MOnirul Islam

Go to Blogger edit html and find these sentences.Now replace these sentences with your own descriptions.

This is default featured slide 2 title

Go to Blogger edit html and find these sentences.Now replace these sentences with your own descriptions.

This is default featured slide 3 title

Go to Blogger edit html and find these sentences.Now replace these sentences with your own descriptions.

This is default featured slide 4 title

Go to Blogger edit html and find these sentences.Now replace these sentences with your own descriptions.

This is default featured slide 5 title

Go to Blogger edit html and find these sentences.Now replace these sentences with your own descriptions.

Friday 27 February 2015

জেনে নিন, বিয়ের প্রথম রাতে প্রত্যেক পুরুষই ৭টি আশা !

বিয়ের প্রথম রাত, অর্থাৎ ফুলশয্যার রাত হচ্ছে যে কোন দম্পতির জীবনের সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ রাত। বলাই বাহুল্য যে এই রাত নিয়ে উভয়েরই অনেক স্বপ্ন, অনেক চাওয়া-পাওয়া থাকে। নারী না হয় একবুক আশা নিয়ে শ্বশুর বাড়িতে গেলেন স্বামীর জীবনে, কিন্তু স্বামী কী আশা করেন? চলুন, জেনে নিন এমন ৭টি বিষয় যা ফুলশয্যার রাতে প্রত্যেক পুরুষই আশাকরেন নিজের স্ত্রী তরফ থেকে!
১) স্ত্রীকে দেখা যাবে অপ্সরার মতন  জীবনে খুব বেশি মানুষ বারবার বিয়ে করেন না, বিশেষ রাতটি বারবার ফিরে আসে না জীবনে। এবং প্রত্যেক পুরুষই স্ত্রীকে সেদিন নিজের স্বপ্ন কন্যা রূপে দেখতে চান। আশা করে থাকেন যে স্ত্রীকে দেখাবে পৃথিবীর সবচাইতে সুন্দর রমনীর মত।
২) স্ত্রীর জীবনে তিনিই প্রথম পুরুষ অধিকাংশ পুরুষ আজও আশা করেন যে স্ত্রী ভার্জিন হবে। অর্থাৎ তিনিই হবেন প্রথম পুরুষ যার সাথে স্ত্রী প্রথম শারীরিক সম্পর্ক করেছে।
৩) একটু লজ্জা, একটু ছলকলা লজ্জা নারীর ভূষণ, এই কথাটি ফুলশয্যার রাতেই যেন সবচাইতে বড় সত্য। বিয়ে প্রেমের হোক বা পারিবারিক, প্রত্যেক পুরুষই এই বিশেষ রাতে আশা করে থাকেন যে স্ত্রী একটু লজ্জা পাবেন। একটু প্রেমের ছলকলা খেলবেন, আর তবেই ধরা দেবেন প্রেমের বন্ধনে।
৪) সমৃদ্ধ জীবনের আশ্বাস দুজনে একত্রে নতুন জীবন শুরু করতে চলেছেন, বিয়ের এই প্রথম রাতটি তাই ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ। পরস্পরকে আশ্বাস ও প্রতিজ্ঞা করার জন্য আদর্শ সময়। স্বামীও আশা করেন যে স্ত্রী তাঁকে একটু সুখের সংসারের আশ্বাস দেবেন।

৫) নিজের প্রশংসা নিজের প্রশংসা শুনতে কে না ভালোবাসে? আর পুরুষেরা তো স্ত্রীর মুখে নিজের প্রশংসা শুনতে সবচাইতে বেশি পছন্দ করেন। বিয়ের প্রথম রাতেই এই প্রত্যাশা থাকে সবচাইতে বেশি।
৬) শ্বশুর বাড়ির প্রাপ্তি নিয়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ
বিয়েতে কী হলো, কী হলো না, কী পেলেন, কী পেলেন না ইত্যাদি নিয়ে হতাশা বা ক্ষোভ ব্যক্ত না করে যা পেয়েছেন সেটা নিয়েই সন্তুষ্টি প্রকাশ করুন। দেখবেন স্বামীর চোখে আপনার সম্মান হয়ে উঠেছে আকাশচুম্বী।
৭) নিজের ভার স্বামীর হাতে ছেড়ে দেয়া
এটা সেই বিশেষ রাত, যে রাতে স্ত্রী নিজেকে অর্পণ করেন স্বামীর জীবনে। নিজের দায়িত্ব ছেড়ে দেন স্বামীর হাতে। আর আপনি যতই স্বাধীনচেতা নারী হয়ে থাকুন না কেন, আপনার স্বামী কিন্তু সারা জীবনই চাইবেন যে আপনি তাঁকে বিশ্বাস ও ভরসা করুন। আর এই কাজটি বিয়ের রাতে করলে খুশি হয়ে ওঠেন সকল পুরুষই


জেনে নিন , প্রেমিক বা প্রেমিকার ব্রেকআপ হওয়ার কারণ !

একজন সঠিক মানুষের সাথে সম্পর্ক হলে জীবনে সুখ ধরে রাখা যায়। হয়তো মানুষটি পারফেক্ট নন, কিন্তু তার কিছু জিনিসে পারফেক্ট না হওয়াটাই আপনার জন্য তাকে একবারে সঠিক মানুষ বানিয়ে দেয়। এমন মানুষের সাথে হাসিখুশি ভাবে থেকে পুরো জীবন কাটিয়ে দেয়া সম্ভব হয়। কিন্তু যখন একজন ভুল মানুষের সাথে সম্পর্ক হয় তখন সেই সম্পর্কটি কষ্ট করে টেনে চলার চাইতে সম্পর্ক থেকেই দূরে সরে যাওয়া দুজনের জন্যই ভালো। কিন্তু কীভাবে বুঝবেন সঙ্গীর সাথে আপনার সম্পর্কটির ভবিষ্যৎ একেবারেই সুখকর নয়। চলুন তবে দেখে নেয়া যাক কোন সম্পর্ক থেকে সরে আসাই ভালো হবে আপনার জন্য।
১) আপনাদের মধ্যে বয়সের পার্থক্য অনেক বেশি

অনেকের মতে সম্পর্কের ক্ষেত্রে নারী পুরুষের বয়সের পার্থক্য হওয়া ভালো। কিন্তু যখনই এই বয়সের পার্থক্য একটু বেশি হয়ে যায় তখন জেনারেশন গ্যাপের বিষয়টি চলে আসে। কথায় বা তর্কে হুট করে বলে ফেলেন, ‘আমার বয়স বেশি, আমি জীবন তোমার থেকে বেশি দেখেছি, আমি বেশি জানি, আমি যা বলবো তাই মেনে নিতে হবে’ ইত্যাদি ধরণের কথা। যা সম্পর্কের জন্য একেবারেই ভালো নয়। তাই সম্পর্কের ক্ষেত্রে বয়সের পার্থক্য বেশি হওয়া সম্পর্কের জন্য ভালো নয় একেবারেই। এই বিষয়টির প্রতি নজর দেয়া উচিত। যদি অতিরিক্ত সমস্যা মনে হয় তাহলে এই সম্পর্কে না এগুনোই ভালো।
২) আপনি অথবা সে সম্পর্কে ধোঁকা দিচ্ছেন
সম্পর্কে যেই ধোঁকা দিয়ে থাকুন না কেন সেই সম্পর্কটি সুস্থ ও স্বাভাবিক নয়। যদি মনে করে থাকেন সময়ের সাথে সাথে এই ব্যাপারটির সমাধান করতে পারবেন তাহলে ভুল করছেন। যদি আপনি ধোঁকা দিয়ে থাকেন বা তিনি ধোঁকা দেন তাহলে সম্পর্ক থেকে সরে আসাই শ্রেয়।
৩) আপনি নিজেকে হারিয়ে ফেলছেন
প্রথম প্রথম সম্পর্কে একে অপরের সাথে অনেকটা সময় ব্যয় করা হয় বিষয়টি সত্যি। কিন্তু সম্পর্ক শুরুর পর থেকে নিজের বন্ধুবান্ধব থেকে দূরে সরে আসা, কিংবা অনেক কিছু বাদ দিয়ে একসাথে সময় কাটানোর বিষয়টি পরবর্তীতে মেনে নেয়া কষ্টকর। এখানে আপনার জীবনের কিছু অংশ হারিয়ে আপনার সম্পর্ক এগিয়ে নিতে যেতে হচ্ছে। সুতরাং এই ধরণের সম্পর্ক দুজনের জন্যই ক্ষতিকর। যদি বিষয়গুলো কথা বলে ঠিক করে নিতে পারেন তাহলে দ্বিতীয়বার চেষ্টা করতে পারেন নতুবা নয়।
৪) কিছু বললেই তিনি অতিরিক্ত রিঅ্যাক্ট করেন
কথা বলে অনেক সমস্যা সমাধান করে ফেলা সম্ভব। কিন্তু তার সাথে কোনো ব্যাপার নিয়ে আলোচনা করলেই যদি তিনি অতিরিক্ত রিঅ্যাক্ট করে বসেন তাহলে তার সাথে কোনো ব্যাপার নিয়ে কথা বলাই সম্ভব হয়ে উঠে না। কিন্তু সম্পর্কে থাকলে কথা বলে সমস্যা সমাধান করাটাই স্বাভাবিক। এমন অবস্থায় আপনাদের সম্পর্ক নিয়ে দ্বিতীয়বার চিন্তা করুন।
৫) আপনার নিজের মতো করে সময় পান না
সম্পর্কে থাকেই যে সারাটি সময় দুজনকে একসাথে থাকতে হবে এমন কোনো কথা নেই। দুজনেরই নিজস্ব জীবন রয়েছে, নিজস্ব কিছু কাজ রয়েছে এবং বাদবাকি সম্পর্ক রয়েছে। আপনি সম্পর্কে থাকলে যদি নিজের জন্য সময় একেবারেই না পান তাহলে সম্পর্কটি একটি পর্যায়ে বোঝার মতো মনে হতে থাকবে। সুতরাং এখনই এই সমস্যার সমাধান করে ফেলুন তা না হলে সুখী থাকতে পারবেন না।
৬) আপনি তাকে নিয়ে দ্বিধায় ভোগেন
আপনি কি আপনার প্রিয় মানুষটিকে আপনার পরিবার বা বন্ধুবান্ধবের সাথে পরিচয় করাতে দ্বিধা বোধ করেন? কিংবা আপনার অনেক ব্যাপারই তাকে জানাতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন না? তাহলে আপনি তাকে নিয়ে অনেক দ্বিধায় রয়েছেন। এই সম্পর্কের ভবিষ্যৎ নেই। এই সম্পর্ক ছেড়ে সরে আসাই দুজনের জন্য মঙ্গলজনক।
৭) আপনার সঙ্গী সব সময় সকলের আকর্ষণ ধরে রাখতে চান
যদি আপনার প্রিয় মানুষটি আপনার মনোযোগ পাওয়ার জন্য নিজেকে তৈরি করেন তাহলে তা খুবই স্বাভাবিক। কিন্তু যদি তিনি শুধু আপনারই নয় সকলের আকর্ষণ নিজের দিকে ধরে রাখতে চান তাহলে আপনাদের সম্পর্কটি স্বাভাবিক নয়। এই ধরণের মানুষজন মানসিক ভাবে কিছুটা অসুস্থ থাকেন। তাই এই সম্পর্ক থেকে দূরে সরে আসুন আপনি নিজেই।
৮) সঙ্গী আপনাকে অতিরিক্ত সন্দেহ করেন
ভালোবাসায় কিছুটা ঈর্ষা থাকবেই, কারণ যখন আপনি কারো সাথে একটু হেসে কথা বলবেন তখন তিনি একটু না একটু ঈর্ষান্বিত হবেন এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু ঈর্ষা অতিরিক্ত হয়ে গেলে এবং ঈর্ষা সন্দেহে রূপান্তরিত হলে সমস্যার শুরু হয়। যিনি সব সময় আপনাকে সন্দেহ করেন তার সাথে সময় কাটানো বিশেষ করে জীবন কাটানো অনেক কষ্টকর।


নববধূরূপী এক নারীর ব্যক্তিগত অপ্রকাশিত কষ্ট গুলো !

বিয়ের মাধ্যমে একজন নারীর জীবনে বড় ধরনের পরিবর্তন আসে। নারীদের একদম নতুন কিছু মানুষ ও পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নিতে হয়। যা তাদের জীবনে হাজারও সুখের অনুভূতি নিয়ে আসে, সেই সঙ্গে জন্ম দেয় কিছু চাপা ক্ষোভ বা দু:খবোধের। এই অনুভূতি সাধারণত বিয়ের পর বেশিরভাগ মেয়েই অনুভব করেন। এর কারণ কি হতে পারে? সবকিছুকে আগের সময়ের সঙ্গে তুলনা করা? নাকি বিয়ের আগের জীবন ভালো ছিল এমনটা ভাবা? তেমন কিছু কষ্টের কারণ জেনে নিন-
বন্ধুদের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন : বিয়ের পর ধীরে ধীরে বন্ধুদের সঙ্গে দূরত্ব সৃষ্টি হয়। হয়ত যোগাযোগ না থাকার কারণে বন্ধুর তালিকা থেকে এক সময় তারা আপনাকে ডিলিটও করে দিতে পারে। তাদের বিচ্ছেদ আপনার মন খারাপ করবে— এটাই স্বাভাবিক। আর এর কারণ যদি বিবাহিত জীবন হয়, তখন নিঃসন্দেহে আপনার মধ্যে অপরাধবোধের জন্ম নিবে।
নিজেকে হারিয়ে ফেলা : বিয়ে মানেই নতুন কিছু পরিবর্তন ও সমঝোতা। কিন্তু এটা যদি সব সময় একপক্ষকেই করতে হয় তাহলে নিঃসন্দেহে মনোমলিন্য ঘটবে। তাই অন্য পক্ষকেও ছাড় দেওয়া ও মানিয়ে চলার অভ্যাস করতে হবে।

ব্যক্তিগত স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ : ব্যক্তিগত স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করলে যে কারোই মাথা গরম হয়। অথচ বিয়ের পরই এ অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হতে হয় বেশীরভাগ মেয়েদেরই। সবকিছু নিজের মতামতের ওপর চলে না। বিশেষ করে বড় কোনো সিদ্ধান্ত; যেমন- দেশের বাইরে যাওয়া কিংবা দামি কোনো জিনিস কেনা। আর যৌথ পরিবার হলে তো উঠতে বসতে বাসার সবার অনুমতি নিয়েই চলতে হয়।
জীবনটাকে আরও উপভোগ : বিয়ের পর মেয়েদের জীবনের সকল ক্ষেত্রেই পরিবর্তন আসে। যে কোনো বিষয়ে সবার আগে পরিবারের কথা চিন্তা করতে হয়। এমনকি জীবনটাকে একটু নিজের মতো করে উপভোগ করার পরিকল্পনা করলেও দায়িত্ব-কর্তব্যের ভারে তা হয়ে ওঠে না।
সাবেক প্রেমিককে দ্বিতীয় সুযোগ : বিবাহিত জীবনের ঝুট-ঝামেলা আপনাকে পুরনো প্রেম মনে করিয়ে দেবে। খুব স্বাভাবিকভাবেই আপনি পুরাতন প্রেমিকের সঙ্গে স্বামীর তুলনা করবেন এবং মনে মনে ভাববেন তাকে আর একটা চান্স দিলেই হয়তো ভাল হতো। কিন্তু এমন ভাবনাকে কখনোই প্রশ্রয় দেওয়া যাবে না, মনে রাখবেন এটা আপনার দাম্পত্য সুখ চিরতরে নষ্ট করে দিতে পারে।
তাড়াতাড়ি মা হওয়া : আমাদের দেশে সন্তান নেওয়াটাও বেশীরভাগ ক্ষেত্রে পরিবারের ইচ্ছার ওপর নির্ভর করে। বিবাহিত দম্পতি নতুন অতিথির আগমন ঘটাবে এটাই স্বাভাবিক, কিন্তু অন্যের ইচ্ছার ওপর নির্ভর করে নয়। বরং নিজেদের সুবিধাজনক সময়ে সন্তান নেওয়া উচিত। হতে পারে বিয়ের পর আপনি আগে নিজের ক্যারিয়ার গোছানোর পরিকল্পনা করে রেখেছেন কিংবা সঙ্গীর সঙ্গে দেশ-বিদেশ ঘুরে আসার স্বপ্ন দেখছেন। এ সময় সন্তান নিলে এ সব চিন্তাকে বিদায় জানাতে হবে।
যাই হোক, বিয়ের পর আপনার মনে জাগা এ সব অভিযোগ ক্ষণিকের। কিন্তু আপনার প্রতি সঙ্গীর ভালবাসা ক্ষণিকের নয়। তার ভালবাসাই সব অভিযোগ ভুলে যেতে সাহায্য করবে। তাই এ সব অভিযোগ ঝেড়ে ফেলুন। এগিয়ে যান সামনের দিকে। সেই দিনগুলো হবে শুধুই আপনাদের। এতে আপনিও ভালো থাকবেন অন্যরাও।

রুটি ও দুধ খেয়ে ১৫ বছর !

কথায় আছে মাছে-ভাতে বাঙ্গালী। কিন্তু বাঙ্গালী হয়েও জন্মের পর থেকে ১৫ বছরেও ভাত স্পর্শ করেনি রাঙ্গুনিয়ার পোমরা ইউনিয়নের হাজীপাড়া গ্রামের শফিউল আলমের পুত্র মোহাম্মদ মোস্তফা। সে এখন পোমরা উচ্চবিদ্যালয়ে অষ্টম শ্রেণিতে পড়ছে। পাড়া-প্রতিবেশীদের কৌতূহলের অন্ত নেই তার এই ভাত না খাওয়ার বিষয়টি নিয়ে ।

তার অভিভাবকরা জানিয়েছেন, রুটি আর গরুর দুধ ছাড়া আর কোনো খাবার সে স্পর্শ করে না। ভাতকে সে কোনোভাবেই খাবার হিসেবে মেনে নিতে পারছে না। পরিবার তার এই খাদ্যাভ্যাসকে স্বাভাবিক বলে মনে করছে না।
মোস্তফার মা জানান, তার ছেলের বয়স যখন এক বছর তখন থেকে ডাক্তারের পরামর্শে বুকের দুধের পাশাপাশি বাড়তি খাবার হিসেবে ভাত দেওয়া হলেই সে তা বমি করে ফেলে দিত। আর এভাবেই তাকে যতবারই ভাত কিংবা অন্য খাবার দেওয়া হয়েছে, ততবারই সে বমি করে ফেলে দিয়েছে।
এতে তার পরিবার ভয় পেয়ে ডাক্তারের শরণাপন্ন হলে ডাক্তার পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে অভয় দিয়ে বলেন, তার খাবার গ্রহণের ক্ষেত্রে কোনো সমস্যা পাওয়া যায়নি, তবে ভাত খাওয়ার ব্যাপারে তার আগ্রহ না থাকার কারণে এমনটা হচ্ছে।
আর এ অবস্থায় মোস্তফাকে তার মা ও পরিবার-পরিজন রুটি আর দুধ ছাড়া আর কোনো কিছু খাওয়াতে পারেনি। বরং এই ব্যাপারে যতবার চেষ্টা করা হয়েছে ততবারই বিফল হয়েছে বলে জানান তার পরিবারের সদস্যরা।
মোস্তফাকে এ ব্যাপারে জিজ্ঞেস করলে সে জানায়, তার ভাত খেতে ভালো লাগে না। এতে তার একধরনের দুর্গন্ধ লাগে, যা সে সহ্য করতে পারে না। একই কারণে সে অন্য কোনো কিছুও খেতে পারে না।
মোস্তফা জানায়, প্রতিদিন সকালে সে সাত-আটটা রুটি ও দুধ, দুপুর বেলায় পাউরুটি-দুধ, বিকেলেও রুটি আবার রাতেও রুটি ও দুধ খেয়ে জীবনযাপন করে।


যে দেশে পরকীয়া আর অপরাধ নয় !

পরকীয়া প্রেমকে আর অপরাধ হিসেবে গণ্য করা যাবেনা বলে রায় দিয়েছে দক্ষিণ কোরিয়ার শীর্ষ আদালত। ১৯৫৩ সালের আইন অনুযায়ী, দেশটিতে পরকীয়া সম্পর্কে জড়ালে স্বামী বা স্ত্রীর আড়াই বছর পর্যন্ত কারাদণ্ডের শাস্তি ছিল।

গতকাল বৃহস্পতিবার আদালত এ রায় দিয়েছেন।
এশিয়ার যে মাত্র তিনটি দেশে পরকীয়া প্রেম অবৈধ ছিল, দক্ষিণ কোরিয়া তার একটি। ২০০৮ সাল থেকে দক্ষিণ কোরিয়ায় সাড়ে পাঁচ হাজার লোককে আদালত এ অপরাধে অভিযুক্ত করেছেন।
সর্বোচ্চ আদালতের (সাংবিধানিক আদালত) নয় বিচারকের প্যানেলের সাতজন বলেন, ৫৩ সালের আইনটি অসাংবিধানিক। প্যানেলের প্রধান বলেন, ব্যক্তির যৌনতাবিষয়ক অধিকার সম্পর্কে লোকের ধারণা বদলে গেছে। নৈতিকভাবে পরকীয়ার নিন্দা করা উচিত। তবে নাগরিকের ব্যক্তিগত জীবনে হস্তক্ষেপ করা রাষ্ট্রের উচিত নয়।
দক্ষিণ কোরিয়ায় সাম্প্রতিক বছরগুলোতে শত শত লোককে অভিযুক্ত করা হলেও খুব কম জনকেই কারাগারে যেতে হয়েছে। সিউলের সোগাং বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনের অধ্যাপক লিম জি বং বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে পরকীয়ার জন্য কারও সাজা হওয়ার ঘটনা খুবই বিরল। তিনি জানান, প্রায়ই অভিযোগ শেষ পর্যন্ত বাতিল হয়ে যায় বলে অভিযুক্ত হওয়ার সংখ্যা কমেছে।
দক্ষিণ কোরিয়ার সর্বোচ্চ আদালত এর আগে আইনটি চারবার পর্যালোচনা করে তা বহাল রাখেন।

আমি আর আসবো না বলে

ইদানিং মাঝে মাঝেই আমার মনে হয়, এই সুন্দর পৃথিবীটা ছেড়ে, আমার প্রিয় চিরচেনা মুখগুলো ছেড়ে হয়ত কোন একদিন চলে যেতে হবে অজানার পানে। হয়ত চলে যেতে হবে অনন্তের পথে… আর ফিরে যাওয়া হবে না পুরোনো প্রিয় বন্ধুদের আড্ডায়, মায়ের আঁচলে মুখ মোছা হবেনা, আপুর সাথে অভিমান করে কষ্ট পাওয়া যাবেনা… মনে হলে বুকের কোণে একটা ব্যথা অনুভূত হয়… এই কবিতায় আমার এই অনুভূতিটার একটা প্রতিকৃতি খুঁজে পেয়েছি….

র আসবো না বলে দুধের ওপরে ভাসা সর
চামোচে নিংড়ে নিয়ে চেয়ে আছি। বাইরে বৃষ্টির ধোঁয়া
যেন সাদা স্বপ্নের চাদর
বিছিয়েছে পৃথিবীতে।

কেন এতো বুক দোলে? আমি আর আসবো না বলে?
যদিও কাঁপছে হাত তবু ঠিক অভ্যেসের বশে
লিখছি অসংখ্য নাম চেনাজানা
সমস্ত কিছুর।
প্রতিটি নামের শেষে, আসবো না।
পাখি, আমি আসবো না।
নদী আমি আসবো না।
নারী, আর আসবো না, বোন।
আর আসবো না বলে মিছিলের প্রথম পতাকা
তুলে নিই হাতে।
আর আসবো না বলে
সংগঠিত করে তুলি মানুষের ভিতরে মানুষ।
কথার ভেতরে কথা গেঁথে দেওয়া, কেন?
আসবো না বলেই।
বুকের মধ্যে বুক ধরে রাখা, কেন?
আর আসবো না বলেই।
আজ অতৃপ্তির পাশে বিদায়ের বিষণ্ণ রুমালে
কে তুলে অক্ষর কালো, ‘আসবো না’
সুখ, আমি আসবো না।
দুঃখ, আমি আসবো না।
প্রেম, হে কাম, হে কবিতা আমার
তোমরা কি মাইল পোস্ট না ফেরার পথের ওপর?
———————————–
(সংকলিত কবিতা)
কবিঃ আল মাহমুদ
কাব্যগ্রন্থঃ সোনালি কাবিন



আজি ঝরঝর মুখর এই বাদল দিনে

সুচরিতাসু,
চিঠিটা পেয়েই বুঝি একটা দুষ্টু হাসি দিয়ে ফেললে? বুঝে ফেলেছ, তাইনা? তুমি যে বুঝতে পারবা, সে আমি জানি! তাতে কী? তাই বলে বুঝি আমার লেখালেখি বন্ধ হয়ে থাকবে? সত্যিই আজকে ঝরঝর বর্ষাধারা বয়েই চলেছে প্রকৃতিতে… আর এই অপদার্থ উজবুকটা ছটফট করে বসে পড়েছে চিঠি লিখতে… মনের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অনুভূতিগুলোকে রূপ দেয়ার চেষ্টা করতে…
আরে আরে….হাসি থামাও তো!! সুস্থির হয়ে বস দেখি! আমাকে একটু বলতে তো দাও!! জানো, সকাল থেকেই আকাশ কালো হয়ে আছে জমাট মেঘে। আর আমি মনে মনে খুঁজে বেড়াচ্ছিলাম, এই মেঘলা মেঘলা দিনে কোন গানটা যেন আমাকে অনেক উদাস করে দিত সে-ই কৈশোরে… তারপর মনে পড়ে গেলো রবিঠাকুরের সেই গানখানিঃ

আজি ঝর ঝর মুখর বাদরদিনে
জানি নে, জানি নে কিছুতেই কেন মন লাগে না ।।
এই চঞ্চল সজল পবন-বেগে উদ্ভ্রান্ত মেঘে মন চায়
মন চায় ঐ বলাকার পথখানি নিতে চিনে ।।
মেঘমল্লারে সারা দিনমান
বাজে ঝরনার গান ।
মন হারাবার আজি বেলা, পথ ভুলিবার খেলা- মন চায়
মন চায় হৃদয় জড়াতে কার চিরঋণে ।।


আসলেই আমার কিছুতেই মন লাগছে না। আমাকে ধানমন্ডিতে দেখা করতে বলেছেন জুয়েল ভাই। ছোট বোন একটা কাজ করতে দিয়ে কলেজে গেছে, দুলাভাই আজই আমাকে সময় করে দেখা করতে যেতে বলেছিলেন… অথচ আমি কিনা ঘরকুনো হয়ে বসে আছি!! কারণ কি জানো? আমার যে কিছুতেই একদম মন লাগছে না!!!
এই চঞ্চল সজল পবন-বেগে উদ্ভ্রান্ত মেঘে বলাকার পথখানি চিনে নিয়ে যদি সত্যিই উড়ে উড়ে তোমার কাছে চলে যেতে পারতাম! তবে আর তোমার পথ চেয়ে অপেক্ষা করতে হত না! তোমার কোলে চিঠিখানি ছুঁড়ে দিয়ে আমি লুকিয়ে দেখতাম কী করে চিঠিটা পড়ে তুমি হেসে কুটি কুটি হও…
সত্যি কথা কী জানো হে বরষা কন্যা? রবীন্দ্রনাথের কথাগুলো, গানগুলো কেন যেন আমাকে বড্ড বেশি বেশি স্পর্শ করে… আমার অনুভূতিগুলো কি ঘুরে ফিরে ঠাকুরদা’র কবিতার মতন হয়ে গিয়েছে কিনা তা-ই বা কে জানে! ছেলেবেলায় আমার বালিশের পাশে সঞ্চয়িতা থাকত সবসময়… অদ্ভূত একটা আবেশে কেটেছিলো আমার কৈশোরটা জানো? আমি চোখভরা বিষ্ময় নিয়ে পড়তাম কবিতার পংক্তিগুলো… প্রতিদিন… প্রতিটি অবসর!!
গানটার কথা দেখেছ? মন হারাবার আজি বেলা, পথ ভুলিবার খেলা… মন চায় এই হৃদয় নাকি কার চিরঋণে জড়াতে… হাহাহাহহা!! না ভাই, না ভাই, আমি ভাই ঋণে জড়াইতে চাইনা… আমি ঋণী করে দিতে চাই… হুমম!!
নাহ। গান নিয়ে আর কথা বলবো না… এখন চুপ যাই। এমনিতেই এই ডিজিটাল যুগে মানুষ বইপত্র দেখলে শুধুই বিরক্ত হয়… তার উপর আমার চিঠির মতন এই বিশাল কলেবরের জিনিস হয়ত তোমাকেও “বোর” করে দিতে পারে! তুমি কেমন অদ্ভূত, বুঝো? একটা বার কোনদিন বললা না, আমার চিঠিভরা যেই বকবকানি, সেগুলো তোমার কেমন লাগে! অথচ আমি কোনসময়েই যে তোমার মন্তব্যের অপেক্ষা করিনা, তা তো না… যাক গে, হয়ত কোনদিন বলবা, হয়ত সেই একদিনের কথাতেই আমার চাওয়াখানি পূর্ণ হয়ে যাবে… হয়ত… জানিনা!
একটা কথা জানো, আমার ইদানিং মনে হয় আমি মনে হয় যন্ত্রমানব হয়ে যাচ্ছি। নতুবা কি পাষাণ হয়ে যাচ্ছি? আমাকে আর আগের মতন অনুভূতিগুলো স্পর্শ করে না। এই বৃষ্টি আর আমাকে আগের মত করে ছুঁয়ে যায় না… আমার হৃদয় অবধি যেতে পারেনা বর্ষাধারার শীতল অনুভূতিখানি…
আমি যেন তোমাকে ঠিক আগের মতন করে অনুভব করিনা… কেন এমন হয়ে যাচ্ছি বলতে পারো? বলতে পারো, আমি কেন আমার কথাগুলোকে কিছুতেই ব্যক্ত করতে পারছিনা ইদানিং… আমার ভেতর হতাশা ঘুরপাক খাচ্ছে, কিন্তু তোমার বকা খাওয়ার ভয়ে তাকে ব্যক্ত করতে পারছিনা…
অথচ আমি দিব্যি জানি, আমি ক্রমাগত বদলে চলেছি। যেই বদলে যাওয়া আমার কাম্য না। আমি বদলে যেতে চাইনা… আমি সেই আগের আবেগপ্রবণ বোকাসোকা ছেলেটাই থাকতে চাই… তোমার স্মরণে আমি বিবশ হয়ে যেতে চাই… তোমার হাসিমুখ দেখে আমি চুপটি করে বোকাবোকা হাসি দিয়ে তাকিয়ে থাকতে চাই অপলক…… আমি বড় হতে চাইনা, চাইনা বদলে যেতে!!
কত কিছুই যে চাইনা, অথচ দেখ, সবই তো হয়ে যাচ্ছি… ক্রমাগত যেন জঞ্জাল এসে ভরিয়ে দিচ্ছে জীবন কুঠুরিটা… সেই জঞ্জাল দেখতে তো খারাপ বটেই। ধরে নাও জীবনের এই জঞ্জালগুলোকে ইগনোর করে অন্যকিছুতে মন দিবো-–তা যে হবেনা! সেসব বাজে জিনিসের তীব্র দুর্গন্ধে আমি বুঝতে বাধ্য হবো– আমি ভুল করেছি জীবনে… তার খেসারত আমায় দিতেই হবে…
নাহ! এখনি লেখাটা শেষ করতে হবে। কেমন যেন ভারাক্রান্ত হয়ে যাচ্ছে লেখাগুলো। আর চাইনা এসব লিখতে। কিন্তু একটা সত্যি কথা বলে শেষ করি? আমার ইদানিং মনে হয়–- আমার বুঝি আর লেখার কিছুই নেই, আমার লেখনি স্তব্ধ হয়ে যাবে একদম… নতুন অনুভূতি নেই, নেই কোন ভালোবাসা আর ভালোলাগাদের দল…
আমার মনে হয় আর তোমাকে লেখা হবেনা গো “সুহাসিনী” !
অনেক অনেক ভালো থেকো, হুমম? আর আমাকে দোয়া দিয়ো একটু প্লীজ।
তুমি তো জানো, আমি একটু প্রশান্তিই চাই এই জীবনে। অর্থ-বিত্তের প্রাচুর্য নয়… শুধু নির্ঝঞ্ঝাট একটা জীবন… দোয়া করিও মহান আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলার দরবারে। আমি সুখের স্পর্শ পাবই ইনশাআল্লাহ দেখে নিয়ো…
এই জীবনে না পাই, অনন্ত জগতে আমার সুখ হবেই।
— শেষান্তে
পথহারা পথিক


বর্ষা নামের সেই রূপবতীর প্রতি ভালোবাসা

র্ষার সাথে আমার কবে প্রথম পরিচয় হয়েছিল তা ঠিক মনে করতে পারিনা। তবে জানি, আমি প্রথম পরিচয়েই তার প্রেমে পড়ে গিয়েছিলাম। তার অপরূপ রূপ সুষমায় মোহিত হয়ে তাকে দিয়েছি হৃদয় উজাড় করা ভালোবাসা। কখনো বর্ষাকে খুশি করবো বলে তাকে নিয়ে লিখেছি কবিতা। সেই কবিতায় শুধু অনুভূতি আর মুগ্ধতার প্রকাশ…
কলেজের ছুটিকালীন সময়ে আমার খুব মন খারাপ ছিলো একদিন। কিছু ভালো লাগছিলো না। সেদিন বর্ষাকে দেখেছিলাম জানালা দিয়ে তাকিয়ে বাইরে– তাকে দেখেই মনে কী রকম যেন একটা ঢেউ খেলে গিয়েছিল। ভালোলাগার একটা আবেশে আমি মোহিত হয়ে ছিলাম অনেকক্ষণ।
ব্যাকুল হয়ে আমি ছুটে বাইরে গিয়ে তার স্পর্শ নিয়ে ধন্য হয়েছিলাম। আমার দু’গাল পেতে তার কোমল পরশ নিয়েছিলাম… সেই পরশে আমার শরীরে বিদ্যুৎস্ফূলিঙ্গ খেলে গিয়েছিলো… আমি চোখ বন্ধ করে তার স্পর্শ অনুভব করেছিলাম আমার সমস্ত শরীরে… পরম আরাধ্য সেই স্পর্শভরা মূহুর্তগুলো আমার আজো মনের গভীরে গেঁথে আছে……

বর্ষা অতীব রূপসী। রুপের ঝলকে কত জন যে মুগ্ধ হয়েছে, তাকে নিয়ে কবিতা লিখেছে, তার আশায় স্বপ্ন দেখেছে তার ইয়ত্তা নেই। আমার বন্ধুদের মাঝেই অনেককে দেখেছি যারা ওর জন্য লিখেছে সুন্দর সব কবিতা। আমার তখন বড় হিংসা হতো।

বর্ষা এলেই বাসায় মায়ের কী আয়োজন! ব্যস্ত হয়ে পড়েন মা ওর জন্য। কখনো চিতই পিঠা আর আম দিয়ে সকালের নাস্তা, দুপুরে গরম গরম খিচুড়ী, সাথে চাঁপাইনবাবগঞ্জের বিখ্যাত আমের আচার, একাধিক পদের সবজি– বেগুন, আলু আর পটলের ব্যঞ্জন… বেগুনের ভাজি… একটু সালাদ… আমার সব প্রিয় পদের আয়োজন!!
আমি আনন্দে নির্বাক হয়ে যাই। ইচ্ছে করে বর্ষাকে জড়িয়ে ধরে বসে থাকতে। ইচ্ছে করে ওকে আর যেতে না দিতে।
আমি ভেবে দেখেছি, ওদের পরিবারের সকলের মাঝে আমি বর্ষাকেই বেশি ভালোবাসি। ওর প্রতি আমার মুগ্ধতা-ভালোলাগার কিঞ্চিৎ অন্যদের প্রতি হয়ে উঠে না… আমি দেখেছি, মা এটা বুঝেন।
উনি তা দেখে মুখ টিপে হাসেন। আমি যখন ওকে নিয়ে কবিতা লিখি– তা সবার আগে আমার প্রিয় মামণি-কে শোনাই।
মা বড় খুশি হন। মাঝে মাঝে বলেন–
“বাবা, বর্ষা কিন্তু কয়েকদিন একটানা থাকলে আশেপাশের সবাইকে কষ্ট দেয়। ও এলে ওর জন্য ঘর থেকে বের হতে পারবি না………”
আমি মায়ের এইসব কথা শুনতেই চাইনা। বলি–
“মা গো, ওকে যে আমি খুউউব ভালোবাসি। ও কাছে এলেই আমার ভালোলাগে যে…… আমি কষ্ট পাবো না”।
কিছুদিন থেকে বর্ষা আবার চলে যায়। আমি অপেক্ষা করতে থাকি। সময় যেন আর কাটতেই চায়না—
দিন বয়ে যায়…
রাত বয়ে যায়…
মাস কেটে যায়…
মায়াবিনী ছলনাময়ী বর্ষা আর আসে না। হঠাৎ আবার মাঝে মাঝে দেখা পাই। আনন্দের আতিশয্যে আমি চিৎকার করে উঠি। বছর ঘুরে গেলে ওর আসার সময় হয়। আমি সেই অপেক্ষায় থাকি বাকি সারাটি বছর।
হতভাগা আমি আমার বর্ষাকে কখনো খুব কাছে পাইনা। আবার খুব দূরেও যায়না…অদ্ভূত লাগে!! কেন যে আমার ভালোবাসাকে আপন করে পাইনা। কেন যে কোন ভালোবাসার সাথেই থাকে না পাওয়ার বেদনা, একটা অপূর্ণতা…… আমি বুঝে পাইনা।
যাকে ভালোবাসি, তার জন্য অপেক্ষার প্রহর গুণতে যেমনি অস্থির লাগে। তেমনি এই “না পাওয়া” সময়টাতে ওর কথা ভাবতেও একটা “বিরহের বেদনাময় আনন্দ” অনুভূত হয়…
কলেজে থাকতে তারিক হাউসের সামনের কাঠালি চাঁপা ফুল ছিঁড়ে গন্ধ নিতাম, আর বর্ষার কথা ভাবতাম। কী দারুণ সেই ভালোলাগা! কী যে মোহনীয় সেই দূরে থাকা! ওর জন্য আমার ডায়রির পাতা ভরে যেত। ভালোবাসা আর মুগ্ধতা ভরা শব্দাবলী, প্রতিটি অক্ষরে ঝরে পড়ত হৃদয় উৎসারিত আমার ভালোবাসা……
বর্ষাকে নিয়ে আমার অ-নে-ক কবিতা। ওকে নিয়ে অন্যেরা লিখলে সেইগুলোও আমি পড়তাম অনায়াসে– আমার ভালোবাসাকে নিয়ে লেখা বলে কথা!!
বর্ষাকে নিয়ে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের একটা কবিতা আমাকে অন্যরকম ভালোলাগা দিয়েছিলোঃ
আষাঢ়সন্ধ্যা ঘনিয়ে এল, গেল রে দিন বয়ে
বাঁধন-হারা বৃষ্টিধারা ঝরছে রয়ে রয়ে।
একলা বসে ঘরের কোণে কী ভাবি যে আপন-মনে–
সজল হাওয়া যূথীর বনে কী কথা যায় কয়ে।।
হৃদয়ে আজ ঢেউ দিয়েছে, খুঁজে পাই না কূল–
সৌরভে প্রাণ কাঁদিয়ে তুলে ভিজে বনের ফুল।
আঁধার রাতে প্রহরগুলি কোন সুরে আজ ভরিয়ে তুলি–
কোন ভুলে আজ সকল ভুলি আছি আকুল হয়ে–
বাঁধন-হারা বৃষ্টিধারা ঝরছে রয়ে রয়ে।
আজ শুধু রোমন্থন। আজ শুধু স্মৃতিদের চেয়ে চেয়ে দেখা। আজ শুধু বসে বসে মনের স্বপ্নদের আঁকা। বিরহের গান গেয়ে মনের না পাওয়াদের জন্য আরো বেশি করে ব্যাকুল হওয়া… কষ্ট পেয়ে আরো আনন্দিত হওয়া…
ডিসক্লেইমারঃ এই পোস্টের চরিত্রগুলো রূপক। অনেকে এই বর্ষার সাথে নারী বর্ষার যোগসূত্র খুঁজে পেতে পারেন বলে লেখক সকলকে মনের কল্পনাদের প্রশ্রয় দিতে নিরুৎসাহিত করছেন। :-)


আমি বৃষ্টি দেখেছি, বৃষ্টির ছবি এঁকেছি

আকাশটা আজ সারাদিন মেঘলা। শরীরটা এই এত অল্প বয়েসেই কেমন অদ্ভূত রকমের রোগাক্রান্ত হয়ে গেছে! রাতে কাশির দমকে আর গলাব্যথায় আর ঘুমাতে পারলাম না। সেই সাথে ছিলো এক অব্যক্ত যন্ত্রণার অনুরণন। সবে মিলে এক দুঃসহ দিনের সূত্রপাত। অফিসে যাইনি আজ। ভাবলাম যদি ব্যথাগুলোর উপশম হতো! আরো যেন তীব্র হয়ে উঠছে ক্রমাগত… 

আমি আকাশ দেখেছি। আকাশের মাঝে বিশালতা খুঁজেছি। আমি অরণ্য দেখেছি। অরণ্যের মাঝে নির্লিপ্ততা অনুভব করেছি। আমি বৃষ্টি দেখেছি, বৃষ্টির ছবি এঁকেছি। আমি বৃষ্টিকে ভালোবেসেছি, চেয়েছি আপন করে। আমি অযাচিত যন্ত্রণায় দগ্ধ অনুভূতিদের চেয়েছি বৃষ্টির সাথে ভাসিয়ে দিতে। আমি চেয়েছিলাম অল্প কিছু, একদম অল্প করে…
আমি কী কখনো ভেবেছিলাম সাগরের লোনা জলেরা আমার হবে? তুমি চেয়ে দেখো সুপ্রভা, এই সাগরেরা যেন আমার চোখ বেয়ে বয়ে যাওয়া অশ্রুদেরই জমা হয়ে থাকা জলরাশি। তুমি জানো, শূণ্যতায় ভরা জীবনের সবচাইতে বড় প্রাপ্তি কী? অমন বিশাল করে লোনা জলের উৎস হতে পারা। আমি কি তোমার কাছে কখনো চেয়েছি আমায় তুমি আকাশ এনে দেবে? আমি তো চাইনি তুমি আসমুদ্রহিমাচল বয়ে আনবে ভালোবাসার চাদর। আমি চেয়েছি এক চিলতে মুক্ত আকাশ। আমি চেয়েছিলাম তুমি রোদ্দুর হবে।

জানো সুপ্রভা, স্বপ্ন শব্দটার প্রতি আমি কত বড় কাঙ্গাল? আমি না কোন স্বপ্নই দেখতে পারিনা! আমি পারিনা আমার চাওয়াগুলোকে পাওয়ার সাহস করতে! এতগুলো রাত কেটেছে জীবনে — কই! কোনদিন ঘুম থেকে উঠে বলতে পারিনি স্বপ্ন দেখেছি কিনা! আমার দিনের বাস্তবতাও এমনি। আমি কোথা যাবো, কী করে বেঁচে থাকতে চাই– কী কী আমি অর্জন করতে চাই — আমি যে সেই স্বপ্নগুলোই দেখতে পারিনা!
অথচ বেঁচে থাকতে এই স্বপ্নগুলোই কাজ করে হৃদয়স্পন্দনের মতন। আমি কী তোমায় হারিয়ে ফেলবো সুপ্রভা? তুমি কি আমার স্বপ্ন ছিলে? তুমি কী আমার মাঝে একটা কল্পনা? তোমার অস্তিত্বের শেকড়ের মাঝে কী আমারটাও প্রোথিত না? তুমি কী জানো, কী অদ্ভূত একটা জীবন আমার! অঞ্জন দত্তের গানটাও শুনি, তোমার চলে যাবার কথা ভাবি। আবার মনে হয় — তুমি তো আসবে বলেই আছ। তাহলে কেন এই অশ্রুদের বয়ে যাওয়া? কেন তোমাকে পেতে সমুদ্রের জলরাশিদের সাথে সখ্যতা? এই জায়গাটাতে আমার কেন খুব করে ভুল হয়? আমি একদিন ঠিক হয়ে যাবো দেখে নিয়ো।
অঞ্জনদত্তের গানটা মাঝে মাঝেই মনে পড়ে। কেন বলো তো? এইসব অনুভূতিরা তো অন্যরকম! এটা ঠিক হবার মতন না! তবু এই গান, সে তো গানই! তুমি কী চলেই যাচ্ছ সুপ্রভা? তুমি আর ফিরে আসবে না? নাকি তুমি আসলে ছিলেই না কখনো? এই ভ্রম কেন আমার? যাহোক, গানটা শুনেছিলে? অদ্ভূত লিরিক!
আমি বৃষ্টি দেখেছি, বৃষ্টির ছবি এঁকেছি,
আমি রোদে পুড়ে ঘুরে ঘুরে অনেক কেঁদেছি।
আমার আকাশ কুসুম স্বপ্ন দেখার খেলা থামে নি,
শুধু তুমি চলে যাবে আমি স্বপ্নেও ভাবিনি।
আমি বৃষ্টি দেখেছি…
চারটে দেয়াল মানেই নয়তো ঘর, নিজের ঘরেও অনেক মানুষ পর।
কখন কিসের টানে মানুষ পায় যে খুঁজে বাঁচার মানে,
ঝাপসা চোখে দেখা এই শহর …
আমি অনেক ভেঙেচুরে, আবার শুরু করেছি,
আবার পাওয়ার আশায় ঘুরে মরেছি।
আমি অনেক হেরে গিয়েও হারটা স্বীকার করিনি,
শুধু তোমায় হারাবো আমি স্বপ্নেও ভাবিনি।
আমি বৃষ্টি দেখেছি…
হারিয়ে গেছে তরতাজা সময়, হারিয়ে যেতে করেনি আমার ভয়।
কখন কিসের টানে মানুষ পায় যে খুঁজে বাঁচার মানে,
ঝপসা চোখে দেখা এই শহর …
আমি অনেক শ্রোতে বয়ে গিয়ে, অনেক ঠকেছি,
আমি আগুণ থেকে ঠেকে শিখে, অনেক পুড়েছি।
আমি অনেক কষ্টে অনেক কিছুই দিতে শিখেছি,
শুধু তোমায় বিদায় দিতে হবে, স্বপ্নেও ভাবিনি।
আমি বৃষ্টি দেখেছি…