছু বললেই তিনি অতিরিক্ত রিঅ্যাক্ট করেন
কথা বলে অনেক সমস্যা সমাধান করে ফেলা সম্ভব। কিন্তু তার সাথে কোনো ব্যাপার নিয়ে আলোচনা করলেই যদি তিনি অতিরিক্ত রিঅ্যাক্ট করে বসেন তাহলে তার সাথে কোনো ব্যাপার নিয়ে কথা বলাই সম্ভব হয়ে উঠে না। কিন্তু সম্পর্কে থাকলে কথা বলে সমস্যা সমাধান করাটাই স্বাভাবিক। এমন অবস্থায় আপনাদের সম্পর্ক নিয়ে দ্বিতীয়বার চিন্তা করুন।
৫) আপনার নিজের মতো করে সময় পান না
সম্পর্কে থাকেই যে সারাটি সময় দুজনকে একসাথে থাকতে হবে এমন কোনো কথা নেই। দুজনেরই নিজস্ব জীবন রয়েছে, নিজস্ব কিছু কাজ রয়েছে এবং বাদবাকি সম্পর্ক রয়েছে। আপনি সম্পর্কে থাকলে যদি নিজের জন্য সময় একেবারেই না পান তাহলে সম্পর্কটি একটি পর্যায়ে বোঝার মতো মনে হতে থাকবে। সুতরাং এখনই এই সমস্যার সমাধান করে ফেলুন তা না হলে সুখী থাকতে পারবেন না।
৬) আপনি তাকে নিয়ে দ্বিধায় ভোগেন
আপনি কি আপনার প্রিয় মানুষটিকে আপনার পরিবার বা বন্ধুবান্ধবের সাথে পরিচয় করাতে দ্বিধা বোধ করেন? কিংবা আপনার অনেক ব্যাপারই তাকে জানাতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন না? তাহলে আপনি তাকে নিয়ে অনেক দ্বিধায় রয়েছেন। এই সম্পর্কের ভবিষ্যৎ নেই। এই সম্পর্ক ছেড়ে সরে আসাই দুজনের জন্য মঙ্গলজনক।
৭) আপনার সঙ্গী সব সময় সকলের আকর্ষণ ধরে রাখতে চান
যদি আপনার প্রিয় মানুষটি আপনার মনোযোগ পাওয়ার জন্য নিজেকে তৈরি করেন তাহলে তা খুবই স্বাভাবিক। কিন্তু যদি তিনি শুধু আপনারই নয় সকলের আকর্ষণ নিজের দিকে ধরে রাখতে চান তাহলে আপনাদের সম্পর্কটি স্বাভাবিক নয়। এই ধরণের মানুষজন মানসিক ভাবে কিছুটা অসুস্থ থাকেন। তাই এই সম্পর্ক থেকে দূরে সরে আসুন আপনি নিজেই।
৮) সঙ্গী আপনাকে অতিরিক্ত সন্দেহ করেন
ভালোবাসায় কিছুটা ঈর্ষা থাকবেই, কারণ যখন আপনি কারো সাথে একটু হেসে কথা বলবেন তখন তিনি একটু না একটু ঈর্ষান্বিত হবেন এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু ঈর্ষা অতিরিক্ত হয়ে গেলে এবং ঈর্ষা সন্দেহে রূপান্তরিত হলে সমস্যার শুরু হয়। যিনি সব সময় আপনাকে সন্দেহ করেন তার সাথে সময় কাটানো বিশেষ করে জীবন কাটানো অনেক কষ্টকর।


নববধূরূপী এক নারীর ব্যক্তিগত অপ্রকাশিত কষ্ট গুলো !

বিয়ের মাধ্যমে একজন নারীর জীবনে বড় ধরনের পরিবর্তন আসে। নারীদের একদম নতুন কিছু মানুষ ও পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নিতে হয়। যা তাদের জীবনে হাজারও সুখের অনুভূতি নিয়ে আসে, সেই সঙ্গে জন্ম দেয় কিছু চাপা ক্ষোভ বা দু:খবোধের। এই অনুভূতি সাধারণত বিয়ের পর বেশিরভাগ মেয়েই অনুভব করেন। এর কারণ কি হতে পারে? সবকিছুকে আগের সময়ের সঙ্গে তুলনা করা? নাকি বিয়ের আগের জীবন ভালো ছিল এমনটা ভাবা? তেমন কিছু কষ্টের কারণ জেনে নিন-
বন্ধুদের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন : বিয়ের পর ধীরে ধীরে বন্ধুদের সঙ্গে দূরত্ব সৃষ্টি হয়। হয়ত যোগাযোগ না থাকার কারণে বন্ধুর তালিকা থেকে এক সময় তারা আপনাকে ডিলিটও করে দিতে পারে। তাদের বিচ্ছেদ আপনার মন খারাপ করবে— এটাই স্বাভাবিক। আর এর কারণ যদি বিবাহিত জীবন হয়, তখন নিঃসন্দেহে আপনার মধ্যে অপরাধবোধের জন্ম নিবে।
নিজেকে হারিয়ে ফেলা : বিয়ে মানেই নতুন কিছু পরিবর্তন ও সমঝোতা। কিন্তু এটা যদি সব সময় একপক্ষকেই করতে হয় তাহলে নিঃসন্দেহে মনোমলিন্য ঘটবে। তাই অন্য পক্ষকেও ছাড় দেওয়া ও মানিয়ে চলার অভ্যাস করতে হবে।

ব্যক্তিগত স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ : ব্যক্তিগত স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করলে যে কারোই মাথা গরম হয়। অথচ বিয়ের পরই এ অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হতে হয় বেশীরভাগ মেয়েদেরই। সবকিছু নিজের মতামতের ওপর চলে না। বিশেষ করে বড় কোনো সিদ্ধান্ত; যেমন- দেশের বাইরে যাওয়া কিংবা দামি কোনো জিনিস কেনা। আর যৌথ পরিবার হলে তো উঠতে বসতে বাসার সবার অনুমতি নিয়েই চলতে হয়।
জীবনটাকে আরও উপভোগ : বিয়ের পর মেয়েদের জীবনের সকল ক্ষেত্রেই পরিবর্তন আসে। যে কোনো বিষয়ে সবার আগে পরিবারের কথা চিন্তা করতে হয়। এমনকি জীবনটাকে একটু নিজের মতো করে উপভোগ করার পরিকল্পনা করলেও দায়িত্ব-কর্তব্যের ভারে তা হয়ে ওঠে না।
সাবেক প্রেমিককে দ্বিতীয় সুযোগ : বিবাহিত জীবনের ঝুট-ঝামেলা আপনাকে পুরনো প্রেম মনে করিয়ে দেবে। খুব স্বাভাবিকভাবেই আপনি পুরাতন প্রেমিকের সঙ্গে স্বামীর তুলনা করবেন এবং মনে মনে ভাববেন তাকে আর একটা চান্স দিলেই হয়তো ভাল হতো। কিন্তু এমন ভাবনাকে কখনোই প্রশ্রয় দেওয়া যাবে না, মনে রাখবেন এটা আপনার দাম্পত্য সুখ চিরতরে নষ্ট করে দিতে পারে।
তাড়াতাড়ি মা হওয়া : আমাদের দেশে সন্তান নেওয়াটাও বেশীরভাগ ক্ষেত্রে পরিবারের ইচ্ছার ওপর নির্ভর করে। বিবাহিত দম্পতি নতুন অতিথির আগমন ঘটাবে এটাই স্বাভাবিক, কিন্তু অন্যের ইচ্ছার ওপর নির্ভর করে নয়। বরং নিজেদের সুবিধাজনক সময়ে সন্তান নেওয়া উচিত। হতে পারে বিয়ের পর আপনি আগে নিজের ক্যারিয়ার গোছানোর পরিকল্পনা করে রেখেছেন কিংবা সঙ্গীর সঙ্গে দেশ-বিদেশ ঘুরে আসার স্বপ্ন দেখছেন। এ সময় সন্তান নিলে এ সব চিন্তাকে বিদায় জানাতে হবে।
যাই হোক, বিয়ের পর আপনার মনে জাগা এ সব অভিযোগ ক্ষণিকের। কিন্তু আপনার প্রতি সঙ্গীর ভালবাসা ক্ষণিকের নয়। তার ভালবাসাই সব অভিযোগ ভুলে যেতে সাহায্য করবে। তাই এ সব অভিযোগ ঝেড়ে ফেলুন। এগিয়ে যান সামনের দিকে। সেই দিনগুলো হবে শুধুই আপনাদের। এতে আপনিও ভালো থাকবেন অন্যরাও।

রুটি ও দুধ খেয়ে ১৫ বছর !

কথায় আছে মাছে-ভাতে বাঙ্গালী। কিন্তু বাঙ্গালী হয়েও জন্মের পর থেকে ১৫ বছরেও ভাত স্পর্শ করেনি রাঙ্গুনিয়ার পোমরা ইউনিয়নের হাজীপাড়া গ্রামের শফিউল আলমের পুত্র মোহাম্মদ মোস্তফা। সে এখন পোমরা উচ্চবিদ্যালয়ে অষ্টম শ্রেণিতে পড়ছে। পাড়া-প্রতিবেশীদের কৌতূহলের অন্ত নেই তার এই ভাত না খাওয়ার বিষয়টি নিয়ে ।

তার অভিভাবকরা জানিয়েছেন, রুটি আর গরুর দুধ ছাড়া আর কোনো খাবার সে স্পর্শ করে না। ভাতকে সে কোনোভাবেই খাবার হিসেবে মেনে নিতে পারছে না। পরিবার তার এই খাদ্যাভ্যাসকে স্বাভাবিক বলে মনে করছে না।
মোস্তফার মা জানান, তার ছেলের বয়স যখন এক বছর তখন থেকে ডাক্তারের পরামর্শে বুকের দুধের পাশাপাশি বাড়তি খাবার হিসেবে ভাত দেওয়া হলেই সে তা বমি করে ফেলে দিত। আর এভাবেই তাকে যতবারই ভাত কিংবা অন্য খাবার দেওয়া হয়েছে, ততবারই সে বমি করে ফেলে দিয়েছে।
এতে তার পরিবার ভয় পেয়ে ডাক্তারের শরণাপন্ন হলে ডাক্তার পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে অভয় দিয়ে বলেন, তার খাবার গ্রহণের ক্ষেত্রে কোনো সমস্যা পাওয়া যায়নি, তবে ভাত খাওয়ার ব্যাপারে তার আগ্রহ না থাকার কারণে এমনটা হচ্ছে।
আর এ অবস্থায় মোস্তফাকে তার মা ও পরিবার-পরিজন রুটি আর দুধ ছাড়া আর কোনো কিছু খাওয়াতে পারেনি। বরং এই ব্যাপারে যতবার চেষ্টা করা হয়েছে ততবারই বিফল হয়েছে বলে জানান তার পরিবারের সদস্যরা।
মোস্তফাকে এ ব্যাপারে জিজ্ঞেস করলে সে জানায়, তার ভাত খেতে ভালো লাগে না। এতে তার একধরনের দুর্গন্ধ লাগে, যা সে সহ্য করতে পারে না। একই কারণে সে অন্য কোনো কিছুও খেতে পারে না।
মোস্তফা জানায়, প্রতিদিন সকালে সে সাত-আটটা রুটি ও দুধ, দুপুর বেলায় পাউরুটি-দুধ, বিকেলেও রুটি আবার রাতেও রুটি ও দুধ খেয়ে জীবনযাপন করে।


যে দেশে পরকীয়া আর অপরাধ নয় !

পরকীয়া প্রেমকে আর অপরাধ হিসেবে গণ্য করা যাবেনা বলে রায় দিয়েছে দক্ষিণ কোরিয়ার শীর্ষ আদালত। ১৯৫৩ সালের আইন অনুযায়ী, দেশটিতে পরকীয়া সম্পর্কে জড়ালে স্বামী বা স্ত্রীর আড়াই বছর পর্যন্ত কারাদণ্ডের শাস্তি ছিল।

গতকাল বৃহস্পতিবার আদালত এ রায় দিয়েছেন।
এশিয়ার যে মাত্র তিনটি দেশে পরকীয়া প্রেম অবৈধ ছিল, দক্ষিণ কোরিয়া তার একটি। ২০০৮ সাল থেকে দক্ষিণ কোরিয়ায় সাড়ে পাঁচ হাজার লোককে আদালত এ অপরাধে অভিযুক্ত করেছেন।
সর্বোচ্চ আদালতের (সাংবিধানিক আদালত) নয় বিচারকের প্যানেলের সাতজন বলেন, ৫৩ সালের আইনটি অসাংবিধানিক। প্যানেলের প্রধান বলেন, ব্যক্তির যৌনতাবিষয়ক অধিকার সম্পর্কে লোকের ধারণা বদলে গেছে। নৈতিকভাবে পরকীয়ার নিন্দা করা উচিত। তবে নাগরিকের ব্যক্তিগত জীবনে হস্তক্ষেপ করা রাষ্ট্রের উচিত নয়।
দক্ষিণ কোরিয়ায় সাম্প্রতিক বছরগুলোতে শত শত লোককে অভিযুক্ত করা হলেও খুব কম জনকেই কারাগারে যেতে হয়েছে। সিউলের সোগাং বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনের অধ্যাপক লিম জি বং বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে পরকীয়ার জন্য কারও সাজা হওয়ার ঘটনা খুবই বিরল। তিনি জানান, প্রায়ই অভিযোগ শেষ পর্যন্ত বাতিল হয়ে যায় বলে অভিযুক্ত হওয়ার সংখ্যা কমেছে।
দক্ষিণ কোরিয়ার সর্বোচ্চ আদালত এর আগে আইনটি চারবার পর্যালোচনা করে তা বহাল রাখেন।

আমি আর আসবো না বলে

ইদানিং মাঝে মাঝেই আমার মনে হয়, এই সুন্দর পৃথিবীটা ছেড়ে, আমার প্রিয় চিরচেনা মুখগুলো ছেড়ে হয়ত কোন একদিন চলে যেতে হবে অজানার পানে। হয়ত চলে যেতে হবে অনন্তের পথে… আর ফিরে যাওয়া হবে না পুরোনো প্রিয় বন্ধুদের আড্ডায়, মায়ের আঁচলে মুখ মোছা হবেনা, আপুর সাথে অভিমান করে কষ্ট পাওয়া যাবেনা… মনে হলে বুকের কোণে একটা ব্যথা অনুভূত হয়… এই কবিতায় আমার এই অনুভূতিটার একটা প্রতিকৃতি খুঁজে পেয়েছি….

র আসবো না বলে দুধের ওপরে ভাসা সর
চামোচে নিংড়ে নিয়ে চেয়ে আছি। বাইরে বৃষ্টির ধোঁয়া
যেন সাদা স্বপ্নের চাদর
বিছিয়েছে পৃথিবীতে।

কেন এতো বুক দোলে? আমি আর আসবো না বলে?
যদিও কাঁপছে হাত তবু ঠিক অভ্যেসের বশে
লিখছি অসংখ্য নাম চেনাজানা
সমস্ত কিছুর।
প্রতিটি নামের শেষে, আসবো না।
পাখি, আমি আসবো না।
নদী আমি আসবো না।
নারী, আর আসবো না, বোন।
আর আসবো না বলে মিছিলের প্রথম পতাকা
তুলে নিই হাতে।
আর আসবো না বলে
সংগঠিত করে তুলি মানুষের ভিতরে মানুষ।
কথার ভেতরে কথা গেঁথে দেওয়া, কেন?
আসবো না বলেই।
বুকের মধ্যে বুক ধরে রাখা, কেন?
আর আসবো না বলেই।
আজ অতৃপ্তির পাশে বিদায়ের বিষণ্ণ রুমালে
কে তুলে অক্ষর কালো, ‘আসবো না’
সুখ, আমি আসবো না।
দুঃখ, আমি আসবো না।
প্রেম, হে কাম, হে কবিতা আমার
তোমরা কি মাইল পোস্ট না ফেরার পথের ওপর?
———————————–
(সংকলিত কবিতা)
কবিঃ আল মাহমুদ
কাব্যগ্রন্থঃ সোনালি কাবিন



আজি ঝরঝর মুখর এই বাদল দিনে

সুচরিতাসু,
চিঠিটা পেয়েই বুঝি একটা দুষ্টু হাসি দিয়ে ফেললে? বুঝে ফেলেছ, তাইনা? তুমি যে বুঝতে পারবা, সে আমি জানি! তাতে কী? তাই বলে বুঝি আমার লেখালেখি বন্ধ হয়ে থাকবে? সত্যিই আজকে ঝরঝর বর্ষাধারা বয়েই চলেছে প্রকৃতিতে… আর এই অপদার্থ উজবুকটা ছটফট করে বসে পড়েছে চিঠি লিখতে… মনের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অনুভূতিগুলোকে রূপ দেয়ার চেষ্টা করতে…
আরে আরে….হাসি থামাও তো!! সুস্থির হয়ে বস দেখি! আমাকে একটু বলতে তো দাও!! জানো, সকাল থেকেই আকাশ কালো হয়ে আছে জমাট মেঘে। আর আমি মনে মনে খুঁজে বেড়াচ্ছিলাম, এই মেঘলা মেঘলা দিনে কোন গানটা যেন আমাকে অনেক উদাস করে দিত সে-ই কৈশোরে… তারপর মনে পড়ে গেলো রবিঠাকুরের সেই গানখানিঃ

আজি ঝর ঝর মুখর বাদরদিনে
জানি নে, জানি নে কিছুতেই কেন মন লাগে না ।।
এই চঞ্চল সজল পবন-বেগে উদ্ভ্রান্ত মেঘে মন চায়
মন চায় ঐ বলাকার পথখানি নিতে চিনে ।।
মেঘমল্লারে সারা দিনমান
বাজে ঝরনার গান ।
মন হারাবার আজি বেলা, পথ ভুলিবার খেলা- মন চায়
মন চায় হৃদয় জড়াতে কার চিরঋণে ।।


আসলেই আমার কিছুতেই মন লাগছে না। আমাকে ধানমন্ডিতে দেখা করতে বলেছেন জুয়েল ভাই। ছোট বোন একটা কাজ করতে দিয়ে কলেজে গেছে, দুলাভাই আজই আমাকে সময় করে দেখা করতে যেতে বলেছিলেন… অথচ আমি কিনা ঘরকুনো হয়ে বসে আছি!! কারণ কি জানো? আমার যে কিছুতেই একদম মন লাগছে না!!!
এই চঞ্চল সজল পবন-বেগে উদ্ভ্রান্ত মেঘে বলাকার পথখানি চিনে নিয়ে যদি সত্যিই উড়ে উড়ে তোমার কাছে চলে যেতে পারতাম! তবে আর তোমার পথ চেয়ে অপেক্ষা করতে হত না! তোমার কোলে চিঠিখানি ছুঁড়ে দিয়ে আমি লুকিয়ে দেখতাম কী করে চিঠিটা পড়ে তুমি হেসে কুটি কুটি হও…
সত্যি কথা কী জানো হে বরষা কন্যা? রবীন্দ্রনাথের কথাগুলো, গানগুলো কেন যেন আমাকে বড্ড বেশি বেশি স্পর্শ করে… আমার অনুভূতিগুলো কি ঘুরে ফিরে ঠাকুরদা’র কবিতার মতন হয়ে গিয়েছে কিনা তা-ই বা কে জানে! ছেলেবেলায় আমার বালিশের পাশে সঞ্চয়িতা থাকত সবসময়… অদ্ভূত একটা আবেশে কেটেছিলো আমার কৈশোরটা জানো? আমি চোখভরা বিষ্ময় নিয়ে পড়তাম কবিতার পংক্তিগুলো… প্রতিদিন… প্রতিটি অবসর!!
গানটার কথা দেখেছ? মন হারাবার আজি বেলা, পথ ভুলিবার খেলা… মন চায় এই হৃদয় নাকি কার চিরঋণে জড়াতে… হাহাহাহহা!! না ভাই, না ভাই, আমি ভাই ঋণে জড়াইতে চাইনা… আমি ঋণী করে দিতে চাই… হুমম!!
নাহ। গান নিয়ে আর কথা বলবো না… এখন চুপ যাই। এমনিতেই এই ডিজিটাল যুগে মানুষ বইপত্র দেখলে শুধুই বিরক্ত হয়… তার উপর আমার চিঠির মতন এই বিশাল কলেবরের জিনিস হয়ত তোমাকেও “বোর” করে দিতে পারে! তুমি কেমন অদ্ভূত, বুঝো? একটা বার কোনদিন বললা না, আমার চিঠিভরা যেই বকবকানি, সেগুলো তোমার কেমন লাগে! অথচ আমি কোনসময়েই যে তোমার মন্তব্যের অপেক্ষা করিনা, তা তো না… যাক গে, হয়ত কোনদিন বলবা, হয়ত সেই একদিনের কথাতেই আমার চাওয়াখানি পূর্ণ হয়ে যাবে… হয়ত… জানিনা!
একটা কথা জানো, আমার ইদানিং মনে হয় আমি মনে হয় যন্ত্রমানব হয়ে যাচ্ছি। নতুবা কি পাষাণ হয়ে যাচ্ছি? আমাকে আর আগের মতন অনুভূতিগুলো স্পর্শ করে না। এই বৃষ্টি আর আমাকে আগের মত করে ছুঁয়ে যায় না… আমার হৃদয় অবধি যেতে পারেনা বর্ষাধারার শীতল অনুভূতিখানি…
আমি যেন তোমাকে ঠিক আগের মতন করে অনুভব করিনা… কেন এমন হয়ে যাচ্ছি বলতে পারো? বলতে পারো, আমি কেন আমার কথাগুলোকে কিছুতেই ব্যক্ত করতে পারছিনা ইদানিং… আমার ভেতর হতাশা ঘুরপাক খাচ্ছে, কিন্তু তোমার বকা খাওয়ার ভয়ে তাকে ব্যক্ত করতে পারছিনা…
অথচ আমি দিব্যি জানি, আমি ক্রমাগত বদলে চলেছি। যেই বদলে যাওয়া আমার কাম্য না। আমি বদলে যেতে চাইনা… আমি সেই আগের আবেগপ্রবণ বোকাসোকা ছেলেটাই থাকতে চাই… তোমার স্মরণে আমি বিবশ হয়ে যেতে চাই… তোমার হাসিমুখ দেখে আমি চুপটি করে বোকাবোকা হাসি দিয়ে তাকিয়ে থাকতে চাই অপলক…… আমি বড় হতে চাইনা, চাইনা বদলে যেতে!!
কত কিছুই যে চাইনা, অথচ দেখ, সবই তো হয়ে যাচ্ছি… ক্রমাগত যেন জঞ্জাল এসে ভরিয়ে দিচ্ছে জীবন কুঠুরিটা… সেই জঞ্জাল দেখতে তো খারাপ বটেই। ধরে নাও জীবনের এই জঞ্জালগুলোকে ইগনোর করে অন্যকিছুতে মন দিবো-–তা যে হবেনা! সেসব বাজে জিনিসের তীব্র দুর্গন্ধে আমি বুঝতে বাধ্য হবো– আমি ভুল করেছি জীবনে… তার খেসারত আমায় দিতেই হবে…
নাহ! এখনি লেখাটা শেষ করতে হবে। কেমন যেন ভারাক্রান্ত হয়ে যাচ্ছে লেখাগুলো। আর চাইনা এসব লিখতে। কিন্তু একটা সত্যি কথা বলে শেষ করি? আমার ইদানিং মনে হয়–- আমার বুঝি আর লেখার কিছুই নেই, আমার লেখনি স্তব্ধ হয়ে যাবে একদম… নতুন অনুভূতি নেই, নেই কোন ভালোবাসা আর ভালোলাগাদের দল…
আমার মনে হয় আর তোমাকে লেখা হবেনা গো “সুহাসিনী” !
অনেক অনেক ভালো থেকো, হুমম? আর আমাকে দোয়া দিয়ো একটু প্লীজ।
তুমি তো জানো, আমি একটু প্রশান্তিই চাই এই জীবনে। অর্থ-বিত্তের প্রাচুর্য নয়… শুধু নির্ঝঞ্ঝাট একটা জীবন… দোয়া করিও মহান আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলার দরবারে। আমি সুখের স্পর্শ পাবই ইনশাআল্লাহ দেখে নিয়ো…
এই জীবনে না পাই, অনন্ত জগতে আমার সুখ হবেই।
— শেষান্তে
পথহারা পথিক


বর্ষা নামের সেই রূপবতীর প্রতি ভালোবাসা

র্ষার সাথে আমার কবে প্রথম পরিচয় হয়েছিল তা ঠিক মনে করতে পারিনা। তবে জানি, আমি প্রথম পরিচয়েই তার প্রেমে পড়ে গিয়েছিলাম। তার অপরূপ রূপ সুষমায় মোহিত হয়ে তাকে দিয়েছি হৃদয় উজাড় করা ভালোবাসা। কখনো বর্ষাকে খুশি করবো বলে তাকে নিয়ে লিখেছি কবিতা। সেই কবিতায় শুধু অনুভূতি আর মুগ্ধতার প্রকাশ…
কলেজের ছুটিকালীন সময়ে আমার খুব মন খারাপ ছিলো একদিন। কিছু ভালো লাগছিলো না। সেদিন বর্ষাকে দেখেছিলাম জানালা দিয়ে তাকিয়ে বাইরে– তাকে দেখেই মনে কী রকম যেন একটা ঢেউ খেলে গিয়েছিল। ভালোলাগার একটা আবেশে আমি মোহিত হয়ে ছিলাম অনেকক্ষণ।
ব্যাকুল হয়ে আমি ছুটে বাইরে গিয়ে তার স্পর্শ নিয়ে ধন্য হয়েছিলাম। আমার দু’গাল পেতে তার কোমল পরশ নিয়েছিলাম… সেই পরশে আমার শরীরে বিদ্যুৎস্ফূলিঙ্গ খেলে গিয়েছিলো… আমি চোখ বন্ধ করে তার স্পর্শ অনুভব করেছিলাম আমার সমস্ত শরীরে… পরম আরাধ্য সেই স্পর্শভরা মূহুর্তগুলো আমার আজো মনের গভীরে গেঁথে আছে……

বর্ষা অতীব রূপসী। রুপের ঝলকে কত জন যে মুগ্ধ হয়েছে, তাকে নিয়ে কবিতা লিখেছে, তার আশায় স্বপ্ন দেখেছে তার ইয়ত্তা নেই। আমার বন্ধুদের মাঝেই অনেককে দেখেছি যারা ওর জন্য লিখেছে সুন্দর সব কবিতা। আমার তখন বড় হিংসা হতো।

বর্ষা এলেই বাসায় মায়ের কী আয়োজন! ব্যস্ত হয়ে পড়েন মা ওর জন্য। কখনো চিতই পিঠা আর আম দিয়ে সকালের নাস্তা, দুপুরে গরম গরম খিচুড়ী, সাথে চাঁপাইনবাবগঞ্জের বিখ্যাত আমের আচার, একাধিক পদের সবজি– বেগুন, আলু আর পটলের ব্যঞ্জন… বেগুনের ভাজি… একটু সালাদ… আমার সব প্রিয় পদের আয়োজন!!
আমি আনন্দে নির্বাক হয়ে যাই। ইচ্ছে করে বর্ষাকে জড়িয়ে ধরে বসে থাকতে। ইচ্ছে করে ওকে আর যেতে না দিতে।
আমি ভেবে দেখেছি, ওদের পরিবারের সকলের মাঝে আমি বর্ষাকেই বেশি ভালোবাসি। ওর প্রতি আমার মুগ্ধতা-ভালোলাগার কিঞ্চিৎ অন্যদের প্রতি হয়ে উঠে না… আমি দেখেছি, মা এটা বুঝেন।
উনি তা দেখে মুখ টিপে হাসেন। আমি যখন ওকে নিয়ে কবিতা লিখি– তা সবার আগে আমার প্রিয় মামণি-কে শোনাই।
মা বড় খুশি হন। মাঝে মাঝে বলেন–
“বাবা, বর্ষা কিন্তু কয়েকদিন একটানা থাকলে আশেপাশের সবাইকে কষ্ট দেয়। ও এলে ওর জন্য ঘর থেকে বের হতে পারবি না………”
আমি মায়ের এইসব কথা শুনতেই চাইনা। বলি–
“মা গো, ওকে যে আমি খুউউব ভালোবাসি। ও কাছে এলেই আমার ভালোলাগে যে…… আমি কষ্ট পাবো না”।
কিছুদিন থেকে বর্ষা আবার চলে যায়। আমি অপেক্ষা করতে থাকি। সময় যেন আর কাটতেই চায়না—
দিন বয়ে যায়…
রাত বয়ে যায়…
মাস কেটে যায়…
মায়াবিনী ছলনাময়ী বর্ষা আর আসে না। হঠাৎ আবার মাঝে মাঝে দেখা পাই। আনন্দের আতিশয্যে আমি চিৎকার করে উঠি। বছর ঘুরে গেলে ওর আসার সময় হয়। আমি সেই অপেক্ষায় থাকি বাকি সারাটি বছর।
হতভাগা আমি আমার বর্ষাকে কখনো খুব কাছে পাইনা। আবার খুব দূরেও যায়না…অদ্ভূত লাগে!! কেন যে আমার ভালোবাসাকে আপন করে পাইনা। কেন যে কোন ভালোবাসার সাথেই থাকে না পাওয়ার বেদনা, একটা অপূর্ণতা…… আমি বুঝে পাইনা।
যাকে ভালোবাসি, তার জন্য অপেক্ষার প্রহর গুণতে যেমনি অস্থির লাগে। তেমনি এই “না পাওয়া” সময়টাতে ওর কথা ভাবতেও একটা “বিরহের বেদনাময় আনন্দ” অনুভূত হয়…
কলেজে থাকতে তারিক হাউসের সামনের কাঠালি চাঁপা ফুল ছিঁড়ে গন্ধ নিতাম, আর বর্ষার কথা ভাবতাম। কী দারুণ সেই ভালোলাগা! কী যে মোহনীয় সেই দূরে থাকা! ওর জন্য আমার ডায়রির পাতা ভরে যেত। ভালোবাসা আর মুগ্ধতা ভরা শব্দাবলী, প্রতিটি অক্ষরে ঝরে পড়ত হৃদয় উৎসারিত আমার ভালোবাসা……
বর্ষাকে নিয়ে আমার অ-নে-ক কবিতা। ওকে নিয়ে অন্যেরা লিখলে সেইগুলোও আমি পড়তাম অনায়াসে– আমার ভালোবাসাকে নিয়ে লেখা বলে কথা!!
বর্ষাকে নিয়ে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের একটা কবিতা আমাকে অন্যরকম ভালোলাগা দিয়েছিলোঃ
আষাঢ়সন্ধ্যা ঘনিয়ে এল, গেল রে দিন বয়ে
বাঁধন-হারা বৃষ্টিধারা ঝরছে রয়ে রয়ে।
একলা বসে ঘরের কোণে কী ভাবি যে আপন-মনে–
সজল হাওয়া যূথীর বনে কী কথা যায় কয়ে।।
হৃদয়ে আজ ঢেউ দিয়েছে, খুঁজে পাই না কূল–
সৌরভে প্রাণ কাঁদিয়ে তুলে ভিজে বনের ফুল।
আঁধার রাতে প্রহরগুলি কোন সুরে আজ ভরিয়ে তুলি–
কোন ভুলে আজ সকল ভুলি আছি আকুল হয়ে–
বাঁধন-হারা বৃষ্টিধারা ঝরছে রয়ে রয়ে।
আজ শুধু রোমন্থন। আজ শুধু স্মৃতিদের চেয়ে চেয়ে দেখা। আজ শুধু বসে বসে মনের স্বপ্নদের আঁকা। বিরহের গান গেয়ে মনের না পাওয়াদের জন্য আরো বেশি করে ব্যাকুল হওয়া… কষ্ট পেয়ে আরো আনন্দিত হওয়া…
ডিসক্লেইমারঃ এই পোস্টের চরিত্রগুলো রূপক। অনেকে এই বর্ষার সাথে নারী বর্ষার যোগসূত্র খুঁজে পেতে পারেন বলে লেখক সকলকে মনের কল্পনাদের প্রশ্রয় দিতে নিরুৎসাহিত করছেন। :-)


আমি বৃষ্টি দেখেছি, বৃষ্টির ছবি এঁকেছি

আকাশটা আজ সারাদিন মেঘলা। শরীরটা এই এত অল্প বয়েসেই কেমন অদ্ভূত রকমের রোগাক্রান্ত হয়ে গেছে! রাতে কাশির দমকে আর গলাব্যথায় আর ঘুমাতে পারলাম না। সেই সাথে ছিলো এক অব্যক্ত যন্ত্রণার অনুরণন। সবে মিলে এক দুঃসহ দিনের সূত্রপাত। অফিসে যাইনি আজ। ভাবলাম যদি ব্যথাগুলোর উপশম হতো! আরো যেন তীব্র হয়ে উঠছে ক্রমাগত… 

আমি আকাশ দেখেছি। আকাশের মাঝে বিশালতা খুঁজেছি। আমি অরণ্য দেখেছি। অরণ্যের মাঝে নির্লিপ্ততা অনুভব করেছি। আমি বৃষ্টি দেখেছি, বৃষ্টির ছবি এঁকেছি। আমি বৃষ্টিকে ভালোবেসেছি, চেয়েছি আপন করে। আমি অযাচিত যন্ত্রণায় দগ্ধ অনুভূতিদের চেয়েছি বৃষ্টির সাথে ভাসিয়ে দিতে। আমি চেয়েছিলাম অল্প কিছু, একদম অল্প করে…
আমি কী কখনো ভেবেছিলাম সাগরের লোনা জলেরা আমার হবে? তুমি চেয়ে দেখো সুপ্রভা, এই সাগরেরা যেন আমার চোখ বেয়ে বয়ে যাওয়া অশ্রুদেরই জমা হয়ে থাকা জলরাশি। তুমি জানো, শূণ্যতায় ভরা জীবনের সবচাইতে বড় প্রাপ্তি কী? অমন বিশাল করে লোনা জলের উৎস হতে পারা। আমি কি তোমার কাছে কখনো চেয়েছি আমায় তুমি আকাশ এনে দেবে? আমি তো চাইনি তুমি আসমুদ্রহিমাচল বয়ে আনবে ভালোবাসার চাদর। আমি চেয়েছি এক চিলতে মুক্ত আকাশ। আমি চেয়েছিলাম তুমি রোদ্দুর হবে।

জানো সুপ্রভা, স্বপ্ন শব্দটার প্রতি আমি কত বড় কাঙ্গাল? আমি না কোন স্বপ্নই দেখতে পারিনা! আমি পারিনা আমার চাওয়াগুলোকে পাওয়ার সাহস করতে! এতগুলো রাত কেটেছে জীবনে — কই! কোনদিন ঘুম থেকে উঠে বলতে পারিনি স্বপ্ন দেখেছি কিনা! আমার দিনের বাস্তবতাও এমনি। আমি কোথা যাবো, কী করে বেঁচে থাকতে চাই– কী কী আমি অর্জন করতে চাই — আমি যে সেই স্বপ্নগুলোই দেখতে পারিনা!
অথচ বেঁচে থাকতে এই স্বপ্নগুলোই কাজ করে হৃদয়স্পন্দনের মতন। আমি কী তোমায় হারিয়ে ফেলবো সুপ্রভা? তুমি কি আমার স্বপ্ন ছিলে? তুমি কী আমার মাঝে একটা কল্পনা? তোমার অস্তিত্বের শেকড়ের মাঝে কী আমারটাও প্রোথিত না? তুমি কী জানো, কী অদ্ভূত একটা জীবন আমার! অঞ্জন দত্তের গানটাও শুনি, তোমার চলে যাবার কথা ভাবি। আবার মনে হয় — তুমি তো আসবে বলেই আছ। তাহলে কেন এই অশ্রুদের বয়ে যাওয়া? কেন তোমাকে পেতে সমুদ্রের জলরাশিদের সাথে সখ্যতা? এই জায়গাটাতে আমার কেন খুব করে ভুল হয়? আমি একদিন ঠিক হয়ে যাবো দেখে নিয়ো।
অঞ্জনদত্তের গানটা মাঝে মাঝেই মনে পড়ে। কেন বলো তো? এইসব অনুভূতিরা তো অন্যরকম! এটা ঠিক হবার মতন না! তবু এই গান, সে তো গানই! তুমি কী চলেই যাচ্ছ সুপ্রভা? তুমি আর ফিরে আসবে না? নাকি তুমি আসলে ছিলেই না কখনো? এই ভ্রম কেন আমার? যাহোক, গানটা শুনেছিলে? অদ্ভূত লিরিক!
আমি বৃষ্টি দেখেছি, বৃষ্টির ছবি এঁকেছি,
আমি রোদে পুড়ে ঘুরে ঘুরে অনেক কেঁদেছি।
আমার আকাশ কুসুম স্বপ্ন দেখার খেলা থামে নি,
শুধু তুমি চলে যাবে আমি স্বপ্নেও ভাবিনি।
আমি বৃষ্টি দেখেছি…
চারটে দেয়াল মানেই নয়তো ঘর, নিজের ঘরেও অনেক মানুষ পর।
কখন কিসের টানে মানুষ পায় যে খুঁজে বাঁচার মানে,
ঝাপসা চোখে দেখা এই শহর …
আমি অনেক ভেঙেচুরে, আবার শুরু করেছি,
আবার পাওয়ার আশায় ঘুরে মরেছি।
আমি অনেক হেরে গিয়েও হারটা স্বীকার করিনি,
শুধু তোমায় হারাবো আমি স্বপ্নেও ভাবিনি।
আমি বৃষ্টি দেখেছি…
হারিয়ে গেছে তরতাজা সময়, হারিয়ে যেতে করেনি আমার ভয়।
কখন কিসের টানে মানুষ পায় যে খুঁজে বাঁচার মানে,
ঝপসা চোখে দেখা এই শহর …
আমি অনেক শ্রোতে বয়ে গিয়ে, অনেক ঠকেছি,
আমি আগুণ থেকে ঠেকে শিখে, অনেক পুড়েছি।
আমি অনেক কষ্টে অনেক কিছুই দিতে শিখেছি,
শুধু তোমায় বিদায় দিতে হবে, স্বপ্নেও ভাবিনি।
আমি বৃষ্টি দেখেছি…

Wednesday 28 January 2015

তোমাকে ঠিক চেয়ে নেব


১ . খুব মেঘ করে বৃষ্টি নামার আগে রাতের আকাশ যখন অফুরন্ত উল্লাসে নিজেকে লালচে রঙ্গে সাজায়, তখন মাঝেমাঝে আমার মনে অদ্ভুত একটি ইচ্ছে জেগে উঠে । বোকা বোকা একটি ইচ্ছে , কিন্তু আমার কাছে এই ইচ্ছেটি ভীষণ প্রিয় । রাতের মেঘলা আকাশ দেখলে আমার কেন যেন নির্জন একটি দ্বীপ কিনে ফেলতে ইচ্ছে করে । ইচ্ছেমত সবুজ আর নীলচে রঙ করা সেই দ্বীপটিতে শুধু আমার একলা রাজত্ব হবে । আমার অনেকদিনের ইচ্ছে , মাঝরাতের আকাশ ভেঙ্গে সেখানে যখন ঝুম বৃষ্টি নামবে , সেই বৃষ্টিতে আমি তখন দুরন্ত নদীর মত উল্লাসে মেতে উঠব । সেই বৃষ্টির আনন্দ থেকে বঞ্চিত করবার জন্যে কোন শাসনের জাল আমাকে বাঁধতে আসবেনা । আমার একলা দ্বীপে কেবল আমার মুগ্ধতায় মাখা বৃষ্টি বিলাস হবে । আর আমার সামনে থাকা ছোট্ট সমুদ্রতটে অবিরাম দুলতে থাকবে রঙ্গিন কোন পানসি , হতে পারে সেটি অনেক দুরের কোন দ্বীপাঞ্চল থেকে ভেসে এসেছে , হতে পারে সেটি কোন খেয়ালি রাজপুত্রের বিলাসী ভ্রমণসঙ্গী । হয়ত সেই পানসিতে উদাস নয়নে বসে থাকবে সেই ভীষণ সাহসী বৃষ্টিমুগ্ধ রাজপুত্র । আর উন্মত্ত বৃষ্টিতে দাঁড়িয়ে থেকে আমি দেখব সেই রাজপুত্রের চুলের সাথে বাতাসের যুদ্ধ , বৃষ্টির ছিটেতে ঝাপসা হয়ে যাওয়া তার চশমার কাঁচ । এই যা ! কি ভাবছি , রাজপুত্ররা বুঝি চশমা পরে ? আছে কোন রাজার পুত্র যে কিনা চোখে কম দেখে বলে চশমা পরত ? কি জানি !

নিজের অজান্তেই হেসে ফেললাম । আমার ভাবনা গুলি এত বাউন্ডুলে কেন হয় কে জানে ? ফুটপাথের উপর ধীর পা ফেলে এই ভরসন্ধ্যাবেলায় যখন আমি ডাক্তারের কাছে যাচ্ছি , তখন আমার এই অদ্ভুত কল্পনাবিলাসীতার কি কোন কারন থাকা উচিত ? না আকাশে কোন মেঘ আছে , না আছে ঝড়ো হাওয়া । তবে কেন যেন মনে হচ্ছে আজ রাতে বৃষ্টি নামবে , শরৎকাল তো সারপ্রাইজ দিতে ভীষণ পছন্দ করে বলেই জানি । হঠাত লক্ষ্য করলাম , একা একা হাসছি বলে কয়েকজন পথচারি ঘুরে আমার দিকে তাকাচ্ছে , সম্ভবত পাগল ঠাওরেছে আমাকে । সে যাকগে ,যার যা ভাবার তাই ভাবুক । কে কি ভাবল তা নিয়ে ইরা কিন্তু মাথা ঘামায় খুব কম সময়েই , হুম ।

ক্লিনিকটা ছোটখাট , ব্যক্তিমালিকানাধীন । আমাদের ছোট্ট এলাকার মানুষদের ভরসার স্থান । আর আমার মত রোগাপটকা হলে তো কথাই নেই , এই দুইমাসে আমি তৃতীয়বারের মত এখানে হানা দিলাম । এবারের এক্সকিউজ - কি বলা যায় ? আমি দুদিন হল আমার নাকের অস্তিত্ত টের পাচ্ছিনা , বাজে টাইপের বিচ্ছিরি লেভেলের সর্দিতে আমার নাক সম্ভবত বিলীন হয়ে গেছে । এই সমস্যাটি কিন্তু নতুন নয় , দুইমাস পরপরই আমার এই অবস্থা হয় । তবে সমস্যায় পড়তে হয় রুমাল খুঁজে পাওয়া নিয়ে । এত রুমাল কোথায় আর পাব ? বাসার মানুষজনের যাবতীয় পুরানো আধপুরানো জামাকাপড় আমার জন্যে বিশেষভাবে সংরক্ষন করা হয় । আমি এদের সদ্গতি করি নাকি দুর্গতি করি তা ঠিক জানিনা , তবে আমার সর্দি সমস্যার যে একটা গতি হয় তা কিন্তু সত্যি ।

এক ঘন্টা অপেক্ষার পর আমার সিরিয়াল যখন আসল , আমি তখন ঠিক '' পাইছিরে " টাইপের ইমোতে ছিলাম । কিন্তু আমি দরজা খুলে ঢুকবার পরই আমার দিকে তাকিয়ে ডাক্তারের ১০০ ওয়াট বাল্বের মত চেহারা ২৫ ওয়াট বাল্বের মত হয়ে গেল । আমি এখানে এত বেশি হানা দেই যে ডাক্তার থেকে শুরু করে কম্পাউন্ডার পর্যন্ত সবাই আমার চেনা হয়ে গেছে ,এই ডাক্তার তো আরো এক কাঠি উপরে । ফিচলা হাসি হেসে ডাক্তার সাহেব বললেন ,'' কি খবর তোমার ? আবার রোগ বাঁধিয়েছ ? তুমি বরং কাঁথা বালিশ নিয়ে হসপিটালে এসে পড় , তোমার ইন্টেন্সিভ কেয়ার প্রয়োজন ।'' আমি কি বলব বুঝলাম না , সত্যি বলতে কি , এই ডাক্তারের মত বেয়াদব কিসিমের ডাক্তার আমি আমার জীবনে খুব কম দেখেছি । আরে বেটা আমার অসুখ হলে আপনার কী ? আপনার তো অসুখি হবার কারন নেই , আপনার আরো টু পাইস ইনকাম হবে । তাও এত প্যাচালের কি মানে আছে ? আমার পুরো ছোটবেলা অবশ্য কেটেছে এই বেয়াদব ডাক্তারের বাবার চিকিৎসা নিয়ে , তিনি এখনও চিকিৎসা পেশাতেই আছেন , তবে অন্য হাসপাতালে বসেন । নিজের এই ক্লিনিকটাতে বসার আর এখন সময় পান না , কেন যেন বুড়ো বয়সেই ডাক্তার গুলি বিখ্যাত হয়ে যায় । এমন ভাল মানুষ ডাক্তারের ছেলে কিভাবে এমন ফিচলা বেয়াদব হল সেটা একটা ভাববার বিষয় । তবে আপাতত সেটা নিয়ে মাথা না ঘামিয়ে আমি চেয়ারে দুপ করে বসে পড়লাম । মুখ গোমড়া করে সরু নেইমপ্লেটের দিকে তাকিয়ে রইলাম , যেখানে লেখা - ডাঃ ফারাবী আহসান ( হ্যান ত্যান ডিগ্রি ) ।

'' এবার বল দেখি কি হয়েছে ?'' আমি খ্যাসখ্যাসে গলায় বললাম ,'' সর্দি জ্বর , গলাব্যাথা , দম নিতে পারিনা ।'' আমার দিকে কয়েক মুহূর্ত তাকিয়ে বলল , '' তোমাকে ওষুধ হিসেবে আইসক্রিম দিয়ে দেই ?'' মেজাজ বয়েলিং পয়েন্টে উঠে গেল , কিন্তু গলা ব্যথার কারনে কিছু বললাম না । '' ইরা ,তোমাকে মাঝেমাঝেই আইসক্রিম হাতে রিকশায় দেখা যায় , তাই বললাম । এখন বরং তুমি একটু সোফায় গিয়ে বস ,আর চারটা রুগী আছে , দেখে নেই । তুমি পুরানা রুগি তো , তোমার সাথে একটু আলাপ করব , ঠিক আছে ?'' বিস্ময়ে হতবাক হয়ে গেলাম , এতক্ষন ধরে বসে আছি , আরো বসে থাকতে বলে ? কত বড় সাহস , আরে আমার সময় কি আলুখেতে ধরে নাকি ? তারপরেও আমি হতাশার সাথে আবিষ্কার করলাম , রাগে ফুঁসতে ফুঁসতে আমি ঠিক সোফাতে গিয়েই বসেছি । '' কফি আনাই ?'' আমি কিছুই বললাম না । বেয়াদব ছেলেদের সব কথার উত্তর দিতে নেই , তবে মিনিট পাঁচেক পরে আমাকে ঠিক গরম কফি হাতেই বসে থাকতে দেখা গেল ।

পাঠক কি ভাবছেন ? গরবল কিনা ? জি, ঠিকই ভাবছেন , এভরিথিং ইজ গরবল ।

গরবল টা যখন শুরু হয়েছিল সেটা অনেক অনেক আগের কথা । আমি তখন ক্লাস নাইনে পড়তাম । আজকের ডাঃ ফারাবী তখন মেডিকেল প্রথম বর্ষের ছাত্র । এলাকায় মেয়েদের কাছে তিনি সেই লেভেলের হিট । বিশেষ করে কলেজে পড়ুয়া আপুদের কাছে তো তিনি তখন চোখের মনি । চোখে চশমা লাগিয়ে, হাতে বই, কাঁধে ব্যাগ আর গায়ে সাদা এপ্রন জড়িয়ে তিনি যখন বের হতেন আপুদের চেহারা তখন দেখার মতন হত । আপুরা ফারাবী ভাইয়ের দিকে তাকিয়ে থাকত আর আমি আপুদের হা করা চেহারার দিকে তাকিয়ে তাকিয়ে স্কুলে যেতাম । আপুরা বায়োলজি বইয়ের ইম্পরট্যান্ট কোশ্চেন দাগাতে প্রায়ই ফারাবী ভাইয়ের শরনাপন্ন হত বলে আমি শুনতাম । এমন কি আমার বান্ধুবিরাও এই ছুতায় তার সাথে কথা বলত । আমাকে নিয়ে যাবার ও অনেক চেষ্টা করা হয়েছে , কিন্তু কথা হল বায়লোজি জিনিসটা আমার কোন কালেও পছন্দ ছিল না । ইম্পরট্যান্ট প্রশ্ন দাগিয়েও আমার লাভ হবেনা সেটা আমি জানতাম এবং যেহেতু সেই '' সো কল্ড '' ফারাবী ভাইয়ের প্রতি আমার কোন দুর্বলতা নেই তাই আমি কখনই আমার বান্ধুবিদের সাথে যাই নি । ফারাবী ভাইদের বিখ্যাত বাসাটা পর্যন্ত আমি সনাক্ত করিনি , শুধু তাদের গলিটা চিনতাম । ফারাবী ভাইয়ের প্রতি আমার এই অনাকাংখার কারন আমার বান্ধুবিরা প্রায়ই বুঝার চেষ্টা করত । আর এই ঝাউলা চুলের ঘুম ঘুম চেহারার আতেল ছেলের দিকে তাকিয়ে এনাদের এত প্রেম কোথা থেকে উৎপত্তি হত, আমি সেটা বুঝার চেষ্টা করতাম ।

কথা হল , আমি যেটা বুঝার চেষ্টা করতাম, দুই বছর পরে হঠাত করেই সেটা একদিন আমি বুঝে গেলাম ।

এস এস সি এক্সাম দিবার পর আমার তখন বিশাল অবসর । এত এত প্ল্যান , এটা করব ,ওটা করব , এখানে যাবো, ওখানে যাবো । কিন্তু '' হিট '' এরোসলের বিজ্ঞাপনের মতই আমার সব প্ল্যান ভেস্তে দিল একটা মশা , এক ডজন মশাও হতে পারে । বেশ কয়েকটা মশা না কামড়ালে আমার ওরকম বিচ্ছিরি জ্বর হবার কথা নয় । আমি আক্রান্ত হলাম ডেঙ্গুজ্বরে । অনেক বেশি দুর্বল হয়েছিলাম আমি , আমার ট্রিটমেন্টের জন্যে আব্বু ফারাবী ভাইয়ের বাবাকে বাসায় নিয়ে এসেছিল । চারদিন স্যালাইন দিতে হয়েছিল , আর সেটাই হল কাল । প্রথম দিন স্যালাইন দেবার সময় আমি দেখলাম , সুপারহিট ফারাবী ভাইয়া আমাদের বাসায় এসেছে তার বাবার কথামত । আমার স্পষ্ট মনে আছে, আমি থতমত খেয়ে যখন তার দিকে তাকিয়েছিলাম , সে ফিচলা হাসি দিয়ে বলেছিল , '' কি ইরা ? এইটুক একটা মশাই কাত করে দিল ?'' এরপর স্যালাইন লাগাতে লাগাতে একটা প্রান খোলা হাসি । এখন আমি ভাবি , সেদিন সেই হাসি দেখে আমি তো আমি , যেই মেয়ে পাগল হতনা তার হার্ট নির্ঘাত রেইনফোরসড সিমেন্ট দিয়ে বানানো বলে ধরে নেওয়া যেত । অবিশ্বাস্য হলেও সত্য, ঐ একটা হাসি দেখেই আমার জ্বর অর্ধেক ভাল হয়ে গেল । আমি দুর্বল গলাতেই জবাব দিলাম , '' ওইটুক মশা আপনাকে কামড় দিলে আপনি শুধু কাত না , উপুড় হয়ে যেতেন ।'' আবার সেই হাসি । মানুষ এত সুন্দর করে এরকম বিধ্বংসী হাসি দেয় কেমন করে ? মনে হল, নাহ আর বাচবনা বোধ হয় । আতেল একটা ছেলের হাসি দেখে তাৎক্ষনিক ভাবে পাগল হয়ে গেছি , ভাবা যায়না , কি বাজে অবস্থা !

সিনেমায় দেখতাম, ছেলেরা মেয়েদের হাসি দেখে এভাবে পাগল হয় , কিন্তু একটা মেয়ে হয়ে আমি এমন একটা ফিচলা আতেলের হাসি দেখে এভাবে পাগল হয়ে গেলাম , এইটা কি একটা কথা হল ? এইটা কেন হল ? কিভাবে হল ? এবং অতঃপর কি হবে ? কোনকিছুই আমার জানা ছিল না । আমার শুধু জানা ছিল , আমি শেষ । আমার নীরব পাগলামিতে কেটে গেল অনেকদিন । আমি এসে পড়লাম বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় বর্ষে আর তিনি এখন পুরোদস্তুর ডাক্তার সাহেব । ফারাবী ভাই পাঁচ মাস হল এই হসপিটালে বসে । এই পাঁচমাসে আমি লক্ষ্য করেছি অসুখবিসুখের সময় গুলি আমার বড়ই মধুর হয়ে যায় , এমনকি রোদের মাঝে আইসক্রিম খেয়ে জ্বর বাঁধাবার জন্যে আমি কেমন যেন ব্যাকুল হয়ে যাই । বাসায় কারো ডাক্তার দেখাবার দরকার হলে টার্ম ফাইনালের আগের রাতেও আমি ধিংধিং করে তার সাথে হসপিটালে চলে যাই । এভাবে কেউ কারো প্রেমে পড়ে ? '' বাহ বাহ তুমি তো কফিমগ নিয়ে ভাল মডেলিং কর , কিন্তু আমি তো মডেলিং করার জন্যে এটা দিই নাই , তোমার গলার জন্যে দিয়েছি '' ফারাবী ভাইয়ার কথায় বাস্তবে ফিরে আসলাম , বললাম ,'' আমাকে আর কতক্ষণ বসতে হবে ? '' '' এখানে এসে বস '' , সামনের চেয়ারটা দেখিয়ে দিল । আমি সোফা ছেড়ে চেয়ারে আসতেই বলল ,'' কি গরম দেখেছ ? একটা বৃষ্টি হওয়া উচিত কি বল ? কতদিন হয়না ।'' '' কে বলেছে আপনাকে ? গত পরশু মাঝরাতে অসাধারণ একটা বৃষ্টি হয়েছে '' '' তাই নাকি ? আমি তো টের পেলাম না , তুমি মনে হয় স্বপ্নে দেখেছ ।'' '' জি না , আমি কাটায় কাটায় সোয়া এক ঘন্টা ভিজলাম , আর আপনি বলেন আমি স্বপ্নে দেখেছি ?'' বলতে বলতেই দেখলাম , ফারাবী ভাইয়া চোখ সরু করে আমার দিকে তাকিয়ে আছে । এইরে ! আমি কি করলাম ,বৃষ্টিতে ভিজার কথা বলে দিলাম ? আমার জ্বর আর গলা ব্যাথার এটাই যে আসল কারন ! আবার তার পুরানো ট্রিক্সে আমি পা রাখলাম , জিভে একটা কামড় দিয়ে মাথা নিচু করলাম । '' তুমি এসব কেন কর ? হাসপাতালে আসতে খুব মজা ? হাসপাতালে চিকেন ফ্রাই পাওয়া যায় ?'' আমি ফোস করে নিঃশ্বাস ফেললাম । আরে মাথামোটা ডাক্তার , হাসপাতালে ইরা 'কি' পায় আর ' কাকে' পায় সেইটা তুই জীবনেও বুঝবিনা , তাই এখন বকবক না করে চুপ থাক । '' কি কথা বলনা কেন ?'' ফারাবী ভাই একই ভাবে তাকিয়ে আছে । আমি তার মত দৃষ্টি দিয়েই বললাম , '' আপনি জানেন না আমার গলা ব্যথা ? আমার কথা বলতে কষ্ট হয় ?'' '' সেইটা তো ডাক্তারের দোষ না , তুমি মাঝরাতে বৃষ্টিতে ভিজবা আর সর্দি কাশির সোহাগ সহ্য করবানা , তাই কি হয় ?'' আমি বিরক্ত হয়ে চোখ নামালাম , এই মাথামোটার সাথে কথা বলার কোন মানে হয়না ।

প্রেস্ক্রিপশান নিয়ে উঠতে যাবো , তখন মহামান্য বললেন ,'' আচ্ছা তুমি প্রাইভেট পড়াও ?'' মনে মনে বললাম ,তোমারে পড়াব , রোমান্টিজম ,পড়বা ? এমনিতে মাথা নেড়ে বললাম ,'' পড়াই না ।'' '' পড়াবা একজনরে ? একটা মেয়ে ? ক্লাস এইটের ।'' আমি দাঁত বের করে বললাম ,'' আপনার বোন নাকি ?তাইলে পড়াবো ।'' সে চেয়ারে হেলান দিয়ে বলল ,'' আমার বোন সেইটা নিশ্চিত হলে কেমন করে ? গার্লফ্রেন্ডের বোন ও তো হতে পারে ?তাইলে পড়াবা না ?'' আমি লম্বা একটা শ্বাস নিতে গেলাম , কাশি চলে আসল । বেশ কিছুক্ষন পর কাশি থামলে তাকে বললাম ,'' আপনার গার্ল ফ্রেন্ডের বোন কে আমি পড়াব কেন ?'' ফারাবী ভাই মুচকি হেসে বলল ,'' কেন ? ইঞ্জিনিয়ারিং এর পোলাপাইনরা কারো গার্ল ফ্রেন্ডের আত্মীয়স্বজন পড়ায় না নাকি ?'' '' আমি দূরে গিয়ে পড়াব না , বাসায় কেউ রাজি হবেনা ।'' ফারাবী ভাই একটা কাগজে কিছু একটা লিখে আমার দিকে বাড়িয়ে বলল ,'' এই ঠিকানা , আমাদের এরিয়াতেই । পড়াবা না ?'' এই ছেলের মত খারাপ ছেলে দুনিয়াতে দুইটা নাই । প্রেম করে , গার্ল ফ্রেন্ড আছে , সেইটা আমাকে শুনাল আবার শালী কে পড়ানোর অফার ও দিল , কি বাজে অবস্থা - ভাবা যায়না ! আমি আড়চোখে তার দিকে তাকালাম , মাথা জ্বলে যাচ্ছিল আমার , তার চোখের চশমাটা গুঁড়া করে ফেলতে ইচ্ছে হচ্ছিল । কিন্তু সে মুখ করুন করে বলল ,'' প্লিইজ ?'' এরপরেও কি না বলা যায় ? এক মুহূর্ত পর কি যেন ভেবে বলে ফেললাম ,'' ঠিক আছে ।'' সে তার প্রাণখোলা হাসিতে আমাকে ভাসাতে ভাসাতে বলল ,'' কাল বিকেলে গিয়ে তোমার ছাত্রীর সাথে দেখা করে এসো । আমি ওকে বলে দিব ।'' '' ওকে '' বলে বের হয়ে আসলাম । ছেমড়া তোর গার্ল ফ্রেন্ডরে ইরা দেখে নেবে ! বের হওয়ার সময় একজন কম্পাউন্ডার আর দুইজন নার্সের সাথে দেখা হল । প্রত্যেকেই '' ম্যাম ভাল থাকবেন'' '' শরীরের খেয়াল রাখবেন '' ইত্যাদি উপদেশ দিল । আরে আমি একটু আগে ছ্যাকা খেয়ে সুস্থ হয়ে গেছি । আমার গা থেকে কি ছ্যাকা খাওয়া পোড়া গন্ধ আসছে নাকি যে আমাকে '' খেয়াল রাখবেন '' '' ভাল থাকবেন '' এসব শুনাতে হবে ?

আমি দিব্যি আছি । ফারাবী ভাই আমাকে ছ্যাকা দিবে আমি সেটা জানি । কথা হল , আমি ছ্যাকা খেতে পারি ,তাই বলে ব্যাকা হব নাকি ?

২ . যে গলির সামনে দাঁড়িয়ে আছি , সেই গলিতেই ফারাবী ভাইয়াদের বাসা , কোন টা আমি জানিনা , তবে এই গলিতেই । আমি চাইলেই আমার বান্ধুবিদের কাছ থেকে জানতে পারতাম ফারাবী ভাই কোন বাসায় থাকে । কিন্তু আমি চাইনি , কারন আমি চাইনি কেউ জানুক আমি তাকে পাগলামির এবসলিউট পয়েন্টের কাছাকাছি লেভেলের পছন্দ করি । বড় আপুরা তার পিছনে ঘুরতে ঘুরতে বয়ফ্রেন্ড জুটিয়ে ফেলেছেন , কয়েকজনের বিয়েও হয়ে গেছে , আমার বান্ধুবিদের ও একই দশা । বাকি ছিলাম আমি , সবার অগোচরে , হারাধনের এই শেষজন ও গতকাল ছ্যাকা খেয়েছে । ইহা ব্যক্তি যে নিজের বাসার আশেপাশের মেয়ের সাথে প্রেম করবে সেটা কে জানত ? বেটা মাথামোটা , প্রেম যে কর , ছ্যাকা খেয়ে ব্যাকা হয়ে আমার কাছেই তুমি আসবা , এই আমি বলে দিলাম । তোমার সাথে কোন চিজ প্রেম করে সেইটা দেখতেই আমি পড়াতে আসছি ।

মেয়েটার নাম তিহা । দুই ঝুটি করা বাবু বাবু চেহারার মেয়েটাকে প্রথমেই আমার ভাল লেগে গেল । তিহাও আমাকে '' আপু আপু '' করে অস্থির করে দিল । কিন্তু এভাবে ভাল লাগলে তো হবেনা , এরা হল গিয়ে আমার ভিলেন , ভিলেন দের ভাল লাগলে কি হবে ? বাসায় এদিকে ওদিকে যেদিকেই তাকাই সেদিকেই তিহার আম্মাকেই দেখি । মোটাসোটা আন্টি রা যে কিউট টাইপের ভাল সেটা আরেকবার প্রমান হয়ে গেল । টিচার হিসেবে বাসায় এসেছি , পড়ানোর স্কিল সম্পর্কে আন্টি আমাকে কিছুই জিজ্ঞেশ করলেন না । বরং গরম গরম সিঙ্গারা সামনে এনে বললেন ,'' এই মেয়ে , জলদি একটা খেয়ে বল তো কেমন হয়েছে । ভাল হলে আরও কয়টা বানাব ।'' সিঙ্গারা টিঙ্গারা খেয়ে আমি যে ই বলতে যাচ্ছিলাম ,'' আন্টি আমি তো তিহা কে পড়ানোর জন্য আসছিলাম , তা ...... '' আন্টি আমাকে থামিয়ে দিয়ে বললেন ,'' ফারাবী আমাকে বলেছে । তোমার নাম তো ইরা , তাইনা ?''

চিন্তায় পড়ে গেলাম । মা - মেয়ে যেরকম ভয়ংকর লেভেলের ভাল , তাতে আসল ভিলেন ও যে এদের কাছাকাছিই হবে , সেটা আমি স্পষ্ট বুঝতে পারছিলাম । কিন্তু তাকে তো দেখছিনা । তিহার সাথেই কথা বলছিলাম । চলে আসব তার কিছুক্ষন আগে তিহা বলল , '' জানেন ইরাপু, ফারাবী ভাইয়া না একটা মিথ্যুক ।'' '' তাই ? কেন কেন ?'' '' আমাকে বলেছে , আপনি নাকি ভয়ানক রাগী । কত বড় মিথ্যুক , দেখেন ।'' আমি দম আটকে বললাম ,'' তোমার আপু মনে হয় অনেক শান্তশিষ্ট , তাইনা ?'' '' আপু ?'' '' হুম , কোথায় তোমার আপু ? দেখলাম না তো ।'' '' আমার আপুর কথা জানলেন কিভাবে ?'' '' তোমার ফারাবী ভাই ......'' তিহা আমাকে থামিয়ে দিয়ে বলল ,'' বুঝছি ইরাপু ।'' '' মানে ?'' '' ওনার কথা আর বইলেন না । মিথ্যা কথা বলতে বলতে ঝানু হয়ে গেছে । আমার কোন আপুটাপু নাই ।'' হা হয়ে যাওয়া কাকে বলে , আমার সামনে একটা আয়না থাকলেই আমি প্রাক্টিকালি দেখে ফেলতাম । ফারাবী ভাইকে ব্রাশফায়ার করার ইচ্ছেটাকে অনেক কষ্টে আটকে কোনমতে বললাম , '' তাহলে কয় ভাইবোন তোমরা ?'' '' দুই ভাইবোন । আমি আর ভাইয়া ।ফারাবী ভাইয়া ।'' আমি উঠে দাঁড়ালাম । আমার হাঁসফাঁশ অবস্থা হয়ে গেছে । আমি এই মুহূর্তে এখান থেকে চলে যাওয়াটাকেই ভাল সিদ্ধান্ত বলে বিবেচনা করলাম । কারন এই বাসায় আরও দুই চার মিনিট থাকলে আরও কি কি যে শুনতে হবে সেটা ভেবেই আমি ভীত এবং একই সাথে আতংকিত হয়ে গেলাম !

গলির মাথায় যাবার সময় দেখলাম ফারাবী ভাই পকেটে হাত ঢুকিয়ে সেই রকম ভাব নিয়ে হেটে আসছে । কথা বলব না , কিছুতেই বলব না , হয়ত বলতাম ও না , কিন্তু কেউ ডাকলে কি কথা না বলে থাকা যায় ? ফারাবী ভাই আমার দিকে এগিয়ে এসে বলল , '' তিহার সাথে কথা হয়েছে তোমার ?'' '' হয়েছে ।'' '' পড়াচ্ছ তাহলে ?" আমি নাক কান দিয়ে ধোঁয়া বের করতে করতে বললাম ,'' আপনি এরকম কেন ? তিহা নাকি আপনার গার্ল ফ্রেন্ডের বোন ? আমাকে এভাবে বোকা বানালেন কেন ?'' ফারাবী ভাই গোল গোল চোখে কিছুক্ষন তাকিয়ে থাকল । '' আচ্ছা আমি কিন্তু একবারও বলি নি আসলেই তুমি আমার গার্ল ফ্রেন্ডের বোনকে ...... আচ্ছা ঠিক আছে ধরলাম আমি বলেছি , কিন্তু দেখ আমার বোন মানে আমার তো গার্ল ফ্রেন্ডের ননদ , ননদ আর বোন কি আলাদা ? '' কলার ধরে ঝাঁকাতে ইচ্ছে করছিল খুব । কিন্তু এই ছেলের সাথে কথা বলে আমি আগাতে পারবোনা , তাই বাই বলে চলে আসাটাকেই ফরজ মনে করলাম ।

আর আই পি প্রেম পিরিতি ।

৩ . পিথাগোরাসের বিশাল উপপাদ্যটা বুঝাতে বুঝাতে আমি আবিষ্কার করলাম , তিহার মনটা আজকে বেশ খারাপ । সে পড়ায় মন দিতে পারছে না । খুবই স্বাভাবিক , পড়ায় প্রতিদিন মন বসবে এমন কোন কথা নেই । মনের ও মুড বলে একটা ব্যাপার আছে । আমি পড়া থামিয়ে গালে হাত দিয়ে বললাম , '' উপপাদ্য টা ভীষণ পচা , তাইনা তিহা ? একদম বোরিং ।'' তিহা ফিক করে একটু হাসল । ও আমার কাছে কখনো কিছু লুকায় না । এবারো লুকোল না , মলিন গলায় বলল , '' আপু , মন খারাপ থাকলে ভাল পড়াগুলিও বোরিং হয়ে যায় ।'' কথা সত্য । কেন মন খারাপ সেটা জিজ্ঞেস করাটা ঠিক হবে কিনা ভাবতে ভাবতেই ও বলল , '' আপু জানেন , ভাইয়া না মাদ্রাজ যাচ্ছে আগামী মাসে , কি ডিগ্রি ফিগ্রি নিবে , আমি তো বুঝিনা । ভাইয়ার জন্যে অনেক খারাপ লাগবে আমার । ঝগড়া করলেও তো আমারই ভাইয়া ।তাই পড়াতেও মন দিতে পারছি না । '' কি বলে তিহা ? ফারাবী ভাই মাদ্রাজ কেন যাবে ? এত ডিগ্রি দরকার কেন তার ? আমার চোখ দুটো পিথাগরাসের উপপাদ্যের মাঝে অযথাই এই প্রশ্নের উত্তর খুজতে লাগল । এতক্ষন শুধু ছাত্রীর মন খারাপ ছিল , তাও পড়া যা একটু আগাচ্ছিল , কিন্তু যখন আমার ও ভয়াবহ মন খারাপ হতে লাগল তখন আর পড়া কিভাবে আগায় ? '' তোমার মন যেহেতু খারাপ আজ বরং একটু রিল্যাক্স থাকো ,আমি আসি '' বলে আমি পালিয়ে গেলাম । কিন্তু নিজের কাছ থেকে নিজে তো পালানো যায় না ।

আমি জানতাম আমি ফারাবী ভাই কে পাব না , একদিন না একদিন আমাকে অনেক কিছু এই চোখেই দেখতে হবে । কিন্তু আমি তো একদিন একদিন করে বেঁচে থেকে অভ্যস্ত হয়ে গেছি , তাই ভবিষ্যৎ নিয়ে কখনই বেশিদূর ভাবতে পারতাম না । হাসতে হাসতে দিন কাটিয়ে কখন যে তাকে হারাবার দিন এগিয়ে এল সেটা টের ই পেলাম না । এখন সে চোখের আড়াল হবে , দুদিন বাদেই অন্য কারো সম্পদ হবে । আর আমি ফারাবী ভাইকে না পাওয়ার লিস্টে যুক্ত হব সবার চোখের আড়ালে । আমি কিন্তু অল্পতেই কেঁদে চোখ লাল করার মেয়ে , কিন্তু আজ আমি একটুও কাঁদলাম না । আজ আমি ভীষণ পরিনত ।

ছোটবেলা থেকেই রাগ কন্ট্রোল করতে পারিনা আমি । খুব রাগ হলে চিৎকার করি , কিছুক্ষন পর যখন বুঝতে পারি যে চিৎকার করা ঠিক হয়নি তখন শব্দ না করে কাঁদি । আমার এতদিনের লুকোচুরি ভালবাসাটা হুট করে ভেঙ্গে যাওয়ায় যে কষ্ট আমার হচ্ছিল তা কিভাবে কিভাবে যেন রাগে রুপান্তরিত হয়ে গেল । সেই রাগে আমি না পারলাম চিৎকার করতে , না পারলাম কাঁদতে । ফলস্বরূপ পরদিন প্রচন্ড মাথাব্যাথায় ঘুম থেকে উঠলাম চোখ মুখ লাল করে । মাথাব্যাথায় রাতে এসে গেল সেই লেভেলের জ্বর । আমি প্যারাসিটামল নাপা ইত্যাদি ইত্যাদি সেবন করতে লাগলাম , এতদিনের অভিজ্ঞতা বলে তো একটা কথা আছে । পরের দিন সকালে কোন মাথাব্যাথা নেই , জ্বর নেই , কিন্তু এসিডিটির যন্ত্রণায় সোজা হতে পারলাম না । ভাবতে পারছিলাম না , কি পরিমান রাগটাই না করেছিলাম , মাথাব্যথা আর জ্বর দিয়ে বের হয়ে কুলাতে পারল না , এখন আবার এসিডিটি শুরু হয়েছে ! এরই মাঝে ডজনখানেক বার করে আম্মু আব্বু বলেছে ডাক্তারের কাছে যেতে , আমি ঘাড় বাকা করে বলেছি ,'' এমনেই সেরে যাবে ।''

বিকেল বেলায় যখন ১০০ ডিগ্রি জ্বর , হালকা মাথাব্যথা আর এসিডিটি তিনটাই হাজির হল , আম্মু তখন ভয় পেয়ে বলল ,'' রেডি হ ।'' আমি বিরক্ত হয়ে বললাম ,'' মরার জন্য ?'' '' থাবড়ায়া কানের পর্দাটা ফাটায় দিবো ।'' '' আচ্ছা দিও ।'' '' উঠতেছিস না কেন ? ডাক্তারের কাছে যাব চল ।'' ঘ্যানর ঘ্যানর চলতেই লাগল । শেষমেশ উঠলাম , ভাবলাম লাস্ট বারের মত তাকে দেখে আসিগে । আজকের পর আর কক্ষনো তার কথা ভাববনা । আম্মু কে বললাম , আমি একাই যেতে পারব ।

একা একা যেটা শুরু করেছিলাম , আজ কে একা একাই তার শেষ দৃশ্য টা দেখে আসি ।

৪. ফারাবী ভাই গালে হাত দিয়ে চিন্তিত মুখে আমার দিকে তাকিয়ে বলল , '' এই অবস্থা হলে হবে ?'' তার কথার টাইপ শুনলে মেজাজ তো আমার এমনি খারাপ ই হয় । অন্যদিন যদিও আড়াল করার চেষ্টা করি , আজ আর করলাম না , বললাম , '' সেটা দিয়ে আপনার কি ? ওষুধ লিখে দেন । চলে যাই ।'' '' আচ্ছা '' , প্যাড হাতে নিতে নিতে বলল ,'' মাদ্রাজ যাচ্ছি জানো তো ? '' '' নাহ , এলাকায় এই নিয়ে কোন ব্যানার দেখিনি ।'' '' ও আচ্ছা তিহা বলেনি তোমাকে তাহলে । আমি মাদ্রাজ যাচ্ছি এই মাসের শেষে । আম্মা তো খুব করে ধরেছে , বিয়ে করে যেতে হবে । তা না হলে নাকি আমি একবার উড়াল দিলে আর ফিরে আসব না ।'' আমি চুপ করে থাকলাম । মনে মনে বললাম ,'' ছ্যামড়া তোর আসার জন্যে কে মরতেছে ?'' হুম আমি ই তো মরতেছি । '' বিয়ে করে দূরে যাওয়ার ইচ্ছা আমার নাই , বুঝলা ইরা ? এঙ্গেজ করে রাখা যায় । তাতে রাজি হয়েছি । '' এবারো কিছু বললাম না । তবে মনে হতে লাগল , এর কাছে কি আমি সুস্থ হতে আসছি নাকি জলদি মরে যেতে আসছি ? এই ছেলে আমাকে এসব শুনাচ্ছে কেন ? '' দেশে আসার পরে জাঁকজমক অনুষ্ঠান করে বিয়ে করব । বিয়েতে তোমাকে একটা রোল দেওয়ার কথাও আমি ভেবে রেখেছি ।'' আমি সরাসরি তার চোখের দিকে তাকালাম ,'' তাই , না ?'' আমার তাকানোর ভঙ্গীতে ডাক্তার সাহেব ভড়কে গেলেন সেটা আমি বুঝতে পারলাম । কোনরকমে বলল , '' ইরা তোমার কি হয়েছে ? কি সমস্যা ? অসুস্থ লাগছে ?'' নিজের উপর নিয়ন্ত্রন হারিয়ে বলতে লাগলাম , '' এত কথা বলেন কেন আপনি ? আমার সমস্যা জানতে চান ? আমার সমস্যা কি সেইটা আপনি বুঝেন না ? মেডিকেল কলেজ থেকে কি ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করেছেন ?মানুষের সাইকোলজি ধরতে পারেন না ? আমার কি সমস্যা সেটা কোন দিন বুঝবেন না আপনি , তাই প্লিজ জিজ্ঞেশ করবেন না । দয়া করে কোন কথা না বলে জ্বর আর এসিডিটির জন্য প্রেস্ক্রিপশান লিখেন ।'' এতগুলি কথা এক নাগাড়ে বলে দেখি , ফারাবী ভাই তখনও নিঃস্পৃহ চোখে তাকিয়ে আছে । আমি কেন এসব বললাম জানিনা , কেন জানি প্রচন্ড কান্না পেতে লাগল । কান্না চেপে রাখতে গিয়েও পারলাম না , চোখের সীমানা ছাড়িয়ে একুয়াস হিউমারদের স্বাধীন আনাগোনা শুরু হয়ে গেল । তাড়াতাড়ি চোখ মুছে তাকিয়ে দেখি সে কলমের ক্যাপ খুলছে , প্রেস্ক্রিপশান লিখবে । লেখা হয়ে গেলে সে কাগজটা আমার দিকে বাড়িয়ে দিল । আমি প্রেস্ক্রিপশানটার দিকে একবার তাকালাম ।

তাকিয়ে থাকলাম এবং তাকিয়েই রইলাম ।

'' ইরা , তোমার অসুখের একমাত্র চিকিৎসা টা হল , রোজ সকালে ঘুম থেকে উঠবার পর এবং রাতে ঘুমাতে যাবার আগে ডা. ফারাবী আহসানের হাতে দুইটা করে কান মলা খাওয়া । এই ওষুধ লাইফটাইম চালাতে হবে । অন্যথায় রোগির জীবন মরন সমস্যা হবে এবং পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় ডাক্তার সাহেবেরও জীবনের আশংকা ঘটবে । ''

প্রেস্ক্রিপশানের দিকে আমাকে হা করে তাকিয়ে থাকতে দেখে সে আমার চোখের সামনে তুড়ি বাজিয়ে বলল , '' কি হল ? '' আমি বোকার মত তাকিয়ে বললাম , '' আপনার লেখা বুঝতে পারছি না ।'' ফারাবী ভাই হতাশ হয়ে চুলে আঙ্গুল চালিয়ে বলল ,'' জীবনে বুড়া বয়সে একটা লাভ লেটার লিখলাম , তাও লেখাটা বোধগম্য হল না । এই দুঃখ কোথায় রাখি ? তবে একান্তই না বুঝলে কি আর করা , ওষুধের দোকানদারকে দেখাইও ।'' আমি ফোস করে নিঃশ্বাস ফেলে বললাম , '' আমি লেখাটা কোনরকমে পড়তে পেরেছি । কথা হল , এসব ফাজলামির মানে কি ? আমার সাথে সেই কবে থেকে আপনি কেবল ফাজলামিই করছেন ,এমনটা কেন করেন ? আমি একটা মানুষ ,আমার এত সহ্য হয়না । '' সে কয়েক মুহূর্ত একদম চুপ । আমি বললাম ,'' কি ? কথা বলেন না কেন ?'' '' কি বলব আমি ? এই ক্লিনিকের প্রতিটা স্টাফ , কম্পাউন্ডার , নার্স এমনকি দারোয়ান চাচা পর্যন্ত বুঝে যে আমি তোমার উপর ড্যাম খেয়ে আছি , আর তুমি বুঝলা না ? কি জন্য বুঝলা না , সেটা তো আমি বুঝলাম না । ''

আচ্ছা আসলেই কি আমার বুঝা উচিত ছিল ? আমার সাথে সে অনেক আজাইরা আলাপ করত , এগুলো কি ভালবাসত বলেই করত ? আসলেই মনে হয় আমার বুদ্ধি বয়সের সাথে ব্যাস্তানুপাতে বেড়ে যাচ্ছে ! আমি চোখ ছোট ছোট করে বললাম ,'' আমাকে না বিয়েতে কি একটা রোল দিবেন ?'' '' কেন ? কনের রোল ? কনে থাকতে হবে না ?''

৫. ফারাবী ভাই কে আমি এখন শুধু ফারাবী বলে ডাকি , যদিও সে আমার থেকে বয়সে ভালই বড় । কিন্তু কি আর করব , বাগদানের পরে তো '' ভাই'' বলতে গিয়ে কানমলা খেলাম , সেই রিস্ক কি আবার নেয়া যায় ? যাই হোক , আমি এখন ফারাবীর সাথে বসে আছি । আমাদের মাঝে দূরত্বটাও আপেক্ষিক , হয়ত খুব কাছে আবার হয়ত অনেক দূরে । কারন মাঝখানে দেয়াল হয়ে আছে ল্যাপ্টপের স্বচ্ছ স্ক্রিন টা । ডাক্তার সাহেব বাগদান করেই মাদ্রাজে দৌড় দিয়েছেন কিনা তাই !

'' ম্যাডাম খুব খেপে আছেন । কি হয়েছে ?" '' তোমার মস্তিষ্ক হয়েছে ।'' '' কেন ? মাদ্রাজ চলে আসছি বলে আবার মেজাজ গরম? '' আমি দাঁত কিড়মিড় করে বললাম , '' একবার দেশে আসো , তোমার গায়ে আমি কালাসাবান ছুড়ে মারবো । এপ্রন থাকা অবস্থায় ই ।'' ফারাবী করুন মুখে বলল ,'' ঠিক আছে , আমি ঐ এপ্রন পরেই বাইরে যাব । সবাই বুঝুক জীবিত এবং বিবাহিতদের মধ্যে পার্থক্য ।'' '' চুপপ ! ''

ফারাবী চুপ হয়ে মুচকি হাসতে লাগত । আর আমি সিদ্ধান্ত নিলাম , কালাসাবান আমি ছুড়ে মারবই । সাইজ করা দরকার ওকে । এপ্রন নোংরা হবে হোক । আমি যেহেতু নোংরা করব , আমিই পরিস্কার করব , সমস্যা না ।

কথা হল, বাজারে এখন ভাল ডিটারজেন্ট কোন টা ? সার্ফ এক্সেল ?নাহ যাই , টিভিতে বিজ্ঞাপন দেখতে হবে !