Thursday 7 May 2015

ভারতের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি যার দৈনিক আয় ১১ কোটি রুপি !


বিশ্বজুড়ে বিস্তৃত রিলায়েন্স গ্রুপের মালিক মুকেশ আম্বানি হচ্ছেন শুধু ভারত নয়, বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ সম্পদশালী মানুষদের একজন। তার সমুদয় সম্পত্তির আনুমানিক মূল্য হচ্ছে ২১.২ বিলিয়ন ডলার যা ভারতীয় রুপিতে যার মূল্যমান ১.২৯ লাখ কোটি! এই পেজটিতে মুকেশ আম্বানির বিভিন্ন তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।
জন্ম ও পরিবার
ভারতীয় নাগরিক হলেও মুকেশ আম্বানি ১৯৫৭ সালের ১৯ এপ্রিল ইয়েমেনে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম ধিরুভাই আম্বানি এবং মায়ের নাম কোকিলাবেন আম্বানি। তিনি তার বাবা-মায়ের প্রথম সন্তান। অনিল আম্বানি নামে মুকেশ আম্বানির আরও এক ভাই ও দুই বোন রয়েছে।
পড়াশোনা
আম্বানি মুম্বাই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন এবং পরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের স্টানফোর্ড থেকে এমবিএ করেন। ১৯৮০ সালে তিনি স্টানফোর্ড থেকে পড়াশোনা শেষ করেন।
বসবাস
মুকেশ এবং তার পরিবার প্রথমে মুম্বাইয়ের ভুলেশ্বর এলাকায় দুই বেডরুমের আপার্টমেন্টে থাকতেন। তাদের এ বাসাকে আমেরিকানদের ভাষায় টেনামানট বলা হয়। যখন ১৯৬০-এর দশকের শেষ দিকে রিলায়েন্স কোম্পানি বড় হয়ে উঠতে লাগল তখন আম্বানির পরিবার মুম্বাইয়ের অভিজাত এলাকায় উঠে আসে।
মুকেশ আম্বানির বাবা ধিরুভাই আম্বানি ও রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজ গড়ে ওঠার গল্প
আজ আমরা ভারতের শীর্ষ ধনী মুকেশ আম্বানি কিংবা রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজ এর কথা জানি তার মূলে রয়েছেন মুকেশ আম্বানির বাবা ধিরুভাই আম্বানি। ভারতীয় শিল্প ইতিহাসে যে কজন নায়ক রয়েছেন তাদের মধ্যে অন্যতম হলেন এই ধিরুভাই আম্বানি। ধিরুভাই আম্বানি ১৯৩২ সালের ২৮ ডিসেম্বর ভারতের গুজরাটের জুনাগড় জেলার এক প্রত্যন্ত গ্রামে হীরাচাঁদ আম্বানি ও জামনার সংসারে জন্মগ্রহন করেন। পুরো নাম ধীরাজলাল হীরাচাঁদ আম্বানি। ‘ধীরুভাই’ নামেই যিনি ভারতখ্যাত। বাবা ছিলেন স্কুল শিক্ষক। মায়ের কোল ছেড়ে নামার পর যখন সবকিছু বুঝতে শেখেন তখন থেকেই টাকা কামানোর বুদ্ধিতেই দিন কাটত তার। মহাশিবরাত্রি মেলায় ধীরুভাই বন্ধুদের সঙ্গে মিলে ঐতিহ্যবাহী গানথিয়া মিষ্টি বিক্রি করত।’ শৈশব থেকেই ধীরুভাই ছিলেন গ্রামের পরিচিত মুখ। সাইকেলে চষে বেড়াতেন এক গ্রাম থেকে আরেক গ্রাম। স্কুল শিক্ষক বাবার বেতন বলার মতো ছিল না। ফলে সন্তানদের পারেননি উচ্চশিক্ষিত করতে। পরিবারের আর্থিক সংকট অনুধাবন করেই কিনা ম্যাট্রিক পাস দিয়ে বই-খাতার ধারে কাছে আর গেলেন না। নেমে পড়লেন কর্ম সন্ধানে। তখন তার বড় ভাই রামনিকলাল আম্বানি কাজ করতেন ইয়েমেনের বন্দর নগরী এডেনে (ব্রিটিশ উপনিবেশ ছিল তখন)। বড় ভাই জানালেন, কাজের অভাব নেই এখানে। আম্বানি কালবিলম্ব না করে চলে গেলেন এডেনে, যোগ দিলেন ভাইয়ের সঙ্গে। ধিরুভাই আম্বানি যখন ইয়েমেনে পাড়ি জমান তখন তার বয়স ছিল ১৭ বছর এবং সময়টা ছিল ১৯৫৩ সাল। ইয়েমেনে গিয়ে শেলের রিফাইনারিতে যোগ দেয়ার পর প্রথম মাসিক বেতন পেয়েছিলেন ৩০০ রুপি। এ কোম্পানিতে চাকরি করে তেলের ব্যবসা ভালোভাবে বুঝে গিয়েছিলেন। কর্মক্ষেত্র ছিল একটি পেট্রোল স্টেশন, কাজ ছিল গ্যাস ভরা ও অর্থ আদায় করা। একপর্যায়ে বিক্রয় ব্যবস্থাপকে উন্নীত হন। পরে যোগ দেন মার্চেন্ডাইজিং ফার্ম এ বিজ অ্যান্ড কোম্পানিতে (বার্মা শেলের অধিভুক্ত)। সেখানে কাজ করেন পাঁচ বছর। এর মধ্যে আরবি ভাষাটাও রপ্ত করে নেন ভালোভাবেই। বেতন বেড়ে দাঁড়ায় ১ হাজার ১০০ রুপিতে। হঠাৎই মাথায় ভাবনা আসে – ভিন দেশে আর কত! এমন ভাবনায়ই ৮ বছর পর এডেন ছেড়ে ফিরে আসেন নিজভূম ভারতে।
কারখানা গড়তে টাকার জন্য যখন হন্যে হয়ে ছোটার সময় ব্যাংকগুলো ফিরিয়ে দিয়েছিল তাকে। এ অবস্থায় তার সামনে খোলা পথ ছিল একটিই, সাধারণ বিনিয়োগকারী। তখনকার চর্চা ছিল, টাকার দরকার হলে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের দ্বারস্থ হওয়া। ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে তহবিল সংগ্রহের বিষয়টা ছিল চিন্তা থেকে দূরে, বেশ দূরে। আম্বানি উপলব্ধি করেছিলেন, তার ব্যবসায়িক উদ্যোগে মানুষকে বিনিয়োগে আগ্রহী করে তুলতে এমন কিছুর প্রস্তাব করতে হবে, যাতে তারা অভ্যস্ত নয়। যখন তিনি দৃশ্যপটে আসেন, তখন কোম্পানি ব্যবস্থাপকরা তাদের কোম্পানির শেয়ারের দর নিয়ে মোটেই চিন্তা করতেন না। তাদের ধ্যান-জ্ঞান ছিল লাভ করা আর লভ্যাংশ ঘোষণা দিয়ে বসা। কিন্তু আম্বানি এ দৃষ্টিভঙ্গি থেকে সরে এসে বিনিয়োগকারীর স্বার্থকে অগ্রাধিকার দেয়ার উদ্যোগ নেন। কোম্পানির দায়িত্বেরই এক অংশ হিসেবে সারা জীবন এ মনোভঙ্গি পোষণ করে গেছেন।
মুকেশ আম্বানির বাবা ধিরুভাই আম্বানির প্রতিষ্ঠিত রিলায়েন্স গ্রুপ প্রথম দিকে ইয়েমেন থেকে মসলা আমদানি করতো। পরবর্তীতে তারা সুতার ব্যবসা শুরু করে। ১৯৮০ সালে মুকেশ আম্বানি যখন স্ট্যানফোর্ড থেকে পড়াশোনা শেষ করে বের তখন পলেস্টার, আঁশ এবং সুতার ব্যবসা যাকে সংক্ষেপে পিএফআই ব্যবসা বলে, ব্যক্তিমালিকানাধীন খাতের জন্য উন্মুক্ত হয়। মুকেশ আম্বানির বাবা এ ব্যবসার জন্য আবেদন করেন এবং সরকারের কাছ থেকে পিএফআই ব্যবসার লাইসেন্স পান।
ধিরুভাই আম্বানি তখন মুকেশ আম্বানিকে দেশে ফিরতে বলেন এবং তাকে একটি পলেস্টার কারখানার দায়িত্ব দেন। ১৯৮০-এর দশকের মাঝামাঝি মুকেশ তার বাবার কোম্পানিতে সুতা উৎপাদনের ব্যবসায় ব্যুৎপত্তি লাভ এবং ভারতের প্রত্যন্ত গ্রাম পর্যন্ত এ ব্যবসাকে সম্প্রসারণ করেন। তার নেতৃত্বগুণে কোম্পানির ব্যবসা উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পায়। পরবর্তী বছরগুলোতে রিলায়েন্স পেট্রোকেমিক্যাল, পেট্রোলিয়াম পরিশুদ্ধকরণ, টেলিকমিউনিকেশন, বিনোদন, সম্পত্তি ব্যবস্থাপনা এবং তেল ও গ্যাস অনুসন্ধান ইত্যাদি ব্যবসায় নিজেদের সম্প্রসারিত করে।
বাবার মৃত্যুর পর
আম্বানির বাবা যখন ২০০২ সালে মারা যান তখন দুই ভাই মুকেশ ও অনিলের মধ্যে রীতিমতো যুদ্ধ শুরু হয়ে যায়। এ যুদ্ধ কোম্পানির মালিকানাকে কেন্দ্র করে। রিলায়েন্সকে কেন্দ্র করে এ যুদ্ধ শেষ হয় তাদের মায়ের হস্তক্ষেপে এবং একটি মধ্যস্থতা হয়। মধ্যস্থতার মাধ্যমে অনিল রিলায়েন্সের টেলিকমিউনিকেশন, সম্পদ ব্যবস্থাপনা এবং বিনোদনের মালিকানা পান। মুকেশ পান কোম্পানির তেল, টেক্সটাইল এবং সব শোধনাগারের ব্যবসা।
রিলায়েন্সের বর্তমান অবস্থা ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা
বর্তমানে মুকেশের দেশ ভারত গোবর পুড়িয়ে যে জ্বালানি উৎপাদন করে তাতেও তার অবদান রয়েছে। রিলায়েন্স এখন পৃথিবীর বৃহত্তম তেল শোধনাগার নির্মাণ করেছে। ২০১৩ সালে ভারত পৃথিবীর তেল উৎপাদক দেশগুলোর মধ্যে ২৩তম অবস্থান অর্জন করেছে। আম্বানির নেতৃত্বে তেল এবং জ্বালানি বিশ্বে রিলায়েন্স একটি সমৃদ্ধশালী নামে পরিণত হয়েছে। কোম্পানি ভারতবাসীর খাবারের জন্য ৭০০টি দোকান খুলেছে। আম্বানির প্রতিশ্রুতি যে এসব দোকানের মাধ্যমে ভারতের জমকালো নগরী থেকে প্রান্তিক এলাকায় অর্থ পৌঁছে যাবে। আগামী পাঁচ বছরে আম্বানির লক্ষ্য, রিলায়েন্স প্রতি বছর ৪০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার রাজস্ব আয় করবে এবং ১৫ থেকে ৩০ মিলিয়ন ভারতীয়ের চাকরির ব্যবস্থা করবে। এমনকি নতুন আঙ্গিকে রিলায়েন্সের ক্ষমতা গ্রহণের পর আম্বানি পেট্রোকেমিক্যাল, তেল, গ্যাস এবং টেক্সটাইলের ব্যবসায় আধিপত্য ধরে রাখতে চান। ভারতের কিছু নির্দিষ্ট এলাকায় রিলায়েন্সের মুদির দোকানগুলো কৃষকদের আরো উৎপাদনশীল করে তুলেছে।
গত ২০১৩-১৪ অর্থবছরের হিসাব অনুযায়ী তার কোম্পানি রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের (আরআইএল) সম্পদের পরিমাণ ৪,০১,৩০২ কোটি রুপি। এর আগের অর্থবছরে ছিল ৩,৭১,১১৯ কোটি রুপি। আম্বানির কোম্পানি গত দুই বছরে সবচেয়ে বেশি মুনাফা অর্জন করে। গত বছরে এই সময়ে তার কোম্পানির আয় ছিল ৫ হাজার ৫৮৯ কোটি টাকা। এ বছরের জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত আরআইএল মুনাফা করেছে ৫ হাজার ৬৩১ কোটি টাকা। গত অর্থবছরে ভারতের মধ্যে সবচেয়ে বেশি মুনাফা অর্জন করেছে এই প্রতিষ্ঠানটি। ২১ হাজার ৯৮৪ কোটি টাকা লাভ হয়েছে ২০১৩-১৪ অর্থবছরে, যা ২০১২-১৩ অর্থবছরের তুলনায় ৪.৭ শতাংশ বেশি। ২০১২-১৩ অর্থবছরে আরআইএল ২১,০০৩ কোটি রুপি লাভ করেছে।
একাধারে টানা ৬ বছর ভারতের শীর্ষ ধনী
২০১৩ সালে ভারতের শীর্ষ ১০০ ধনীর মধ্যে প্রথম অবস্থানে রয়েছেন রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজের মুকেশ আম্বানি। ফোর্বসের জরিপে দেখা যায়, ২১ বিলিয়ন ডলারের সম্পত্তির মালিক আম্বানি টানা ছয় বছর এ অবস্থান ধরে রেখেছেন। অপরদিকে চিনা সংস্থা হুরুনের ‘২০১৪ গ্লোবাল রিচ লিস্ট’-এর তালিকা অনুযায়ী, ভারতে ৭০ জন আছেন যাঁদের সম্পত্তি ১০০ কোটির বেশি। সেই তালিকার শীর্ষে রয়েছেন মুকেশ আম্বানি। তাঁর সম্পত্তির পরিমাণ প্রায় ১.১ লক্ষ কোটি টাকা।
এশিয়ার শীর্ষ ধনী:
মুকেশ আম্বানি শুধুমাত্র ভারতেরই শীর্ষ ধনী নন। এশিয়ার শীর্ষ ধনীদের তালিকায়ও তিনি রয়েছেন সবার শীর্ষে। তাঁর মালিকানাধীন ‘রিলায়েন্স’ নামক প্রতিষ্ঠানটি ভারতের একটি গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক কোম্পানি। ভারতের জামনগরে অবস্থিত পৃথিবীর তৃণমূল পর্যায়ে থাকা সর্ববৃহৎ পেট্রোলিয়াম পরিশোধনাগারটির পরিচালনার দায়িত্বে আছেন মুকেশ আম্বানি।
বিশ্বে ৪১ তম ধনী
ভারত ও এশিয়ার সেরা ধনী মুকেশ আম্বানি বিশ্বের সেরা ধনীদের তালিকায় ৪১ তম স্থানে অবস্থান করছেন। ২০১৪ সালে চীনাভিত্তক গবেষণা প্রতিষ্ঠান হুরুন এর এক প্রতিবেদনে এই তথ্য প্রকাশ করা হয়।
ফোর্বস কি বলছে?
বিশ্বের সেরা ধনীদের যে তালিকা ফোর্বস প্রকাশ করেছে তাতে দেখা যাচ্ছে বিশ্বের শীর্ষ ১৬৪৫ জন ধনী ব্যক্তির তালিকায় মুকেশ আম্বানি রয়েছেন ৪০ তম স্থানে। তার সম্পদের পরিমাণ ১৮৬০ কোটি মার্কিন ডলার।
মুকেশ আম্বানির দৈনিক আয়
ভারতের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি মুকেশ আম্বানির দৈনিক আয় ১১ কোটি রুপি। গত ২০১৩-২০১৪ অর্থ বছরের হিসাবে তার কোম্পানি রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের (আরআইএল) সম্পদের পরিমাণ ৪,০১,৩০২ কোটি রুপি। এর আগের অর্থ বছরে ছিল ৩,৭১,১১৯ কোটি রুপি।
মুকেশ আম্বানির বার্ষিক বেতন
মুকেশ আম্বানি রিলায়েন্স গ্রুপের কর্ণধার। এছাড়া তার এই ব্যবসার আরও অংশীদার রয়েছে। ব্যবসা পরিচালনার জন্য প্রতিষ্ঠান থেকে তিনি যে বার্ষিক বেতন পান তার পরিমাণ ২৪ কোটি টাকা। মাসের হিসেবে দাঁড়ায় ২ কোটি টাকা। এছাড়া বিভিন্ন ধরনের যে ভাতা পান তার পরিমাণ ৬০ লক্ষ টাকা।
বিশ্বের সবচেয়ে বিলাসবহুল বাড়ির মালিকানা
বিশ্বের সেরা ধনীর খেতাব অর্জন করতে না পারলেও বিশ্বের সবচেয়ে বিলাসবহুল বাড়ির মালিকানার খেতাব মুকেশ আম্বানির দখলে। আম্বানির পরিবারের সদস্য সংখ্যা ছয়। এই ছয়জন সদস্যের জন্য বাড়ি বানানো হয়েছে ৪ লাখ বর্গফুটের। বাড়িটির নাম রাখা হয়েছে ‘এন্টিলিয়া’, যার ফ্লোর সংখ্যা ২৭। ২০০২ সালে মুকেশ আম্বানি মুম্বাই নগরীতে ৪৯ হাজার বর্গফুট জায়গা কিনে নেন। সাত বছরের নির্মাণ কাজে ব্যয় করা হয়েছে ১শ’ কোটি ডলার। বাড়িটির উচ্চতা ১৭৩.১২ মিটার, যা একটি সাধারন ৬০ তলা দালানের উচ্চতার সমান। প্রথম ৬ তলা নির্ধারন করা হয়েছে কার পার্কিং স্পেস হিসেবে। আমদানী করা ১৬৮টি লাক্সারী গাড়ি ব্যবহার হয় শুধুমাত্র পরিবারের প্রয়োজনে। সপ্তম তলা রাখা হয়েছে গাড়ির সার্বিক রক্ষনাবেক্ষনের জন্য ওয়ার্কশপ হিসেবে। অষ্টম তলায় রয়েছে একটি বিশাল বিনোদন কেন্দ্র, এখানে নির্মান করা হয়েছে ৫০ জনের আসনক্ষমতা নিয়ে একটি মিনি থিয়েটার। নবম তলা রিফিউজ ফ্লোর, জরুরী প্রয়োজনে উদ্ধার কাজের জন্য এটি ব্যবহার হবে। তার উপরের দুটি ফ্লোর স্বাস্থ্য কেন্দ্র। একটিতে রয়েছে সুইমিংপুল সহ খেলাধুলার সব সরঞ্জাম। অপরটিতে নির্মান করা হয়েছে আধুনিক সব উপকরন নিয়ে তৈরি সুবিশাল হেলথ জিম। তিনটি ফ্লোর জুড়ে রয়েছে নয়নাভিরাম ঝুলন্ত বাগান। নানা জাতের গাছ ও ফুলে শোভিত হয়েছে এই সুবিশাল বাগান। দুটি ফ্লোর রাখা হয়েছে আম্বানী পরিবারের আত্মীয়-স্বজন তথা অতিথিশালা হিসেবে। বাড়ির উপরের দিকে চারটি ফ্লোর, যেখান থেকে আরব সাগর ও আকাশের মিলনরেখার অবারিত সৌন্দর্য উপভোগ করা যায়, নির্ধারিত হয়েছে মুকেশ, তার স্ত্রী নিতা, তিন সন্তান এবং মুকেশের মা কোকিয়াবেন এর জন্য। বাড়ির শীর্ষে দুটি ফ্লোরের মধ্যে একটি পরিবারের সার্বিক রক্ষনাবেক্ষনের জন্য এবং তার পরেরটি হ্যালিপেড এর নিয়ন্ত্রন কক্ষ হিসেবে ব্যবহার হবে। বাড়ির শীর্ষে নির্মান করা হয়েছে তিনটি হ্যালিপেড।
অবিশ্বাস্য শোনালেও সত্য, শুধু অভিশাপ কুড়ানোর ভয়েই বিশ্বের সবচেয়ে দামি বাড়িটিতে থাকতে রাজি হচ্ছেন না ভারতীয় ধনকুবের মুকেশ আম্বানি। অভিযোগ উঠেছে, ভবনটি নির্মাণের ক্ষেত্রে হিন্দু পুরাণের স্থাপত্যকলা বিষয়ক পরম গ্রন্থ ‘বাস্তুশাস্ত্র’-এর নির্দেশিত বিধান যথাযথ অনুসরণ করা হয়নি। ফলে কেউ সেখানে থাকতে চাইলে প্রাচীন ঋষিবর্গের অভিশাপ নেমে আসতে পারে তার ওপর। হিন্দু পুরাণের বাস্তুশাস্ত্র অনুসারে বাসভবনের সদর মুখ থাকতে হবে সূর্যের দিকে। কিন্তু অ্যান্টিলিয়ার পূর্বাংশে সূর্যের আলো প্রবেশের জন্য নেই পর্যাপ্ত জানালা। তবে সর্বশেষ ২০১০ সালের ২৮ অক্টোবর আনুষ্ঠানিকভাবে ‘গৃহপ্রবেশ’ অনুষ্ঠান এর মাধ্যমে বাড়িটিতে বসবাস করা শুরু করেছে মুকেশ আম্বানি পরিবার। এই বাড়ি ও বাড়ির মানুষজনের দেখাশোনার জন্য রয়েছে ৬০০ জন কর্মী, যা একটি বাড়ি ও বাড়ির মানুষজন দেখাশোনার জন্য নিয়োজিত কর্মীর হিসেবেও একটি রেকর্ড।
স্ত্রীকে জন্মদিনের উপহার দিলেন বিমান
একটি বিমানের দাম কেমন হতে পারে তা আমাদের সবারই কমবেশি জানা আছে। মুকেশ আম্বানি ২০০৭ সালে তার স্ত্রী নীতা আম্বানির ৪৪ তম জন্মদিনে একটি বিমান উপহার দেন। নীতা আম্বানিকে যেই বিমানটি উপহার দেওয়া হয় তাতে রয়েছে একটি অফিস, গেম কনসোল, মিউজিক সিস্টেম, স্যাটেলাইট টেলিভিশন এবং ওয়্যারলেস কমুনিকেশন সিস্টেমসহ বিনোদন কেবিন৷ এছাড়া আছে একটি মাস্টার বেডরুম, অত্যাধুনিক শাওয়ারসহ বাথরুম এবং মুড লাইটিং সমৃদ্ধ এন্টারটেইনমেন্ট বার৷ মুকেশ আম্বানি ১৯৮৪ সালে বিয়ে করেন নীতা আম্বানিকে।

0 comments:

Post a Comment